বিবিসি বাংলা :
কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সাম্প্রতিক হামলা আর সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগের মধ্যে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুরুতে রোহিঙ্গাদের দুর্বিষহ পরিস্থিতি দেখে অনেকেই তাদেরকে নিজ আঙ্গিনায় আশ্রয় দেন।
কিন্তু গত দেড় বছরে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় এখন ওই রোহিঙ্গাদের দাপটে শরণার্থী মতো থাকতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
বিবিসি বাংলাকে নিজেদের এমন বিরূপ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন উখিয়ার স্থানীয় বাসিন্দারা।
“রোহিঙ্গারা আঁরার জাগা জমি খসরা (নোংরা) করি ফালায়ের। লেট্রিন করছে, পায়খানা প্রস্রাব করের। গন্দর লা লামি ন ফারি। আগে একটা ঘাসের গোলা বিক্রি করি অনেক টাকা পাইতাম। এখন পাইনা। রাত্রে ঘুমাইতে ন ফারি, তারার চিল্লাচিল্লি, ঝগড়া। থামতে বইললে তো তারা দা-কামান লই, কিরিচ (ছুরি) লই আইবো। এম্নে তো মারি ফালাইবো, ইতারার জনসংখ্যা বেশি। তারারে আঁরা ডরাই, ভয় করি।”
“ওদের মায়া করে জাগা দিসিলাম। ভাবছিলাম মাস দুই পরে চলে যাবে। কিন্তু পরে ওরা আমাদের কোন কথা শুনে না। গাছ কেটে ফেলে, ফল খেয়ে ফেলে। গরুর ক্ষতি হইসে, হাস মুরগির ক্ষতি হইসে। মারামারি করে। কয়েকদিন আগে আমার স্বামীকে ওদের কারণে জেল খাটতে হইসে এক মাসের জন্য। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে সবকিছুর দাম বাড়া। আগে ৩০ টাকার উপরে আমরা চাউল খাইনাই। রোহিঙ্গারা আসার পর এখন ৫০ টাকা দরে চাউল খেতে হচ্ছে আমাদের। আগে আলু ছিল ১০টাকা এক কেজি। এখন ২৫টাকা।”
রোহিঙ্গাদের সহিংসতা ঠেকাতে কতোটা প্রস্তুত নিরাপত্তা বাহিনী?
সবশেষ গতকাল উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের দুটি গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্প ইনচার্জসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছলে রোহিঙ্গারা তাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ ১০জন রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়।
এর আগে, রোহিঙ্গাদের হামলায় তিন জার্মান সাংবাদিক ও পুলিশসহ ছয় জন আহতের খবর পাওয়া যায়।
তবে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে আজ সকাল থেকে প্রতিটি ক্যাম্পে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান উখিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল খায়ের।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও এর আশেপাশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পুলিশ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।। এটা সত্যি যে, মানুষ একত্রিত হলে অপরাধবোধটা কাজ করে বেশি। কিন্তু এমন পরিস্থিতি যেন না হয়, কেউ যেন আতঙ্কের মধ্যে না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া আর্মি, পুলিশ, র্যাব বাহিনীর সমন্বয়ে টহলও আগের চাইতে জোরদার করা হয়েছে।”
রোহিঙ্গাদের আছে নিজস্ব কিছু আইন: