পেঁয়াজের সাথে আকাশ ছুঁয়েছে সবজির দাম

শাহীন মাহমুদ রাসেল :

সবজির রাজধানী হিসাবে পরিচিত খরুলিয়া এখন সবজির আকাল দেখা দিয়েছে। বাজারে পছন্দমত সবজি মিলছে না। যা মিলছে তাও আবার আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে ক্রেতারা প্রয়োজনের অর্ধেক বা তারও কম সবজি কিনে বাড়ি ফিরছেন। আগে খরুলিয়ার সবজি কক্সবাজারসহ চট্টগ্রামেও রপ্তানী হয়েছে। এখন ব্যবসায়ীরা উত্তরবঙ্গ থেকে সবজি নিয়ে আসছে খরুলিয়ায়।

বৃহস্পতিবার দিনব্যাপি উপজেলার খুরুলিয়া, বাংলাবাজার, লিংকরোড, উপজেলা গেইট ও কলঘরসহ বেশ কয়েকটি হাটা-বাজার ঘুরে সবজির এমন দৈন্যদশা চোখে পড়েছে। এসব হাট বাজার গুলোতে দেড় দুই মাস আগেও সবজিতে ভরপুর থাকতো। তখন সারাদিন ক্রয় বিক্রয় শেষে বেচে যাওয়া সবজিগুলো বাজারে পানির দরেও বিক্রি হত। অনেক দোকানীরা গরীব দুঃখী ও ভিখারীদের বিনা পয়সাতেও সবজি দিত। এখন সবজির আকাল দেখা দিয়েছে। টাকা দিয়েও পছন্দমত সবজি মিলছে না।

সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, গত প্রায় এক মাস ধরে সবজির বাজার এমন টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। ক্রমেই এই দাম বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার খরুলিয়ার হাটে করলা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া পটল ৬০ টাকা, ঢেরস ১০০ টাকা, সজনেডাটা ১৫০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, লাউ ছোট সাইজ প্রতি পিচ ২০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

এ বাজারের সবজি ব্যবসায়ী বদি আলম, হালেক ও ইসমাইল ১৪-১৫ জন সবজি বিক্রেতা জানান, কচুর লথি, কাকরোলসহ বেশ কিছু সবজি আমাদেরকে অনেক দুর থেকে আনতে হচ্ছে। ফলে পরিবহন খরচ ও কুলি ভাড়া দিয়ে এসব সবজির দাম বেড়ে যাচ্ছে। জসিম ও আক্কাস আলী নামে আরো দুজন সবজি বিক্রেতা জানান, প্রতিদিন তাদের দোকানে দুই মন পটল ও দুই মন করলার চাহিদা রয়েছে। সকাল থেকে ঘুরে ঘুরে দশ কেজির বেশি পটল ও করলা জোগাড় করতে পারেননি। তাদের মতে বাজারে সবজির চাহিদার তুলনায় আমদানী কম হওয়ার কারণেই সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন ঘাটপাড়া মহল্লার সাবেক পুলিশ সদস্য ইউনুছ ইনু। তিনি জানান, এ বছর আগে এত দামে আর সবজি কিনতে হয়নি। তার মতে এক দিকে সবজিগুলোর দামেও বেশি আবার মানেও তত উন্নত নয়।

পাতলী গ্রামের সবজি উৎপাদনকারী কৃষক আজাদুর রহমান জানান, তার কিছু জমিতে পটল ও লাউয়ের আবাদ রয়েছে।
বর্তমানে তিনি ঢেঁড়স তোলার পর ওইসব জমিতে মরিচ রোপনের পর ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে কারণে সবজি ক্ষেতে যাওয়ার সুযোগ হয়না। একদিকে মরিচ রোপণের শ্রমিকের ব্যাপক সংকট ও ধান সংরক্ষণ নিয়ে স্টোরগুলোর অব্যবস্থাপনা নিয়ে ভয়ানক দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আসিশ দে জানান, কিছু কিছু সবজির সীজন (মৌসুম) এখনও শুরু না হওয়ায় ওইসব সবজির মূল্য বাড়তে পারে। তবে এটা সাময়িক। কিছুদিন পরেই বাজার আবার নেমে আসবে। তার মতে সদর ও আশেপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমান বিভিন্ন সবজির চাষ হচ্ছে। এখানে সবজির বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোন কারণ নেই।

আরও খবর