বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট করতে হচ্ছে মহাপরিকল্পনা

অনলাইন ডেস্ক • প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি হলেও পর্যটন খাতে এখনো সাফল্যের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। তবে এবার বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট করতে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। যা এখন চূড়ান্ত হওয়ার পথে।

জানা গেছে, পর্যটন খাতকে ঢেলে সাজানোর জন্য কাজ করছে সরকার। পর্যটনকে এগিয়ে নিতে ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড আইন প্রণয়ন এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন আইনকে যুগোপযোগী করা হচ্ছে।

বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট করতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করা হবে। এই এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোনের মধ্যে রয়েছে বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও কক্সবাজার। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলাতেও পর্যটকদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেয়া যায় কি না তা নিয়ে হচ্ছে গবেষণা।

বান্দরবানের নীলগিরি

বান্দরবানের নীলগিরি

এর মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় প্রায় এক হাজার একর জমিতে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক নামে বিশেষ এ অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে পর্যটন সেবাদাতাদের কাছ থেকে জমি বরাদ্দের আবেদনও চাওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, এসব এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোনে একাধিক হোটেল, কটেজ, বিচ ভিলা, নাইট ক্লাব, কনভেনশন হল, অ্যামিউজমেন্ট পার্কের মতো সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বলেন, পর্যটনে একটা মাস্টার প্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। চলতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে মাস্টার প্ল্যানের ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হবে। এ প্ল্যান প্রণয়নে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিনিধির বক্তব্য শুনেছি।

তিনি আরো বলেন, সুন্দরবনকে কেন্দ্র করেও বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে। এরই মধ্যে সুন্দরবনে বুয়েটের প্রতিনিধি দল জরিপ করেছে। তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত পর্যায়ে। সেখানে পযর্টক যাতে আকৃষ্ট হয় এবং বিদেশি বড় বড় ক্রুজ শিপগুলো ইকো ট্যুরিজম উপভোগ করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে সরকার।

সচিব বলেন, সুন্দরবন ও বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ কেন্দ্রিক পর্যটন বিকাশে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সরকারের নানা পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে নেয়া হবে সব ধরনের উদ্যোগ।

সুন্দরবন

সুন্দরবন

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটক আসে ১ লাখ ৬০ হাজার। পরের বছরই আবার তা কমে যায়। তবে ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত প্রতিবছরই বেড়েছে বিদেশি ভ্রমণকারী। সর্বশেষ ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ঘুরতে আসেন দুই লাখ ৭০ হাজার বিদেশি পর্যটক।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের তালিকা অনুযায়ী ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত পর্যটনের দিক থেকে ৫ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। পর্যটনকে নিয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এ খাতে আরো সফলতা আসবে বলে মনে করছে সরকার।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ। এদেশে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ও ম্যানগ্রোভ বন। এছাড়া এখানকার বন, হাওর, চা বাগান, পাহাড়পুর বিহার, সোয়াম্প ফরেস্ট, সিলেটের মাজার ও বাগেরহাটের মসজিদ অনিন্দ্যসুন্দর। এসব প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থাপনা পর্যটকদের বিমোহিত করবে।

আরও খবর