হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদিসে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সে আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।’ -সুনানে তিরমিজি
সুন্দর আচরণ বলতে আমরা বুঝি কারও সঙ্গে সুন্দর করে কথা বলা, দেখা হলে সালাম দেওয়া, কুশলাদি জিজ্ঞেস করা, কর্কশ ভাষায় কথা না বলা, ঝগড়া-ফাসাদে লিপ্ত না হওয়া, ধমক কিংবা রাগের সুরে কথা না বলা, পরনিন্দা না করা, স্বার্থ হাসিলের জন্য অপমান-অপদস্ত না করা, উচ্চ আওয়াজে কথা না বলা, গম্ভীর বা কালো মুখে কথা না বলা, সর্বদা হাসিমুখে কথা বলা, অন্যের সুখে সুখী হওয়া এবং অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়া, বিপদে দেখা করে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করা সুন্দর আচরণের অন্তর্ভুক্ত।
মানুষ হিসেবে আমরা প্রত্যেকেই সুন্দর আচরণ প্রত্যাশা করি। কিন্তু অন্যের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে ভুলে যাই। সামান্য একটু অসতর্কতার কারণে আমাদের আচরণে একজন মানুষ অনেক কষ্ট পেতে পারে। তাই আমাদের সবসময় সচেতন থাকা দরকার, যাতে আমাদের আচরণে কেউ বিন্দুমাত্র কষ্ট না পায়।
যার আচরণ যত বেশি সুন্দর সবাই তাকে তত বেশি ভালোবাসে, সম্মান ও শ্রদ্ধা করে। যার আচরণ ভালো নয় সবাই তাকে ঘৃণা করে ও এড়িয়ে চলে। সুন্দর ব্যবহার সুন্দরভাবে কথা বলা সুন্দর মনের পরিচয় বহন করে।
মানুষের সুন্দর ব্যক্তিত্ব তার চেহারায়ই প্রকাশ পায়। সুন্দর ব্যবহারের কারণে যে মুখটি প্রিয় হয়, বিপরীতভাবে অসুন্দর ব্যবহার করায় একই মুখটি অপ্রিয় হয়ে যায়।
সুন্দর আচরণ ইবাদতও বটে। এ প্রসঙ্গে এক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সুন্দর আচরণই নেক আমল।’ –সহিহ মুসলিম
ইসলামের শিক্ষা হলো, একজন ভালো মুসলমান হিসেবে কর্তব্য হলো, অন্যের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করা। যেকোনো মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে মিলিত হওয়া। এ প্রসঙ্গে হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমরা একে-অপরের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করবে- এটিও সদকা।’
ইসলাম মানুষের সঙ্গে ভালো কথা বলা এবং সুন্দর আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সুন্দর আচরণ উন্নত ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। ইসলামের পথে মানুষকে আহ্বানের সর্বোত্তম পন্থা। সুন্দর আচরণের মাধ্যমেই যুগে যুগে নবী-রাসূলরা অন্ধকারে নিমজ্জিত, পথহারা, দিশেহারা, মানুষকে আলোর পথ দেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই মহৎ গুণের অধিকারী হতে আমাদের। বিশেষত আলেম-ওলামা ও মসজিদের ইমামদের এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
নবীর ওয়ারিশ হিসেবে, ধৈর্যধারণপূর্বক মানুষকে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে সত্য, ন্যায় ও সঠিক পথে চলতে উৎসাহিত করতে হবে। তবেই আমরা শান্তি ও সুখের ঠিকানা খুঁজে পাবো।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-