বিশেষ প্রতিবেদক :
উখিয়ায় ব্যস্ততম সড়কে ইজি বাইকের র্দুদান্ত দাপট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলার পাচঁটি ইউনিয়নসহ প্রতিটি গ্রামীন জনপদে এসব ইজি বাইক বেপরোয় গতি নিয়ে চলাচল করার কারনে অসহায় হয়ে উঠেছে পথচারী ও গ্রাম-গঞ্জের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা। রাস্তার মাঝখানে গাড়ি ঘোড়ানো, যত্রতত্র পার্কিং ও অদক্ষ চালকের কারনে মৃত্যুর সারি দিন দিন বাড়ছে। কোন প্রকার প্রশিক্ষন ছাড়াই সড়কের নিয়ম নীতি না জেনেই গাড়ি চালানোর কারনে যেখানে সেখানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে ফলে জরুরী কাজে নিয়োজিত সরকারি বেসরকারি যাত্রীবাহী গাড়িসহ, রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স সঠিক সময়ে গন্তব্য স্থানে পৌছতে বিলম্ব হচ্ছে। এমনকি ইজি বাইকের কোন বৈধ কাগজপত্র না থাকা সত্ত্বেও তারা জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে গাড়ি পার্কিং করে কিভাবে সড়কে চলাচল করছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায় মরিচ্যা পাতাবাড়ি সড়ক, কোট বাজার সোনার পাড়া সড়ক, উখিয়া সদর ষ্টেমন জামে মসজিদের সামনে হাজির পাড়া রোড, ডাক-বাংলো পাতাবাড়ি সড়ক, কুতুপালং লম্বাশিয়া সড়ক, থাইংখালী তাজনিমার খোলা সড়কসহ উখিয়ার পাচঁটি ইউনিয়নের প্রায় ২ শতাধিক স্পটে ইজি বাইক পার্কিং করা হচ্ছে। পার্কিং স্থলে দায়িত্বরত লাইনম্যান এসব ইজি বাইক থেকে চাদাঁ আদায় করে গাড়ির সিরিয়াল দিচ্ছে। আবার এসব গাড়ি নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য সড়কের উপর দুই তিনজন দায়িত্ব পালন করতেও দেখা গেছে। কোন প্রকার বৈধতা ছাড়া জনগুরুত্বপূর্ন উখিয়ার বিভিন্ন সড়কে তারা কিসের অনুবলে ইজি বাইক চালাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাব দিতে তারা অপারগতা প্রকাশ করছেন। শুধু এটুকু বলছেন তারা গাড়ি প্রতি দশ টাকা করে চাদাঁ গ্রহন করেন লাইন ম্যান ও নিয়ন্ত্রকারীদের বেতন ভাতা দেওয়ার জন্য।
তবে ভিন্ন সূত্রে খবর নিয়ে জানা গেছে এসব ইজি বাইক থেকে প্রতি মাসে পাচঁশত টাকা হারে চাদাঁ আদায় করা হয়। এসব চাদাঁ যায় কোথায় জানতে চাওয়া হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ম্যানেজ করার জন্য এসব চাদাঁ আদায় করা হয়ে থাকে। তা না হলে যেকোন সময়ে যেকোন পরিস্থিতিতে কোন অজুহাত ছাড়া ইজি বাইক আটকিয়ে রাখা হবে বলে তাদের অভিযোগ।
আন্তঃ জেলা সড়ক পরিবহনের শীর্ষ স্থানীয় নেতা জালাল উদ্দিনের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন এসব ইজি বাইকের বেপরোয়া চলাচলের কারনে গত দুই মাসে অন্তত বিশ জন পথচারী ও স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় শতাধিক। তিনি বলেন রোহিঙ্গা আসার পর থেকে এসব ইজি বাইকগুলো বানিজ্যিকভাবে রাস্তায় নামার কারনে সড়কে প্রয়োজনীয় ও অতিব জরুরী যানবাহনগুলো চলাচল করতে গিয়ে তাদের মূল্যবান সময়ের অপচ হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে ইজি বাইকের বডিতে একটু লাগলে শত শত ইজি বাইক চালক লাঠি সোটা নিয়ে রাস্তায় নেমে পরে।
উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সড়কে ইজি বাইক নিয়ন্ত্রনের জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক ইজি বাইকের রং ব্যবহার করার নির্দেশ দিলেও তা মানা হয়নি। তিনি বলেন যদি গাড়িগুলো ইউনিয়ন ভিত্তিক রং করা হত তাহলে এক ইউনিয়নের ইজি বাইক অন্য ইউনিয়নে আসা যাওয়া করা সম্ভব হত না।
উখিয়ার ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মো: শাহজাহান বলেন ইজি বাইকের কারনে বোরো মৌসুমের শুরু থেকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন উখিয়া পল্লী বিদ্যুতের নিয়ন্ত্রনে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের দুই তৃতীয়াংশ ইজি বাইকের ব্যাটারী চাজিংয়ে চলে যাচ্ছে। সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পল্লী বিদ্যুৎ চলমান শুষ্ক মৌসুমে ঘন্টার পর ঘন্টা লোড শেডিং করছে। পল্লী বিদ্যুতের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আনিচুর রসুল জানান শুষ্ক মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায় । চাহিদা অনুপাতে জাতীয় গ্রীড লাইন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ার কারনে লোড শেডিং করতে হয়।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-