রোহিঙ্গা তরুণীর জাল সনদ-ঘুষ প্রদানসহ তথ্য গোপনের অপরাধে আইনী পদক্ষেপ জরুরী

ইউছুফ আরমান

কক্সবাজার জুড়ে সমালোচনার তুঙ্গে একজন রোহিঙ্গা তরুণী। সে নাকি বাংলাদেশের হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কক্সবাজার নৌ স্কাউটের, পৌর প্রিপারেটরি স্কুলের আইটি প্রশিক্ষক, শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকার প্রথম আলোর সংগঠন বন্ধুসভার জেলা কমিটির অর্থ সম্পাদক। এছাড়া ওমেন লার্নিংথ সেন্টার, মার্কি ফাউন্ডেশন, কক্সবাজার সরকারি কলেজের স্কাউটসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে তিনি সম্পৃক্ত। এই রোহিঙ্গা তরুণী কার ছত্রছায়ায় এত দূর এগিয়ে যাচ্ছে এবং ঘুষের লেনদেন করে বিদ্যালয় কে ভর্তি করেছে তা খতিয়ে দেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আইনের আওতায় আনা হোক।

রোহিঙ্গা তরুণীর পরিচয় ও শিক্ষা জীবনঃ-কক্সবাজারের কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরের তরুণী রহিমা আকতার। তার বাবার নাম মোহাম্মদ ইলিয়াস আর মায়ের নাম মিনু আরা। রহিমার জন্ম থেকে শুরু করে বেড়ে ওঠা সবকিছুই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। রোহিঙ্গা পরিচয় লুকিয়ে এবং ঘুষ দিয়ে কক্সবাজারের একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন খুশি। রোহিঙ্গা পরিচয় লুকিয়ে এবং ঘুষ দিয়ে ভর্তি হওয়া সেই স্কুলটি হলো কক্সবাজার শহরের বৈল্যাপাড়ার স্বনামধন্য বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি। কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি থেকে এসএসসি ও কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। কক্সবাজারের ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এলএলবি অনার্স অধ্যায়ণরত।

কার পরিচয়ে বেড়ে উঠাঃ- একজন রোহিঙ্গা এত সাহস পেল কোথায়? কার পরিচয়ে বা কার ছত্রছায়ায় রোহিঙ্গা তরুণীর বেড়ে উঠা। যে ব্যক্তি ছলনা বা প্রতারণা করে এই তরুণী কে তথ্য গোপন করে অসাধুভাবে দেশের নাগরিক সুবিধা পেতে সহযোগিতা করেছে নিশ্চয় সে ব্যক্তি অপরাধ করেছে। যার মনে দেশ প্রেম নাই, তার কাজ কর্ম রাষ্ট্রদ্রোহের সামিল। সুতরাং তাকে আইনী প্রক্রিয়ায় আটক করতে হবে। সে ব্যক্তি যত বড় মাপের হোক না কেন? তাকে আইনের দ্বারস্থ করা এখন সময়ের দাবী। বিষয় টি যেহেতু রাষ্ট্রের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সেহেতু রাষ্ট্র তার দ্রুত ব্যবস্থা করবে।

ঘুষ গ্রহণকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাঃ- শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। কক্সবাজারের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বায়তুশ শফর জব্বারিয়া একাডেমীর কর্মকর্তা ঘুষ গ্রহণ করে একজন রোহিঙ্গা তরুণী কে নাগরিক অধিকার ভোগের সুযোগ দিয়েছে যা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। যে কর্মকর্তা ঘুষ গ্রহণ করে নৈতিকতা বির্সজন দেয় তাকে ঘুষখোর হিসেবে অভিহিত করা যায় এবং তিনি ঘুষ গ্রহণের অপরাধ করেছে বিধায় আইনের আওতায় আনা অপরিহার্য। দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে যে ব্যক্তি দেশের সাথে বেঈমানি করে কঠোর শাস্তি হওয়া জরুরী। যে কর্মকর্তা অবৈধভাবে স্কুলে ভর্তি করেছে সে অপরাধের মূলহোতার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

জাল জন্ম সনদঃ- কোন ব্যক্তি নাগিরক সুবিধা পেতে কিংবা উপভোগ করতে কোন প্রয়োজনী দলিল তৈরি করে প্রতারনার অভিপ্রায়ে কাজ করে তাকে জালিয়াতি করেছে বলে পরিগণিত হবে এবং অপরের রূপ ধারণ করে প্রতারণা করা দেশের প্রচলিত আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। আর সে অপরাধ করেছে একজন রোহিঙ্গা তরুণী। দেশের প্রচলিত আইন তোয়াক্কা না করে নাগরিক সুবিধা নিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও জালিয়াতির করে স্বার্থসিদ্ধ হাসিলে তৎপর ছিল রোহিঙ্গা তরুণী। তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অপরাধে অপরাধী সাব্যস্থ করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা রুজু করা রাষ্ট্রের উপর বর্তায়। আমাদের দেশে রোহিঙ্গারা বাস্তুহারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মাত্র।

রোহিঙ্গা তরুণীর বিচরণঃ- এই রোহিঙ্গা তরুণী রহিমা আকতার ওরফে রাহী খুশি বাংলাদেশের একটি শীর্ষজাতীয় প্রথম আলো দৈনিক পত্রিকার সংগঠন বন্ধুসভার জেলা কমিটির অর্থ সম্পাদক। এছাড়া ওমেন লার্নিংথ সেন্টার, মার্কি ফাউন্ডেশন, কক্সবাজার সরকারি কলেজের স্কাউটসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে তিনি সম্পৃক্ত। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা ডয়চে ভেলে খুশির দেড় মিনিটের ভিডিওটি ইন্টারনেটে প্রচার করলে তার রোহিঙ্গা পরিচয় ফাঁস হয়ে যায়। কক্সবাজারবাসী বিস্মিত খুশি একজন রোহিঙ্গা এবং সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনে রোহিঙ্গা তরুণীর বিচরণ। নিজের সবকিছু পরিচয় গোপন করে বদলে গেছে ।

শিক্ষা সনদ বাতিল করা হোকঃ- দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে অবৈধভাবে অর্জিত রোহিঙ্গা তরুণীর অর্জিত সকল শিক্ষা সনদ বাতিল করা হোক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো সচেতনতা বৃদ্ধি হওয়া সমচিত। এইভাবে যত রোহিঙ্গা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ণরত আছে কি না তা খতিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

লেখক পরিচিতি
ইউছুফ আরমান ,কলামিষ্ট, সাহিত্যিক ,শিক্ষানবিশ আইনজীবী ,০১৬১৫৮০৪৩৮৮

আরও খবর