নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজার কলাতলী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত উপকূলের ১০টি স্পটে চলেছে ইয়াবা বেচাকেনা। এতে জড়িত রয়েছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। প্রশাসনের সাথে সম্পর্ক রেখে চলে এমন লোকও রয়েছে সিন্ডিকেটে। উপকূলের প্রতিটি ঘরে নতুন করে ইয়াবার বিষ আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য জানা গেছে, উপকুলের বিভিন্ন ইউনিয়নের অন্তত ১০ টি স্পটে প্রতিদিন ইয়াবা কেনাবেচা হচ্ছে।রামুর হিমছড়ি গোয়ালিয়াপালং, উখিয়ার জালিয়াপালং, সোনারপাড়া, মোনাফ মার্কেট, ডেইলপাড়া, ইনানীর বটতলী বাজারে খুচরা ইয়াবার হাট বসে। ইনানীর চারাবট গাছতলা, ইনানী বীচের আশপাশের আবাসিক হোটেল কটেজসহ বিভিন্ন পয়েন্টে মিলে খুচরা ইয়াবা। গ্রামের চা-দোকানেও মরণ নেশা ইয়াবা পাওয়া যায়।
এলাকাবাসীর দেয়া তথ্য মতে, যেসব স্থানে মাদকদ্রব্য কেনাবেচা হয় সেখানে এখন বিদেশী মদ-বিয়ারসহ হাত বাড়ালেই পাওয়া যাই খুচরা ইয়াবা।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এলাকার কিছু অসাধু নেতাদের কারণেই এসব ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না। তাদের ছত্রছায়ায় এসব ইয়াবা ব্যবসা চালছে বাধাহীন। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তারা সুবিধাও নিয়ে থাকে।
তবে, পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগের চেয়ে ইয়াবা ব্যবসা এখন অনেক কমে গেছে।
উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় পুলিশ বিভিন্ন সময় ইয়াবা ব্যবসাসীদের আটক করার চেষ্টা করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোনে নির্দেশনার মাধ্যমে নির্দিষ্ট জায়গায় সেবীদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী পৌঁছে দেয়। গ্রাম এলাকায় তাদের নির্ধারিত কিছু যুবকও রয়েছে।
ইনানী উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় যোগাযোগ অসুবিধা রয়েছে। এ সুযোগ নিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গ্রামের বাড়ি ঘরে এমনকি চায়ের দোকানে বসেও ইয়াবা কেনাবেচা করে। এ যেন বৈধ ব্যবসা।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, ১শ থেকে ২শ টাকার মধ্যে মিলে প্রতি পিস ইয়াবা। এর মধ্যে সর্বাধিক দাম জিপি’র। এটি ৩শ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। অপরদিকে শম্পা সুপার পাওয়া যায় ১শ থেকে ১শ ৫০ টাকার মধ্যে।
সূত্র আরও জানায়, ইয়াবা উচ্চমাত্রার উত্তেজক মাদকদ্রব্য ইয়াবার প্রতি ঝুঁকছে। সাধারণত ৪ থেকে ৫মি.মি. ব্যাস এবং আড়াই থেকে তিন মি.মি পুরো গোলাকৃতি ট্যাবলেট আকারে এটি তৈরী হয়। দেখতে অনেকটা ছোট আকারের ক্যান্ডির মতো। এর রঙ লালচে, কমলা কিংবা সবুজাভ। এটি আঙ্গুর, কমলা, ভ্যানিলা ইত্যাদি বিভিন্ন স্বাদ ও গন্ধের হয়ে থাকে। এ কারনে কিশোর ও তরুণদের শক্তিদায়ক ক্যান্ডি বলে বিভ্রান্ত করে মাদকাসক্তরা সহজেই ইয়াবা ধরিয়ে দেয়। এর ব্যবহারে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা শারিরিক ও মানসিকভাবে এমন এক জগতে অবস্থান করে যেখানে বেদনা, ক্ষুধা, ক্লান্তি ও অবসাদ থাকে না তেমনি একধরনের অতি মানবিক শক্তি ভর করে।
এ কারনেই দিনদিন এর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
এছাড়া বিক্রেতারাও অন্য মাদকের চেয়ে অধিক লাভের আশায় নিত্য নতুন কৌশলে তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
অভিযানে নানা অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, বহনকারীরা অর্থের লোভে ঝুঁকি নিতেও দ্বিধা করেনা। তারপরও তাদের গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যহত রয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-