পাইকারি বাজারে কমলেও....

কক্সবাজারে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা

শাহীন মাহমুদ রাসেল

দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কক্সবাজারে খুচরা ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাইকারি বাজারে ইন্ডিয়ান পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, আর খুচরা বাজারে ৭০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজারে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, আর খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা।

পাইকারি বাজারে কমলেও খুচরা বাজারে এখনও প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে। কক্সবাজারের বড় বাজার, বাহারছড়া বাজার ঘুরে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের মূল্য ১০ টাকা কমিয়ে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু খুচরা বাজারে এর কোনও প্রভাব পড়েনি, উল্টো গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিক্রি হওয়া ৮০ টাকার পেঁয়াজের মূল্য আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকা। কারণ ব্যাখ্যা করে খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারা মূল্য বাড়াননি। পাইকারি বাজার থেকে যে দামে কিনে এনেছেন, তার সঙ্গে পরিবহন খরচ যুক্ত করে কিছুটা মুনাফা ধরে তারা বিক্রি করছেন। মূল্য যা বাড়ানোর তা আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাড়িয়েছেন।

এদিকে, শহরের পেঁয়াজের অন্যতম পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত বড় বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী বাদশা মিয়া বলেন, দেশে পেঁয়াজের কোনও সংকট নেই। সরবরাহ ভালো। পেঁয়াজ পচনশীল হওয়ায় গত কয়েকদিনের আবহাওয়ায় দেশে মজুদ করা পেঁয়াজ অনেকটাই পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই লোকসানের ভয়ে আমরা মূল্য কমিয়ে বিক্রি করছি।

জেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে জানান, কক্সবাজারে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আসে। সরবরাহ ঘাটতির দোহাই দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কক্সবাজারসহ দেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থির করে তুলেছে। তাই বাজার তদারকি করতে কক্সবাজারের বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।

খরুলিয়ার কাঁচা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মাহমদুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, যেদিন ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করলো ওই দিন সকালে ঘোষণার আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারি বাজার থেকে কিনেছি ৬৫ টাকায়। আর ভারতের ঘেষণার পর দুপুরে পাইকারি বাজারে ওই একই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকায়! আমরা খুচরা ব্যবসায়ী, পাইকারী বাজার থেকে যে দামে পাবো, তার সাথে দুই এক টাকা যোগ দিয়ে বিক্রি করি। আগে বস্তা ধরে পেঁয়াজ কিনতাম, বাজারে এই অবস্থার পর এখন পাঁচ-সাত কেজি কিনে ব্যবসা করছি। তিনি আরো বলেন, সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে যদি পাইকারি বাজারে ঠিক থাকে তবে খুচরা বাজারেও ঠিক থাকবে। আমাদের মতো খুচরা ব্যবসায়ীদের এই বাজারে কোন হাত নেই। যদি বেশি সমস্যা দেখি, তাহলে ঝামেলা এড়াতে দোকানে পেঁয়াজ তুলবো না। অন্যান্য সবজি নিয়ে ব্যবসা করবো।

ক্রেতারা বলছেন, খুচরা বাজারে সরকারের মনিটরিং না থাকার কারণে পেঁয়াজের বাজারে এমন নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার, তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানির কথা বললেও এখনপর্যন্ত ওই বিষয়ে কোনও সুসংবাদ নেই। অন্যদিকে, গত ১৩ আগস্টের পর ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে হঠাৎ করে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজি খুঁজে বের করতে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের মাঠে কাজ করার বিষয়ে কোনও অগ্রগতি হয়েছে কিনা, তা জানাতে চায় না কেউ। অন্যদিকে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল করতে টিসিবি রাজধানীর খোলা বাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করলেও অন্যান্য কোন জেলায় এই দামে পেঁয়াজ বিক্রি না করায় হতাশা ব্যক্ত করেন সাধারণ ক্রেতারা।

আরও খবর