উখিয়ায় ৪ জনকে জবাই করে হত্যার ক্লু বের করতে চেষ্টা চলছে

ফারুক আহমদ, উখিয়া :

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রত্মাপালং ইউনিয়নে পূর্ব রত্নাপালং গ্রামের কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়ার মা, স্ত্রী, শিশু ছেলে সহ ৪ জন কে জবাই করে নৃশংস ভাবে হত্যার ক্লু বের করতে তদন্তে নেমেছেন চট্টগ্রাম হতে আসা পিবিআই এর ফরেন সিক টিমের সদস্যরা।একই সাথে সিআইডির ক্রাইম সিন টিম।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উখিয়া থানার পুলিশ খবর পেয়ে মৃতদেহের লাশ উদ্ধার করেছে।, নিহতরা হলো হলো-মৃত প্রবীণ বড়ুয়ার স্ত্রী সখী বড়ুয়া (৬৫), রোকেন বড়ুয়ার স্ত্রী মিলা বড়ুয়া (২৬)শিশু পুত্র অনিশ বড়ুয়া (৬), শিবু বড়ুয়ার মেয়ে সনী বড়ুয়া (৫)। বুধবার রাতেই দুর্বৃত্তরা পৈশাচিক হত্যা কান্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ান সিবিএনকে জানান, পুলিশ খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির চাদের সিড়ি দিয়ে নীচে প্রবেশ করে ৪ টি জবাই করা লাশ উদ্ধার করে। ওই সময় হত্যাকান্ডের খবর শুনে শত শত লোকের ভিড় জমে।

এদিকে একই পরিবারে শিশুসহ ৪জনকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলী হোসেন জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জান চৌধুরী রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ।

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম হতে পিবিআই এর উচ্চ পর্যায়ের ফরেন সিক টিম বিকাল ৩ টায় ঘটনাস্হলে এসে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষ করে সন্দ্ব্যায় ৭ টায় ৪ জনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে সকালে সিআইডির ক্রাইম সিন টিমের সদস্যরা লাশের সুরতাহাল রির্পোট তৈরি করে পুরো বাড়িতে ক্রাইম সিনের বেল্ড দিয়ে গিরে রাখেন। ওই সময় প্রশাসন ও আাইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য ব্যতিত কাউকে লাশ দেখতে দেয়নি। আলামত যাতে নষ্ট না হয় সে লক্ষে এটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল মনসুর।

সকালে পরিদর্শনেে আসা জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসন বলেছেন এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনার ক্লু বের করতে প্রশাসের পক্ষে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অচিরেই দেশের প্রচলিত আইনে জড়িতদের কে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে তিনি আশ্বাস দেন। একই সাথে এ হত্যাকান্ড নিয়ে কোন অবস্থাতে অতিরঞ্জিত না করে সবাইকে ধর্য্য ধরার আহবান জানান। কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড আমরা দ্রুত ঘটনার ক্লু বের করার চেষ্টা করতেছি এবং কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন পুলিশের ক্রাইম সিন ম্যানেজম্যান্টের বিশেষজ্ঞ ও পিআইবি ফরেনসিক টিম যৌথভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে হত্যার ক্লু বের করার চেষ্টা তদন্ত কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুর করেছেন।

প্রতিবেশি দিপালী বড়ুয়া জানান সকালে পূজার জন্য ফুল তুলতে মৃত প্রবীণ বড়ুয়ার বাড়িতে যান তিনি।সাড়া শব্দ না পেয়ে জানালায় উঁকি দিয়ে দেখতে পায় ঘরের মেঝেতে বয়োবৃদ্ধ সখি বড়ুয়ার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। এ দৃশ্য দেখে কান্নাকাটি ও চিৎকার দিলে স্হানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন।

স্থানীয় মেম্বার ডাক্তার মুক্তার আহমদ বলেন রোকেন বড়ুয়া বর্তমানে কাতারে রয়েছেন। ছুটিতে এসে দেশে এসে কয়েক মাস বাড়িতে থাকার পর ৪ /৫ আগে পুনরায় কর্মস্হল কুয়েতে চলে যান তিনি। পরিবারে বয়োবৃদ্ধ মা সখি বড়ুয়া স্ত্রী মিলা বড়ুয়া ও ছেলে শিশু অনিশ একসাথে বসবাস করত।ঘটনার রাতে ভাই শিবু বড়ুয়ার ছোট কন্যা সনি বড়ুয়া দাদীর সাথে ঘুমাতে এসে হত্যার শিকার হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান গত বুধবার রাতে দুর্বৃত্তরা বাড়ির ছাদের উপরের দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকে সকলকে জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ঘটনা নিয়ে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কি কারনে ঘটনাটি ঘটতে পারে কেউ কিছু বলতে পারছেনা নিহতের পরিবার যেন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চৌধুরী নির্মম ও পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ঘটনায় জড়িতদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশের নিকট জোর দাবি জানান। এ ব্যয়পারে থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্ততি চলছে বলে জানা গেছে।

আরও খবর