ডেস্ক রিপোর্ট :
চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লায় এনে এক পোশাককর্মীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের মালিখিল এলাকার একটি মৎস্য খামারের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রোববার বিকেল ৩টার দিকে দাউদকান্দির বলদাখাল এলাকা থেকে ধর্ষণ মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় গোলাম রাব্বি ও রাব্বি আহাম্মদ নামে ধর্ষণ মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। সন্ধ্যায় তাদেরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের দুই এএসআই ও দুই কনস্টেবলসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের পদ্মা পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে কর্মরত এক তরুণীর (২০) সঙ্গে এক বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মালিখিল গ্রামের রমিজ মিয়ার ছেলে গোলাম রাব্বীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
শুক্রবার রাব্বী ওই তরুণীকে বিয়ে করবে এবং ব্যাপারে তার বাবা-মা সম্মতি দিয়েছেন এজন্য সরাসরি দেখতে চায় বলে তাকে মোবাইল ফোনে দাউদকান্দি চলে আসার জন্য বলে।
ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে বাসযোগে চট্টগ্রাম থেকে রওনা করে রাত ১২টার দিকে দাউদকান্দি বাস স্টেশনে এসে পৌঁছেন তরুণী। এ সময় প্রেমিক গোলাম রাব্বী, তার বন্ধু আল আমিন ও রাব্বি আহাম্মদসহ কয়েকজন তাকে নিয়ে একটি সিএনজিযোগে রওনা দেয়।
এরপর ওই তরুণীকে নিয়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের মালিখিল এলাকার একটি মৎস্য খামারের অফিস কক্ষে নিয়ে যায় তারা।
তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে চিৎকার শুরু করেন তরুণী। এ সময় তারা ওড়না দিয়ে তরুণীর মুখ চেপে ধরে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ভোর রাত ৪টা পর্যন্ত তাকে গণধর্ষণ করে ঘটনাস্থলে রেখে পালিয়ে যায়।
এদিকে, এ ঘটনায় ভিকটিমের মামলার প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে মালিখিল গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে আল আমিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী রোববার বিকেল ৩টার দিকে দাউদকান্দির বলদাখাল স্লুইসগেট এলাকায় অভিযানে গেলে আসামিরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালায়।
এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে গোলাম রাব্বী ও রাব্বি আহাম্মদ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। পাশাপাশি থানা পুলিশের এএসআই আমির হোসেন ও প্রদীপ এবং দুই কনস্টেবলসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে আহত গোলাম রাব্বী ও রাব্বি আহাম্মদকে সন্ধ্যায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি গান, ৩ রাউন্ড গুলি, একটি রামদা, একটি চাকু ও একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-