বিশেষ প্রতিবেদক :
সরকার বিকল্প পন্তায় দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়নে ১৯৯৫ সালে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উখিয়া উপজেলার ৮ টি বনবিটের আওতায় সামাজিক বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। বাস্তবায়নাধীন এসব প্রকল্প রক্ষনাবেক্ষন ও পরিচর্যা করার জন্য সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের ৩ কিলোমিটারের ভিতরে অবস্থানরত হতদরিদ্র পরিবারের একজন করে সদস্যদের সুফল ভোগী হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০০৫ সালে এসব সামাজিক বনায়ন প্রকল্পে উন্নীত গাছ প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করে সুফল ভোগী ও সরকার বিপুল অংকের টাকা আয় করার ফলে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের বিস্তিৃতি বেড়ে যায় উল্লেখ যোগ্য ভাবে।
২০০৮ সালে সরকারি বন সম্পদ অবাধ লুটপাট, বন ভুমি দখল বানিজ্য বেপরোয়া হয়ে উঠার কারনে প্রভাব পড়তে শুরু করে সামাজিক বনায়নের উপর। ২০১২ সাল থেকে সামাজিক বনায়নের গাছপালা লুটপাট ও সামাজিক বনায়নের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া দালিলীক জমিজমা অবাধ ভাবে বেছা কেনার ফলে বর্তমানে সরকারের উন্নয়ন মুখী এ প্রকল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে।
উখিয়ার বনবিভাগ সুত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন কিস্তিতে উখিয়ার মোছারখোলা, থাইংখালী, উখিয়ার ঘাট বনবিট, উখিয়া সদর, দোছড়ী, ওয়ালা বনবিট, ভালুকিয়া বনবিট ও হলদিয়া বনবিটের আওতাধীন প্রায় ৮ হাজার হেক্টর বনভুমিতে সামাজিক বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
২০১৫ সালে উখিয়া সদর বনবিটের আওতায় প্রায় ৫০ হেক্টর সামাজিক বনায়নের গাছ রাতারাতি লুটপাট হয়ে যাওয়ার পর থেকে এ প্রকল্প আর আলোর মুখ দেখছেনা। উখিয়ার ঘাট বালুখালী সামাজিক বনায়ন প্রকল্প কমিটির সভাপতি বদিউর রহমান জানান, তার এলাকায় প্রায় আড়াইশ হেক্টর বনভুমিতে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের গাছ রূপন করা হয়েছে।
প্রায় ২/৩ বছর যেতে না যেতেই ওই গাছ গুলো যখন চোখে পড়ারমত হয়ে উঠে, তখন এলাকার এক শ্রেনীর অস্ত্রধারী ভুমিদস্যু সামাজিক বনায়নের গাছ লুটপাট শুরু করে। এসময় বাধা দিতে গিয়ে তৎকালিন উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শান্তি গোপাল বাকালিসহ ৪জন বনবিট কর্মকর্তাকে বনদস্যুরা কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
এভাবে একের পর এক সামাজিক বনায়নের গাছ লুটপাট ও বরাদ্ধ দেওয়া বনভুমি বেপরোয়া লুটপাট, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দখল হস্তান্তর অব্যাহত থাকায় বর্তমানে সামাজিক বনায়ন প্রকল্প নেই বলেলই চলে।
সোমবার কুতুপালং উত্তর পাড়ায় ২০০৫ সালে প্রতিষ্টিত সামাজিক বনায়ন প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, সুফল ভোগী নামধারী জাফর আলম ও তার ছেলে আলা উদ্দিন সামাজিক বনায়নের প্রায় ৫ হেক্টর জমির গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলেছে। স্থানীয় কয়েকজন পাড়া প্রতিবেশী জানান, তারা স্থানীয় বনবিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে সুনির্দিষ্ট প্রকল্পের জায়গার উপর ভাড়া বাসা তৈরি করছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাফর আলমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সদর বনবিট কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। উখিয়া সদর বনবিট কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হাসানের সাথে মুঠোফোনে আলাপ করে সামাজিক বনায়নের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মানের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি সরাসরি বলেন, উখিয়া সদরে কোন সামাজিক বনায়ন প্রকল্প নেই।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-