মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়া পাড়ায় একই বাড়িতে বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত্রে যেকোন সময় জবাই করে ৪ জনকে খুন হওয়ার বিষয়ে উখিয়া থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) পরিবর্তন করা হয়েছে। মামলার গতি প্রকৃতি সহ সার্বিক তদন্ত কার্যক্রমে অধিকতর গতি আনার লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা পুলিশ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি বিশ্বস্ত সুত্র নিশ্চিত করেছেন।
উক্ত মামলার নম্বর ৪৭/২০১৯, তারিখ : ২৬/৯/২০১৯ ইংরেজি। ধারা : ফৌজদারি দন্ড বিধি : ৩০২ ও ৩৪। নিহত মিলা বড়ুয়ার পিতা ও রোকন বড়ুয়ার শ্বশুর শশাংক বড়ুয়া বাদী হয়ে এ মামলাটি গত ২৬ সেপ্টেম্বর উখিয়া থানায় দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে সুনির্দিষ্ট কাউকে আসামী করা হয়নি, আসামী অজ্ঞাত হিসাবে এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। এ মামলা দায়েরের পর উখিয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মোহাম্মদ ফারুক হোসেনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর তার পরিবর্তে ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) মর্যাদার কর্মকর্তা উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মজুমদারকে আইও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডার ঘটনার নতুন নিয়োগ পাওয়া আইও ওসি (তদন্ত) নুরুল ইসলাম মজুমদার জানান, জেলা পুলিশ, থানা পুলিশ, বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি গত শুক্রবার ২৭ সেপ্টেম্বর পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপরেশনস এন্ড ক্রাইম) আবুল ফয়েজ স্যার স্বয়ং নিজে এসে পরপর ২ দিন থেকে চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডারের ঘটনাস্থল পরিদর্শন, স্থানীয় জনসাধারণের সাথে মতবিনিময় সভা, নিহতদের স্বজনদের সাথে কথা বলেন, এবিষয়ে জেলার শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম থেকে এ মামলার সার্বিক বিষয় গুরুত্বের সাথে তদারকি করছেন। তদন্ত কার্যক্রম কতটুকু এগিয়েছেন, ঘাতকদের চিহ্নিত করা হয়েছে কিনা, আসামী গ্রেপ্তার করতে আর কতদিন লাগবে-এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি (তদন্ত) এবং আইও মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি। হত্যাকান্ডের মোটিভ উদঘাটন করা হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিকভাবে সে বিষয়ে অবগত করবেন বলে তিনি জানান।
এদিকে, হত্যাকান্ডের অনেক ক্লু ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে, তবে তদন্তের স্বার্থে এসব ক্লু প্রকাশ করা যাচ্ছেনা বলে দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
আরেকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তাঁরা চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডারের মোটিভ উদঘাটনে প্রায় শেষপর্যায়ে এসেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, সিআইডি’র ক্রাইম সিন টিমের রিপোর্ট, পিবিআই এর চট্টগ্রাম থেকে আসা ফরেনসিক এক্সপার্ট টিমের রিপোর্ট, সুরতহাল রিপোর্ট, অন্যান্য সংগ্রহকৃত আলামত ও তথ্য উপাত্ত সহ সমন্বিত করে প্রকৃত খুনীদের নাম ঠিকানা বের করে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেছেন, পুলিশ অনেক দুর এগিয়ে গেছে, হত্যাকান্ডের রহস্য দ্রুততম সময়ে উন্মোচনে, ইতিমধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। কক্সবাজার
জেলা পুলিশ এই হত্যাকান্ডটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়ে কাজ করছে।
প্রসংগত, কুয়েত প্রবাসী রোকন বড়ুয়ার বাড়িতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত্রে রোকন বড়ুয়ার জম্মদাতা মা সখী বড়ুয়া (৬৪), স্ত্রী মিলা বড়ুয়া (২৫), পুত্র রবিন বড়ুয়া (৫) ও ভাইঝি সনি বড়ুয়াকে কে বা কারা জবাই করে হত্যা করে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-