রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে নজর না দিয়ে মিয়ানমার সরকার অসত্য এবং বানোয়াট প্রচারণা চালাচ্ছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে এ ধরণের প্রচারণা বন্ধ করার আহবান জানানো হয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারেরে রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ।
গত সপ্তাহে আজারবাইজানে জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন বা ন্যাম সম্মেলনে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে আবারো রোহিঙ্গা সমস্যার দায় বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
ন্যাম সম্মেলনে মিয়ানমারের ইউনিয়ন মন্ত্রী চিয়াও তিন্ত সোয়ে অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় নিপীড়ন এবং জাতিগত নিধনের কথা বলে রোহিঙ্গা সংকটের ভিন্ন চেহারা দেয়ার চেষ্টা করছে।
সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবার শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় নিপীড়ন এবং জাতিগত নিধনের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
এটাই বাস্তবতা।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকেই গেছে বলে মিয়ানমার যে বক্তব্য দিয়ে আসছে, সেখানে দেশটি অভিযোগ তুলেছে যে, ১৯৭১ সালে তারা বাংলাদেশ থেকে রাখাইনে গিয়েছিল।
মিয়ানমারের এই বক্তব্যকে ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট বলে বর্ণনা করেছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মিয়ানমার এখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী নিধনের তাদের কৌশল বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশের বক্তব্য হচ্ছে, আরসা’র তথাকথিত হামলার কথা বলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধ অপরাধকে বৈধতা দেয়া যায় না।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের শিবিরে আরসা’র কোনো তৎপরতা নেই বলে বাংলাদেশ আবারো উল্লেখ করেছে।
বাংলাদেশের বক্তব্য হচ্ছে, সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থার মধ্যে কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তৎপরতা চালানো সম্ভব নয় বলে বাংলাদেশ মনে করে।
বাংলাদেশ বলেছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা নেই।
সেকারণে দ্বিপাক্ষিকভাবে সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে তারা যথাযথ পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে না।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে, মিয়ানমার বাংলাদেশকে অসহযোগিতা করছে এবং অসত্য ও ভিত্তিহীন প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। মিয়ানমার সংকট সমাধানের চেষ্টা না করে বরং তা আড়াল করতে চাইছে। সেজন্য মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে বলে বাংলাদেশ মনে করে।
বাংলাদেশ মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ তৈরির পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিকভাবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল।
কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সমাধানের চেষ্টায় রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সর্বশেষ উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এতদিন দ্বিপাক্ষিক চেষ্টাকে বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ বিভিন সময় মিয়ানমারের বিভিন্ন বক্তব্যের জবাব দিয়েছে। ফলে তাতে কঠোর অবস।তান প্রকাশ পায়নি। কিন্তু এখন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যে বেশ শক্ত অবস্থানের প্রকাশ ঘটেছে।
সূত্র : বিবিসি
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-