বিশেষ প্রতিবেদক •
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে একের পর এক শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও তার বিন্দুমাত্র প্রভাব নেই আরেক সীমান্তবর্তী উপজেলা উখিয়ায়। অথচ টেকনাফের পাশাপাশি উখিয়াতেও ইয়াবা ও মাদক ব্যবসার ক্ষেত্রে কোন কমতি নেই।
টেকনাফের তুলনায় ইয়াবা পাচারকারীর সংখ্যা উখিয়ায় কিছুটা কম হলেও উখিয়ায় শীর্ষ ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা ছিল টেকনাফের সম সংখ্যক। কিন্তু সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণার পর মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা রাত দিন দায়িত্বপালন করে যাচ্ছে।
সচেতন মহলের মতে সেই তৎপরতা কোন বাতাস উখিয়ায় লাগেনি। যার ফলে ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীরা আরো বেপরোয়া হয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে ইয়াবা ও মাদক পাচার অব্যাহত রেখেছে।
অর্থাৎ উখিয়ার সাইফুল করিমরা অদ্যবধি অধরা থাকায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মাদক ও ইয়াবা বিরোধী লোকজন।
সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন জেলার শীর্ষ ইয়াবা ডন হাজী সাইফুল করিম। তাকে নিয়ে অনেক বিতর্ক থাকার পর অবশেষে পুলিশ প্রংসার দাবীদার হয়ে উঠেছে। সে সহ ইতিমধ্যে টেকনাফের প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট-বড় ইয়াবা ব্যবসায়ী কতিথ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও পাশ^বর্তী উপজেলা হিসেবে উখিয়ার তা নগন্য। মাত্র ২জন ইয়াবা ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও অধরা রয়েছে অন্তত শতাধিক ইয়াবা কারবারী। তারা দিনের বেলায় আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে রাতের দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ও মাদক ব্যবসা।
উখিয়া বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দদের দাবি এ উপজেলায় ১ শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। যারা ইয়াবা ও মাদক সেবন, বাজারজাতকরণ, পাচার ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত। সুত্রমতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৩৫ জন ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে কবির আহমদ, বুজুরুজ মিয়া, রোহিঙ্গা জিয়াবুলহককে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও অধরা রয়েছে আরো অনেকে। মাদক বিরোধী অভিযানের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে চিহ্নিত ইয়াবা পাচারকারীদের আটক বা ইয়াবা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টিকে সচেতন মহল ভিন্ন চোখে দেখছে।
তারা বলছে, মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গাড়ি, বাড়ি, সহায় সম্পত্তি বহাল তবিয়তে এবং এসব মাদক ব্যবসায়ীও নিজ নিজ অবস্থানে নিরাপদে অবস্থান করছে। তাদের দাবী হয়তো এসব ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হোক না হয়, রামুর শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী পূর্বগোয়ালিয়াপালং এলাকার বাসিন্দা মোস্তাক আহমদের মতো অস্থাবর সম্পদ ক্রোক করা হোক। যাতে ইয়াবা পাচার বন্ধ হয়ে যায়।
উখিয়ার সচেতন নাগরিকরা বলেন, কিছু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনের সঙ্গে ইয়াবা সিন্ডিকেটের আঁতাত ও সম্পৃক্ত থাকার কারণে মাদকবিরোধী গত এক সপ্তাহে তেমন কানো ইয়াবা ব্যবসায়ী ধরা বা ইয়াবা উদ্ধার হয়নি। তিনি বলেন, এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা না হলে হাজারো মাদক বিরোধী অভিযানে সফলতা আসবে না।
কারণ, এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীর রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি এবং তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের রাগববোয়াল ইয়াবা সিন্ডিকেট।
এ প্রসঙ্গে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের জানান, উখিয়ায় যে সমস্ত ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে তাদের ব্যাপারে পুলিশ খবরা খবর রাখছে। সময় মতো আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-