আশ্রয়কেন্দ্রে না গেলে পুলিশ দিয়ে নেওয়া হবে

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাত থেকে রক্ষা করতে ১৯ জেলার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকে নিজে থেকেও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। তবে যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থেকেও নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চাইবেন না, তাদের জোর করে হলেও সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রয়োজনে পুলিশ দিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে তাদের।

বৃহস্পতিবার (২ মে) উপকূলীয় জেলার একাধিক জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষা করা প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে না চাইলে তাদের বাধ্য করা হবে। সেজন্য পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনে কোলে করে নিয়ে যাবো।’
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড়ের বিপদ সংকেত বেড়ে গেলে যে কোনও মূল্যে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। আমাদের সেরকম প্রস্তুতি রয়েছে। পুলিশ-আনসারও প্রস্তুত। যারা যেতে চাইবেন না, তাদের জোর করে নিয়ে যাওয়া হবে।
এই জেলা প্রশাসক আরও জানান, কক্সবাজারের ৫৩৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। অনেকে ইতোমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে। আবার অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আসছেন।’

‘ফণী’ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরগুনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আট নম্বর সতর্ক সংকেত দিলে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেবো। ৩ হাজার ৩৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ লোককে নেওয়া যাবে। এছাড়া স্কুলভবন, মসজিদসহ নিরাপদ স্থানে আশ্রয়ে নিতে পারবো আরও চার লাখ মানুষকে। সব মিলিয়ে ছয় লাখ লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া যাবে। যদি কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে না চান, তাহলে জোর করে নেওয়া হবে। পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।’

ভোলার জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিবন্ধীদের সহায়তায় সাত উপজেলায় ৮০ সদস্যের ৮টি টিম গঠন করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকায় মোট ২ হাজার ৪৮৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮০০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে উপকূলীয় ১৯ জেলা ও এর সঙ্গে যুক্ত উপজেলাগুলোয় জরুরি ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানীয় জল, বিস্কুট ও খাবার স্যালাইন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে ৩০টি ওয়াটার ট্রাক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত কক্সবাজারের ব্যাপারে ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আবহাওয়া বার্তায় কক্সবাজার, চট্টগ্রামে আঘাতের তেমন আশঙ্কা নেই। তবুও রোহিঙ্গাদের জানমাল রক্ষার প্রস্তুতি রয়েছে। পাশাপাশি ৩০ হাজার রোহিঙ্গা যুবককে দুর্যোগ, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’

আরও খবর