সেই রাফিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী রাসেল

নিজস্ব প্রতিবেদক :


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি ভাইরালের পর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রাফিয়া আফরিন কানিজের। যে ঝিনুক বিক্রি করে লেখাপড়ার খরচ যোগাতো সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। এমন অবস্থায় চরম আর্থিক দৈন্যদশা সৃষ্টি হয় তার পরিবারের।

রাফিয়ার পরিবারের এই চরম সংকট মুহুর্তে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে গ্যাস সিলিন্ডার প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী রাসেল আহম্মেদ নোবেল। শুধু রাফিয়া নয়, দায়িত্ব নিয়েছেন তার পুরো পরিবারের।

শনিবার (২৩ মার্চ) রাতে তার নিজ কার্যালয়ে এনে রাফিয়ার পরিবারকে সহযোগীতা করার কথা জানান কাজী রাসেল। তাৎক্ষনিক রাফিয়া এবং ভাইকে স্কুল ড্রেস, জুতা ও ব্যাগ কিনে দেন। পাশাপাশি ঘরের খরচের জন্য নগদ টাকাও দেন।

কাজী রাসেল আহম্মেদ নোবেল বলেন, রাফিয়ার বিষয়টি ফেসবুকে দেখার পর আমার নজরে আসে। আমার মা সব সময় আমাকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা দিয়ে থাকেন। সব সময় চেষ্টা করি অসহায় মানুষের সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করার। তাই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমি তাদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইনশাআল্লাহ যতদিন বেঁচে থাকবো রাফিয়া এবং তার পরিবারের পাশে থাকবো। রাফিয়া আজ থেকে আমার মেয়ে।

তিনি বলেন, রাফিয়া এবং তার ভাই ৫ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত মো. আরফাত মাস্টার্স পাশ করা পর্যন্ত তাদের পড়ালেখা এবং যাবতীয় ভরণপোষণ আমি চালিয়ে যাবো। একই সঙ্গে রাফিয়ার পরিবারকে যতদিন তারা স্বাবলম্বী হয়নি ততদিন পর্যন্ত প্রতিমাসে এক বস্তা করে চাউল এবং নিত্য

প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে সহায়তা করবো। এর বাইরে যখন যে সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, তাদের জন্য আমি করে যাবো। রাফিয়ার পরিবারের জন্য আমার দরজা সার্বক্ষণিক খোলা।

রাফিয়া’রা চার ভাইবোন। রাফিয়ার বড় দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন খালার বাসায় থেকে পলিটেকনিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা করে। তার পড়াশোনার খরচ বহন করে ওই খালা। রাফিয়ার আরেক বড় ভাই মো. আরফাত পড়াশোনা করে কলাতলীর শিশু কল্যাণ স্কুলে। রাফিয়া পড়ে কলাতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণিতে। রাফিয়ার ছোট বোন রাবেয়া বছরীর বয়স এখনো মাত্র দেড় বছর।

রাফিয়ার বাবা আব্দুল করিম ছিলেন চিংড়ি হ্যাচারীর কর্মচারী। ২০১১ সালে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মেরুদন্ডে আঘাত পান তিনি। সেই থেকে চলাফেরা করতে পারেন না। কিন্তু রাফিয়ার মা হার মানেননি। বাড়িতে ঝিনুক তৈরী করে সংসার টেনে নিয়ে যান। রাফিয়া এবং তার অপর দুই ভাইকেও পড়াশোনায় নিয়মিত করেন। কিন্তু এখন আর পারছিলেন না রাফিয়ার মা। পড়াশোনা এবং সংসারের বোঝা টানতে রাফিয়া ও তার ভাই আরফাতও নেমে যান জীবিকার্জনের যুদ্ধে।

দুপুরে স্কুল থেকে এসে রাফিয়া এবং তার ভাই আরফাত সমুদ্র সৈকতে নিয়মিত ঝিনুক বিক্রি করতো। তাদের মা পাশে পাশে থেকে সন্তানদের নিরাপত্তা দিত। এক পর্যায়ে পরিবারে অর্থের জোগান দিতে গিয়ে পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় রাফিয়ার। ঠিক সেই মুহুর্তে রাফিয়া এবং তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী রাসেল আহম্মেদ নোবেল।

আরও খবর