আল্লাহ তাআলা মানুষকে কল্যাণের জন্য ভালো কাজের একটি মৌসুম উপহার দিয়েছেন। যে মৌসুমে মানুষের ভালো কাজের প্রাপ্তি বেড়ে যায় আবার মন্দ কাজের প্রভাব একেবারেই কমে যায়। বান্দার সম্মান ও মর্যাদা বেড়ে যায়।
ভালো কাজের এ পবিত্র মৌসুমে মুমিন মুসলমানের অন্তর শুধুমাত্র আল্লাহর তাআলার দিকে ঝুঁকে যায়। ভালো কাজের অন্যতম এ মৌসুমটি হলো পবিত্র রমজান মাস। যে মাসে মুমিন বান্দা দিনের বেলা রোজা পালন করে আর রাতে নামাজে অতিবাহিত করে।
আল্লাহ তাআলা মানুষকে সেই মহা সম্মানিত মাস রমজানের রোজা পালনের মাধ্যমে তাকওয়া ও পরহেজগারী অর্জনের নির্দেশ দেন-
‘তোমাদের ওপর (ভালো কাজের মৌসুম রমজান মাসের) সাওম তথা রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে এ রোজা তোমাদের আগের জাতির প্রতি ফরজ করা হয়েছিল। আশা করা যায় তোমরা (রমজান মাসে রোজা পালনের মাধ্যমে) তাকওয়া-পরহেজগারী অর্জন করতে সক্ষম হবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)
আল্লাহ তাআলার ঘোষণায় রমজানের রোজা মুসলিম উম্মাহর গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদার ইবাদত। তাই রোজার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হুকুম আহকাম জেনে নেয়া সব মুমিন মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব কর্তব্য।
মুমিন মুসলমানের উচিত, পবিত্র রমজান মাসে ফরজ ওয়াজিব সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান অর্জন ও পালনের পাশাপাশি সুন্নাত ও মোস্তাহাব আমলগুলো যথাযথ পালনে একনিষ্ঠ হওয়া। আর তাতেই ভালো কাজগুলোর প্রাপ্তি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্দ কাজের পরিণতিও কমে যাবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৭ কিংবা ৮ মে শুরু হবে পবিত্র রমজান মাস। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান শুরু দুই মাস আগে তথা রজব মাস থেকেই রমজানের ইবাদত-বন্দেগি ও হুকুম-আহকাম পালনে নিজেকে তৈরি করতেন। সাহাবায়ে কেরামকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বলতেন।
সে আলোকে পবিত্র রমজান মাসের বিভিন্ন বিষয়সহ ফজিলত, উপকারিতা ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হবে ইনশাআল্লাহ।
রমজান ও রোজার পরিচয়
রমজান ও রোজা এক সুতোয় গাঁথা। রমজান হলো আরবি হিজরি সনের নবম মাসের নাম। আর এ মাস জুড়ে দিনের বেলায় পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা মহান আল্লাহর বিধান।
দিনের বেলায় পানাহার থেকে বিরত থাকাকে আরবিতে ‘সিয়াম’ বলা হয়। মুমিন মুসলমান যাকে রোজা হিসেবে জানে।
রমজান মাসের ১ম দিন থেকে দিনের বেলা খাওয়া-দাওয়া, পান করাসহ যাবতীয় অনাচার থেকে নিজেকে বিরত রাখার পাশাপাশি ভালো কাজে নিজেকে আবদ্ধ রাখা ফরজ ইবাদত।
সুতরাং নিয়তের সঙ্গে সুবহে সাদেক (ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়া আগে) থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত সব ধরনের রোজা ভঙ্গকারী তথা পানাহার, জৈবিক ও শারীরিক যে কোনো বিষয় ভোগ করা থেকে বিরত থাকা। আর এটাই হলো রোজা।
রোজার শরিয়ী হুকুম
ইসলামি শরিয়তে রমজান মাসের রোজা ফরজ। এ মাসের রোজা ফরজ হওয়ার ব্যাপারে দলমত নির্বিশেষে সমগ্র উম্মত একমত। এ মাস জুড়ে রোজা পালনে কোনো মুসলিমের মতবিরোধ নেই। আর এটি ইসলামের চতুর্থ রোকন বা স্তম্ভ। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার নির্দেশ-
‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম (রোজা) ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে তোমাদের আগের লোকদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। আশা করা যায়, তোমরা (রমজানের রোজা পালনের মাধ্যমে) তাকওয়া-পরহেজগারী অর্জন করতে পারবে।’ (সুরা আল-বাকারা : আয়াত ১৮৩)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও যথাযথভাবে রোজা পালনের মাধ্যমে ভালো মৌসুমের প্রাপ্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খারাপ কাজ থেকে বিরত থেকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও তাকওয়া অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-