কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে এক লাখ টাকা জরিমানা

বিশেষ প্রতিবেদক :

কক্সবাজারের কলাতলীর মাইক্রোওয়েভ স্টেশনের নিচে পাহাড় কেটে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কাজ বন্ধ করেছে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। পাহাড় কাটা ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের দায়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে। এর আগে পাহাড় কাটা অবস্থায় ৩ জন শ্রমিককে আটক ও পাহাড় কাটার কিছু সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

তবে অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে কয়েকজন শ্রমিক আগেই পালিয়ে গেছে। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে পৃথকভাবে সোমবার দুপুর দেড়টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ওই অভিযান চলে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে ভ্রাম্যমান নেতৃত্বে দেন কক্সবাজার সদর সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার মোক্তার।

তিনি বলেন, ‘অভিযানে পাহাড় কাটা ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের সত্যতা পাওয়া গেছে। ইউনিভার্সিটির সাইনবোর্ডের আড়ালে সেখানে পাহাড় কাটা ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছিল। অভিযানে তাৎক্ষনিকভাবে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়ে চারপাশে লাল পতাকা পুতে দেওয়া হয়েছে।

হ্যান্ড মাইকে সতর্ক করে সকলকে বলা হয়েছে ওই স্থানে পাহাড় কাটা বা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসময় ৩ জন শ্রমিককে আটক করা হয়। এছাড়াও কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা পরিশোধ করায় শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

একই স্থানে পৃথক অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া সহকারি পরিচালক নুরুল আমিন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষন করে এসেছি। এ বিষয়ে শিগগিরই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। তবে এ বিষয়ে এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না। আশা করি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আমরা একটা পদক্ষেপ নেবো।’

অভিযান চলাকালে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুর রহমানও। মুঠোফোন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে পরিস্থিতিতে দেখতে সেখানে গিয়েছি। কিন্তু অভিযান হয়েছে মূলত সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর নেতৃত্বে। ওই স্থানে স্থাপনা নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়ে লাল পতাকা পুতে দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, কলাতলীর মাইক্রোওয়েভ স্টেশন প্রভাবশালী ভূমি দস্যুদের কবলে পড়েছে। স্টেশনের চারপাশে পাহাড় কেটে জায়গা জবর দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। সেখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। ‘টিএন্ডটি পাহাড়’ হিসেবে পরিচিত এই পাহাড় কেটে সমতল করায় ৮৩ ফুট উচ্চতার টাওয়ারসহ স্টেশনের দালান ধসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। চরম ঝুঁকিতে পড়েছে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনা।

জানা যায়, ১৯৭৬ সালে বনবিভাগের ৫.৬ একর জমিতে মাইক্রোয়েভ স্টেশনটি স্থাপন করা হয়। বর্তমানে স্টেশনটিতে জনসাধারণকে টেলিকম সেবা প্রদানের জন্য ৮৩ মিটার উঁচু একটি টাওয়ার রয়েছে। টাওয়ারে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন টেলিকম অপারেটর এবং গোয়েন্দা সংস্থার রেডিও এন্টেনা বসানো আছে। এ টাওয়ারেই ‘মহেশখালী ডিজিটাল আইল্যান্ড’ প্রকল্পের এন্টেনা বসানো হয়েছে। এটি যে কোন সময় অকেজো হলে পুরো দেশের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে দালানের বিভিন্ন অংশ দেখা দিয়েছে ফাটল।

আরও খবর