বিশেষ প্রতিবেদক :
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন, গতানুগতিক শিক্ষায় কোন অর্জন নেই। কর্মমুখী কারিগরী শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমেই দেশের বেকারত্ব দূরীকরণ সম্ভব। তাই আগামীতে ছাত্রছাত্রীদের সেদিক বিবেচনায় পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে হবে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারী শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সর্বস্তরে নারীদের শামিল করেছেন। এ জন্যই নারী শিক্ষায় আমাদের আরো অধিকতর যতœবান হতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ার মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ে সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখাঁ পালং গ্রামের বাসিন্দা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহীদ মেধাবী ছাত্র এটিএম জাফর আলম সিএসপি’র ছোট ভাই মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম স্মৃতির কথা স্মরণ করে বলেন-‘ সেদিনের সাথে এদিনের ব্যবধান অনেক। মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রধান অতিথি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘সেই সময় আমাদের উখিয়া উপজেলা মিলে ছিল মাত্র কয়েকটি স্কুল। অথচ আজ ২০ টির বেশী স্কুল। সেই সময় যাতায়াতের ব্যবস্থা এরকম ছিল না। ছিল কাদা রাস্তা। এখন হয়েছে সবখানেই পাকা রাস্তা।’ তিনি বলেন, উন্নয়নের কারনেই আজ এমন আমুল পরিবর্তন হয়েছে।
মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রধান অতিথি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, বিদ্যালয়ের জন্য একটি পাঠাগার, খেলার মাঠ এবং একটি ভবন তৈরির বিষয়টি তিনি বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। ব্কতব্যের আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত স্যুভেনির ‘বাতিঘর’এর মোড়ক উন্মোচন করেন। অধ্যাপক আলমগীর মাহমুদ বাতিঘর সম্পাদনা করেন।
সুবর্ণ জয়ন্তী পরিষদের সভাপতি ও হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোঃ শাহ আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভার পর্বটি অনুষ্টিত হয়। অনুষ্টানের বিশেষ অতিথি মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব সোলতান আহমদ বিদ্যালয়টির প্রাক্তন ছাত্র। তিনি স্মৃতি চারণ করে বলেন, এই বিদ্যালয়টি না হলে আমি নিজেও আজ লেখাপড়া করে এমন পর্যায়ে আসতে পারতাম না। এজন্য তিনি বিদ্যালয়টির প্রতিষ্টার সাথে এবং প্রতিষ্টাকালীন সময়ের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
১৯৬৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টা লাভ করে। মরিচ্যা পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বে একটি ছোট্ট মাটির গুদামে জুনিয়র স্কুল হিসাবে যাত্রা দিয়ে আজ এ এলাকার সবচেয়ে একটি সমৃদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্টানে রুপ নিয়েছে বিদ্যালয়টি। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২ হাজার ২০০ মত শিক্ষার্থী এবং ৩৫ জন শিক্ষক রয়েছেন।
অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের মহাসচিব ও হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল হক আমিন। অনুষ্টানে অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আফসারুল আফসার, সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী, রামু উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল ও উখিয়ার নব নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী, বিদালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও বিশিস্ট সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ, প্রাক্তন ছাত্র আবদুল মাবুদ চেয়ারম্যান, প্রাক্তন ছাত্র অধ্যাপক আলমগীর মাহমুদ, প্রাক্তন ছাত্র এম, জহিরুল হক ও বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের পক্ষে সাংবাদিক সাইফুর রহিম শাহীন ব্কতৃতা করেন।
এ সময় মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের যুগ্ন সচিব শফিউল আজিম, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ মাসুদুর রহমান মোল্লা, উখিয়া উপজেলার সাবেক উপজেলা পরিসদ চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী, বর্তমান উখিয়া উপজেলা নব নির্বাচিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান কমরুন্নেসা বেবী সহ ইউপি চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্টানটি সঞ্চালনা করেন মির্জা জহির ও তোফায়েল আহমদ। এর আগে সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে সকালে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। বিকালে এক মনোজ্ঞ সাংষ্কৃতিক অনুষ্টান অনুষ্টিত হয়।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-