রোহিঙ্গা ডাকাতের হাতে দুই কিশোরী অপহরণের ৪৩ ঘন্টা পার হলেও উদ্ধার হয়নি এখনো

গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল •


টেকনাফে গহীন পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিম ও তার সহযোগী ডাকাত দলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে নানা প্রকার অপরাধ প্রবনতা।

সূত্রে দেখা যায়, অত্র উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি, অপহরণ, মানুষ হত্যাসহ এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা সংঘটিত করছেনা।

এই ডাকাত দলের সদস্যরা গহীন পাহাড়ে আস্তানা তৈরী করার পর প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘটিত করার কারণে ভয়ে আর আতংকে দিন কাটাচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানীয় জনগন।

সেই সূত্র ধরে গত ২০ অক্টোবর ভোর রাত আড়াইটার দিকে শীর্ষ রোহিঙ্গা হাকিম ডাকাতের নেতৃত্বে একদল ডাকাত টেকনাফ উপকুলীয় ইউনিয়ন বাহাছড়া শীলখালী মাঠপাড়া এলাকার ‘হেডম্যান’ আবুল কালামের বসত বাড়ীর দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ন-অলংকার নগদ টাকা লুট করার পর এবং আবুল কালামের স্কুল পড়ুয়া দুই কিশোরি মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অথচ অপহরনের দীর্ঘ ৪৩ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেছে। অথচ স্কুল পড়ুয়া দুই কিশোকীকে এখনো উদ্ধার করে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন!

তবে অপহরন হওয়া দুই মেয়েকে উদ্ধার করার জন্য টেকনাফ থানা ও বাহারছড়া ফাঁড়ির কর্মরত পুলিশ সদস্যরা সাঁড়াশী অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এব্যাপারে অপহরন হওয়া দুই কিশোরীর আপন বড় ভাই শামলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর ছাত্র মোঃ রেদুয়ান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,গত ২০ অক্টোবর ভোর রাত ৩টার দিকে রোহিঙ্গা ডাকাত দলের সদস্যরা ৬ষ্ট শ্রেনীতে পড়ুয়া আমার দুই বোন লাকি(১২),তসলিমা(১৪)কে অপহরন করে নিয়ে যায়।  এরপর থেকে তারা ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে আসছে। তাদের দাবী মেনে নিলে দুই বোনকে ছেড়ে দিবে।

রেদুয়ান আরো জানান, রোহিঙ্গা ডাকাত দলের হাতে জিম্মী হয়ে থাকা আমার দুই বোনকে উদ্ধার করার জন্য স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এব্যাপারে টেকনাফ থানার আওয়তাধিন বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, হাতে অপহরন হওয়া দুই কিশোরীকে উদ্ধার করার জন্য আমরা বিভিন্ন কৌশল হাতে নিয়েছি।

পাশাপাশি মেয়ে দুটোকে উদ্ধার করার জন্য আমাদের পুলিশ সদস্যদের অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয় জনগনের সহযোগীতা পেলে খুব শীঘ্রই তাদেরকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে আমরা সক্ষম হবো।

তিনি আরো জানান,২২ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধার দিকে অপহরন হওয়া দুই কিশোরীর পিতা আবুল কালাম বাদী হয়ে শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিমকে প্রধান আসামী করে টেকনাফ মডেল থানায় একটি মামলা রুজু করেছে।

উল্লেখ্য, শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত ‘আব্দুল হাকিম’ বিগত কয়েক বছর ধরে গহীন পাহাড়ে আত্মগোপনে থেকে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদক,মানব পাচার,ডাকাতি,অপহরন,মানুষ হত্যাসহ নানা প্রকার অপরাধ সংঘটিত করে আসছে।

তথ্য সূত্রে দেখা যায়, তাকে আটক করার জন্য স্থানীয় আইন-শৃংখলা বাহীনির সদস্যরা বেশ কয়েক বার সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করেছিল।

উক্ত অভিযানে এবং কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তার আপন ভাই, স্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন চিহ্নিত ডাকাত নিহত হয়েছিল। কিন্তু এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেল শীর্ষ ‘আলোচিত’ সেই রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিম।

এদিকে গহীন পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা হাকিম ডাকাত ও তার সহযোগীদের দমন করার জন্য (ওসি) প্রদীপের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের সাঁড়াশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরও খবর