মঈনুল হাসান পলাশ :
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস এর কথিত জঙ্গি হামলার হুমকির মুখে কক্সবাজারে বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্য করতে আসা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিদেশি এনজিওগুলোতে নিয়োজিত কয়েক হাজার বিদেশি নাগরিক কক্সবাজারে অবস্থান করেন। এদের বেশিরভাগ আছেন বিভিন্ন তারকা মানের হোটেলে,গেস্ট হাউজে এবং কেউ কেউ ভাড়া করা ফ্ল্যাটেও।
জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের তারকা মানের হোটেলগুলোতে অধিকাংশ বিদেশি সাহায্য কর্মী অবস্থান করছেন।
সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস এর তরফ থেকে বাংলাদেশে হামলার টার্গেটের মধ্যে বিদেশি নাগরিকদের প্রথমে রাখা হয়েছে।
এরা কারণ হিসেবে মনে করা হয়,পশ্চিমা নাগরিকদের ওপর হামলা হলে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তা ব্যাপক প্রচার পায়।
এদিকে সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা দেখতে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনে সরেজমিনে খোঁজ খবর নেয়া হয়।
কলাতলী বীচ পয়েন্টের সায়মন বীচ রিসোর্টে সর্বাধিক সংখ্যক বিদেশি নাগরিক অবস্থান করেন।
সম্ভাব্য হুমকি মোকাবেলায় হোটেলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানালেন সায়মনের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার রাইয়ান মর্তুজা।
তিনি বলেন,সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটরিং,আর্চওয়ে,দেহ তল্লাশি,এক্সপ্লোসিভ ডিটেক্টর, গ্যানম্যান রাখা হয়েছে। ফলে বিদ্যমান নিরাপত্তা যথেষ্ট। তবে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই এক্সপ্লোসিভ স্ক্যানারও আনা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
হোটেলটিতে গড়ে দু’শ বিদেশি নাগরিক অবস্থান করেন বলে জানানো হয়।
কলাতলী মোড়ের বেষ্ট ওয়েস্টার্ন প্লাস হেরিটেজ হোটেলের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন জাহিন দৈনিক সমুদ্রকন্ঠকে জানান,তাদের হোটেলে নিরাপত্তা জোরদার করতে আট জন অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গ্যানম্যান রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
হোটেল সী প্যালেসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এমদাদুল হক জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বাড়তি কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় নি। তবে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে।
লং বীচ হোটেলের অপারেশন ইন চার্জ সজিব চক্রবর্তী তাদের বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট বলে মনে করেন। তবে বিদেশিদের অবস্থান করা স্থনগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃশ্যমান টহল থাকলে ভালো হয় বলে জানান তিনি।
হোটেল সী গালে নিরাপত্তা জোরদার করতে স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কারো অবস্থান সন্দেহজনক মনে হলেই স্পেশাল টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, হোটেল-মোটেল জোনে সার্বক্ষণিক অবস্থানরতদের তথ্য অনলাইনে জানাতে সংশ্লিষ্টদের বলা আছে। এ ছাড়া জঙ্গী তৎপরতা রোধে ভাড়া বাসায় অবস্থানরতদের পূর্ণাংগ তথ্য জানাতে বাড়িওয়ালাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার পুলিশের ফেসবুক পেইজে এ সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য দেয়া যাবে। এছাড়া ক্যাবল টিভির চ্যানেলেও জঙ্গী সংশ্লিষ্ট সতর্কতামূলক প্রচার করা হচ্ছে।
বিশেষ করে যে সব বহিরাগত লোকজন সাত দিনের বেশি কক্সবাজারে অবস্থান করছে,তাদের ব্যাপারে নজর রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া বেশীরভাগ এলাকাই এখন সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। কক্সবাজার হতে টেকনাফ পর্যন্ত পুলিশের ৯টি,বিজিবির ২টি এবং সেনাবাহিনীর ২টি চেকপোস্ট রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার বলেন,কক্সবাজারের আইএস এর হামলার হুমকি সংক্রান্ত কোনো তথ্য তার জানা নেই।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে বলায়,ওপর থেকে কোনো নির্দেশনা এসেছে কি-না?
জানতে চাইলে তিনি বলেন,সেটা জানানো যাবে না।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-