ডেস্ক রিপোর্ট – রোহিঙ্গাদের ‘রাষ্ট্রহীন’ করে কয়েক বছর পরপর বড় পরিসরে নির্যাতন-নিপীড়ন চালায় মিয়ানমার। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রাত থেকে মিয়ানমার বাহিনী নির্মূল অভিযান চালিয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পুরো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশকে দেশছাড়া করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।
১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের মহানুভবতায় মুগ্ধ ও কৃতজ্ঞ বিশ্বসম্প্রদায়, বিশেষ করে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রভাবশালী দেশগুলো।
অথচ ওই দেশগুলো রোহিঙ্গাদের ওপর ‘জেনোসাইড’ (গণহত্যা হিসেবে প্রচলিত), ‘মাস কিলিং’ (ব্যাপক হত্যা) চালানো সত্ত্বেও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
পশ্চিমা কিছু দেশ বরং রোহিঙ্গা ইস্যুকে পুঁজি করে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং তাতে সাফল্যও পাচ্ছে। অথচ মিয়ানমারের তাড়ানো রোহিঙ্গাদের পুরো চাপ, ঝুঁকি ও ক্ষতি বহন করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, পশ্চিমা দেশগুলো যখন বছরের পর বছর মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞার খড়্গ চাপিয়েছে তখন সেই সুযোগে সেখানে একচেটিয়া ব্যবসা করেছে চীন। ২০১৭ সাল থেকে নতুন করে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরো জোরদার করার সুযোগ করে দিয়েছে। রাখাইন রাজ্যে চীনের অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক ও জ্বালানি নিরাপত্তা বিষয়ে বড় স্বার্থ আছে।
তাই চীন মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইবে না। চীন চায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার মিলে রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধান করুক। বিশেষ করে বাইরের বা অন্য অঞ্চলের কেউ এই সংকটে যুক্ত হোক বা মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করুক তা চায় না চীন।
রাশিয়ার অবস্থানও এ ক্ষেত্রে প্রায় অভিন্ন। জাপানের বিভিন্ন কম্পানি ব্যবসা-বাণিজ্য করছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চাপে পড়া মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরো পাকা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার—উভয়ের প্রতিবেশী ভারত রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সহায়তা ও প্রত্যাবাসনে সহায়ক ভূমিকা পালনের পথ বেছে নিয়েছে। বাংলাদেশ, মিয়ানমার—দুই দেশের সঙ্গেই জোরালো সম্পর্ক রাখতে চায় ভারত। তাই রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের জবাবদিহি বিষয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাবগুলোর ওপর ভোটাভুটিতে ভারত উপস্থিত থেকেও কোনো পক্ষ না নিয়ে ভোটদানে বিরত থাকছে।
রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সহায়তার ওপরই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। অথচ রোহিঙ্গা সংকটে মিয়ানমারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা বা নিজে উদ্যোগী হয়ে এককভাবে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক কাটছাঁট করার কোনো উদ্যোগ নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট ঘিরে প্রভাবশালী একটি দেশ এই অঞ্চলে শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ তাতে রাজি হয়নি।
বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলে আভাস পাওয়া গেছে, রোহিঙ্গা সংকটে সবার স্বার্থ একরকম নয়। মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকারের অজুহাতে অনেক দেশ এখনই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর পক্ষে নয়। তবে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের জবাবদিহির জন্য মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টির তেমন কোনো উদ্যোগই তারা নিচ্ছে না। এ থেকে তারা এ সংকট সমাধান চেষ্টায় কতটা আন্তরিক তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
পশ্চিমা কূটনীতিকরা বলেছেন, তারা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে গিয়ে মিয়ানমারের জনগণ ও বেসামরিক সরকারকে শাস্তি দিতে চান না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এখনো মিয়ানমারকে বাণিজ্য সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু জাতিসংঘের দূতরাও বলেছেন, ২০১৭ সাল থেকে চলা রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও তাঁর বেসামরিক সরকার এড়াতে পারে না।
তাছাড়া পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমার শাসন করা সামরিক বাহিনীকে এখন ওই দেশটির জনগণ, ব্যবসা-বাণিজ্য, এমনকি পার্লামেন্ট থেকে আলাদা করা কঠিন।
গত ৫ আগস্ট জাতিসংঘের মিয়ানমারবিষয়ক স্বাধীন সত্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের হত্যা ও বিতাড়নের মাধ্যমে জেনোসাইড সম্পন্ন করতে ৪৫টি কম্পানি ও সংস্থা মিয়ানমার সামরিক বাহিনীকে অন্তত এক কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছিল।
ওই কম্পানি ও সংস্থাগুলোই পরে রাখাইন রাজ্য পুনর্গঠনের কাজ পেয়েছে এবং বুলডোজার দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর, নাম-নিশানা নিশ্চিহ্ন করতে ভূমিকা রেখেছে।
এ ছাড়া মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং এর শীর্ষ অধিনায়করা ওই দেশটির ওষুধ, ইনস্যুরেন্স, পর্যটন, ব্যাংকিংসহ অন্তত ১২০ ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের অধীন অন্তত ২৬টি প্রতিষ্ঠান কাচিন ও শান রাজ্যে জেড ও রুবির খনি খননের কাজ পেয়েছে।
জাতিসংঘের তদন্তদল মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী পরিচালিত ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানালেও গত ২০ দিনে কোনো দেশই তাতে সাড়া দেয়নি। চীন, রাশিয়া, ভারতসহ সাতটি দেশের অন্তত ১৪টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিয়ানমার বাহিনীকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করছে। মিয়ানমারের সঙ্গে অস্ত্র ব্যবসা বন্ধ করারও কোনো লক্ষণ নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় ব্যবসা মিয়ানমারের সঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্র এখনো মিয়ানমারকে জিএসপি (অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা) দিচ্ছে। এখনো মিয়ানমারের সব ব্যবসা হয় সিঙ্গাপুরের মাধ্যমে, আবুধাবি, আরব আমিরাতের মাধ্যমে।’
মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা ওই দেশগুলোকে তিনি এ বিষয়টি দেখার আহ্বান জানান।
সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোহিঙ্গা সংকটে মানবাধিকারবিষয়ক দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) বিশাল কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে। মানবিক সহায়তার বড় অংশ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিওর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্য বৈশ্বিক তহবিল প্রবাহ দেখে অনেক এনজিও মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের দিকে ঝুঁকেছে।
এদিকে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত ‘জেনোসাইড’কে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করবে কি না তা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চরম মতপার্থক্যের তথ্য গত বছরের ১৩ আগস্ট ফাঁস করেছিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জার্নাল পলিটিকো। যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ স্যাম ব্রাইনব্যাকসহ পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকারবিষয়ক ব্যুরোর অনেকেই রোহিঙ্গা ‘জেনোসাইড’ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করার পক্ষে ছিলেন।
অন্যদিকে পররাষ্ট্র দপ্তরের আইনবিষয়ক ব্যুরোর যুক্তি ছিল, ‘জেনোসাইডে’র বিষয়টি প্রমাণ করা যাবে এমনটি তারা নিশ্চিত নয়। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক ব্যুরোর কর্মকর্তাদের বক্তব্য ছিল, ‘জেনোসাইড’ হওয়ার কথা স্বীকার করলে মিয়ানমারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বিনষ্ট হবে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারকে চীনের প্রভাববলয় থেকে বের করার যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা ব্যাহত হবে।
এর চেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল, জেনোসাইডবিরোধী বৈশ্বিক চুক্তিতে সই করা রাষ্ট্র হিসেবে জেনোসাইড ঠেকানোর দায়িত্বও রয়েছে তার। এমন প্রেক্ষাপটে জেনোসাইড ঠেকানোর সেই দায়িত্ব এড়াতে ‘জেনোসাইড’ হওয়ার কথাই স্বীকার করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
পলিটিকোর সেই প্রতিবেদন ফাঁস হওয়ার কয়েক দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই অনেকটা গোপনে তার ওয়েবসাইটে তাদের অনুসন্ধানের খণ্ডিত একটি অংশ প্রকাশ করে। অথচ যে প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা নিপীড়নের অনুসন্ধান চালিয়েছিল সেই প্রতিষ্ঠানও আলাদাভাবে একাধিকবার গুরুতর অপরাধের জবাবদিহির দাবি তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল অং মিন হ্লাইংসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও দুটি সামরিক ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, জাতিসংঘের তদন্তকারীরাই যেখানে জেনোসাইড, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধের মতো গুরুতর সব অপরাধের আলামত থাকার কথা বলছে তখন ব্যক্তিবিশেষের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রতীকী।
মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক এক রাষ্ট্রদূত নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওই নিষেধাজ্ঞায় মিয়ানমারের কিছুই আসে যায় না। কারণ মিয়ানমারের সেনারা যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চায় না। বরং তারা তাদের বন্ধুরাষ্ট্র চীনে যেতে চায়। আর চীন তাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘এথনিক ক্লিনজিং’ (জাতিগত নির্মূল) হিসেবে অভিহিত করে আসছে। আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ বর্ণনার ওই শব্দগুচ্ছ তুলনামূলক নতুন এবং এই অপরাধ ঠেকাতে ‘জেনোসাইডে’র মতো বৈশ্বিক চুক্তি বা ঐকমত্য হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা অপরাধগুলো পর্যালোচনা করছে। তাই ভবিষ্যতে কোনো একদিন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জেনোসাইডের কথা স্বীকার করবে না এমন নয়।
আগেও দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজ স্বার্থ বিবেচনায় গুরুতর অপরাধ হচ্ছে জেনেও চেপে গেছে। ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় হাজার হাজার তুতসিকে যখন হত্যা করা হচ্ছিল তখন ক্লিনটন প্রশাসন ‘জেনোসাইড’ বলা থেকে বিরত থেকেছে। কারণ ‘জেনোসাইড’ হচ্ছে বলে স্বীকার করলেই তা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবস্থা নিতে হতো। তবে ২০০৪ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুদানের দারফুর অঞ্চলে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ বলে অভিহিত করেছিলেন। কারণ তত দিনে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যে জেনোসাইডের কথা স্বীকার করলেও তা ঠেকাতে তার তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
‘জেনোসাইডে’র অংশ হিসেবে ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রাত থেকে মিয়ানমার বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন মাত্রায় হত্যাযজ্ঞ, নির্মূল অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা নিহত এবং গত দুই বছরে সাত লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার চেয়ে এ দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তাকেই দৃশ্যত বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন বলেন, শীতল যুদ্ধের সময়ও কিছু দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র, কিছু দায়িত্ব রাশিয়া পালন করত। তখন ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের’ একটি ব্যবস্থা ছিল। এখন কিন্তু বিশ্বে ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের’ কোনো ব্যবস্থা নেই।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে ট্রাম্পের সরকারের আমলে বিশ্বের প্রতি অঙ্গীকার থেকে পিছু হটছে। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ১৯৯২ সাল ও ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা ঢলের পার্থক্য দেখলে দেখা যাবে, মিয়ানমার কিন্তু ১৯৯২ সালে এত বড় পরিসরে রোহিঙ্গাদের তাড়াতে পারেনি। ১৯৯২ সালে শীতল যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলেও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কোন দিকে যাবে তা বোঝা যাচ্ছিল না। এখন মিয়ানমার বুঝতে পারছে যে যুক্তরাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তেমন কেউই আর তাকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করার মতো নেই।
এদিকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব চায়নার অধ্যাপক ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী বলেছেন, তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে চীনই শুধু সহযোগিতা করতে পারে। কিন্তু অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত নিরাপত্তাসহ আরো নানা ইস্যুতে মিয়ানমার ও চীন পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। তাদের মধ্যে সম্পর্কও বেশ ঘনিষ্ঠ। তাই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সফল করতে চীন কতটা এগোবে সে নিয়ে সন্দেহ আছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-