রফিক উদ্দিন বাবুল •
উখিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এনজিওদের মাসিক সমন্বয় সভায় রোহিঙ্গাদের চাকুরি না দেওয়ার সর্তক করে দেওয়া হলেও এনজিওরা তা মানছে না। তারা সমন্বয় সভায় বলে এক কথা ক্যাম্পে অন্য কাজ। এনিয়ে স্থানীয় ও এনজিওদের মাঝে দিন দিন দুরত্বের সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবী রোহিঙ্গাদের স্থলে স্থানীয়রা চাকুরি করলে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি তাদের আত্মসামাজিক উন্নয়নের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু রোহিঙ্গার কারণে তা হচ্ছে না। উপরোন্তু বিভিন্ন কারণে অকারণে রোহিঙ্গার হাতে স্থানীয়রা লাঞ্ছিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ক্যাম্প ভিত্তিক বিভিন্ন এনজিও সংস্থায় কর্মরত স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এনজিও কেয়ার বাংলাদেশে ২০০ জন, টিডিএইচে ৫০জন, এসিএফ এ ৩০০ জন, ওয়ার্ল্ড ভিশনে ৫২, ব্র্যাকে ১৬০ জন, ওয়ার্ল্ড কনসার্ন ৫১ জন, ঢাকা আহছানিয়া মিশনে ৬০জন, ডিএসকেতে ৯০ জন, ফ্রেন্ডশিপে ৭০ জন, এমএসএফ এ ১৫০ জন, রিসডা বাংলাদেশে ৪৫ জন সহ ৩০টি এনজিওতে ৫ হাজারেরও অধিক রোহিঙ্গা বিভিন্ন পদে চাকুরিরত আছে। এছাড়া শুধুমাত্র শফিউল্লাহকাটা ১৬নং ক্যাম্পে কর্মরত আছে ১২০৯ জন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় চাকুরিজীবিরা জানান, একজন রোহিঙ্গার সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা বেতনের চাকুরি করছে এমন অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা রয়েছে। তারা শুধু ইংরেজীতে লিখতে পারে। ক্যাম্প ভিত্তিক হেড মাঝি, ব্লক মাঝির সূত্র ধরে এসব রোহিঙ্গারা চাকুরিতে নিয়োগ থাকলেও তারা আবার ত্রাণ সামগ্রী উঠানামা এবং বিতরণের দায়িত্ব পালন করে আলাদা ভাবে বেতন সংগ্রহ করে থাকে। যা ক্যাম্প ইনচার্জের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবগত আছেন। এব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে পরবর্তী মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে মর্মে তাকে চাকুরি থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার জানান, একজন রোহিঙ্গাদেরও চাকুরি দিয়ে এনজিওরা ঠিক কাজ করেনি। যেহেতু রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তাদের সব ধরনের সাহায্য সহযোগীতা প্রদান করার পরও তাদের চাকুরিতে নিয়োগ দিয়ে এনজিওরা বাহ্যিক ফায়দা লুটছে বলে তিনি দাবী করেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, এনজিওদের সমন্বয় সভায় বার বার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদেরকে যাতে কোন চাকুরীতে নিয়োগ দেওয়া না হয়।
প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এনজিওদের কাছে জানতে চাইলে তারা একথা বার বার অস্বীকার করে বলেন, তাদের কাছে কোন রোহিঙ্গা চাকুরীরত নাই। যা আছে তা শুধু স্থানীয় ছেলে মেয়ে। তিনি বলেন, বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে দেখার জন্য অচিরেই একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-