ডেক্স রিপোর্ট :
মাদকের বিরুদ্ধে ঘোষিত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানে খরুলিয়ার কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ী গ্রেফতার হলেও আইনের আওতায় আসেনি অনেক ইয়াবা কারবারি। ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছেন অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী।
কক্সবাজার সদরের খরুলিয়ায় গোয়েন্দা সংস্থার তালিকার বাইরেও রয়ে গেছে বহু মাদক কারবারি। তারা কতিপয় অসৎ পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ কারবার। এমনটাই অভিযোগ করেছে স্থানীয়দের।
জানা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়ার সিকদার পাড়া এলাকার রানা একজন ইয়াবা ডন হিসেবে পরিচিতি পেলেও তিনি বরাবরই অধরা রয়ে গেছেন।
তালিকার শীর্ষে থাকা অনেক ইয়াবা ডন গ্রেপ্তারের পরও নিজের অবস্থান টিকিয়ে সারাদেশে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যার ফলে দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রকাশ্যে পাচার করছে কাড়িকাড়ি ইয়াবা। ধ্বংস হচ্ছে দেশ তথা দেশের যুব ও ছাত্রসমাজ। রানা একাধিকবার আটক হয়ে জেলও খেটেছিলেন বলে জানা গেছে।
খরুলিয়ার ইয়াবা ডন রানা ইয়াবা ব্যবসা করে গত কয়েক বছরে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। নামে-বেনামে খরুলিয়া এলাকায় জায়গা-জমি কিনে সম্পত্তির মালিক হয়ে গেছেন। অথচ কয়েক বছর আগেও তিনি কলাতলীর ইয়াবা সম্রাট জামালের কর্মচারি ছিলেন। এরপর একাধিক মামলা খেয়ে দেউলিয়া হয়েছিলেন। কিন্তু মরণনেশা ইয়াবা ব্যবসার বদৌলতে আজ কোটিপতির খাতায় নাম লিখিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে মতে, রানা সম্প্রতি খরুলিয়ায় নির্মাণ করেছেন কোটি টাকা ব্যায়ে বিলাশবহুল বাড়ি। এছাড়া কুমিল্লার কয়েকটি আবাসিক এলাকার বিভিন্ন হোটেলে তার ফ্ল্যাটের ব্যবসা আছে।
সূত্রমতে, ইয়াবা রানার নেতৃত্বে পুরো ঝিলংজার বিভিন্ন সিন্ডিকেট মোটা দাগের ইয়াবা লেনদেন ও পাচার কাজে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এ কাজে পারদর্শী বিত্তহীন থেকে কোটিপতি হওয়া উক্ত রানা নিজেকে একজন তাবলীক জামায়াতের আমির হিসেবে পরিচয় দিয়ে কালো টাকাকে সাদা করতে ব্যস্ত।
সচেতন অভিভাবকদের অভিমত, বর্তমান ভয়াবহ জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যেসব কিশোর, যুবক জড়িয়ে পড়েছে, তাদের একটি অংশ মাদকাসক্ত ও মাদক পাচারের সাথে কোনও না কোনওভাবে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মতে, কারা ইয়াবা পাচার করে বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছে, তাদের সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন সহ সমাজের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বা নজরদারির দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে, আগামী প্রজন্ম খুবই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়বে।
এলাকাবাসী আরো জানায়, খরুলিয়ার অপরাধজগত ও নানা অপকর্মের অন্যতম ইয়াবা ব্যবসায়ী রানাকে গ্রেপ্তারে বেরিয়ে আসবে ইয়াবা পাচারসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রানা জানান, আমি তাবলীগ জামায়াতের আমির। জায়গা-জমি নিয়ে কাজ করি, পাশাপাশি বাবার জায়গা জমি বিক্রি করে ২৪ লক্ষ টাকা পেয়েছি, সেই টাকা দিয়ে বাড়ি করেছি তাতে দোষের কিছু দেখছি না।
সিকদারপাড়া এলাকার নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, রানা ও তার ভাই রাশেদ তারা দুজন প্রকৃত ইয়াবা গডফাদার তা এলাকার মানুষ অবগত রয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের করা মাদক কারবারিদের তালিকায় রানা শীর্ষে রয়েছে।
সদর থানার ওসি দতন্ত খাইরুজ্জামান বলেন, মাদক কারবারিদের কোন ছাড় নাই।পালিয়ে কেউ বেশিদিন বাঁচতে পারে না।পুলিশ ঠিকে খোঁজে বের করে আইনের মুখামুখি করবে। তালিকা থেকে বাদ পড়া মানে বেঁচে যাওয়া নয়। কারবারিরা যতো বড় মাপের হোক তাদের বিরুদ্ধো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সূত্র – আলোকিত উখিয়া
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-