ডেস্ক রিপোর্ট – পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১১৬টি উপজেলা পরিষদে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়েছে। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি ১৮ মার্চ ভোটের দিন রেখে ১২৯ উপজেলার তফসিল ঘোষণা করে ইসি। কিন্তু এ ধাপে ভোট ছাড়াই ৪৮ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে ছয়টি উপজেলার সবক’টি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ায় সেখানে ভোট হচ্ছে না। ছয়টি উপজেলার ভোট অন্য ধাপে স্থানান্তর করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে বন্ধ আছে একটি উপজেলার ভোট। এজন্য আজ ১১৬টি উপজেলায় ভোট হচ্ছে।
নির্বাচনে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, আর্মড পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার রয়েছে নির্বাচনী এলাকার শৃঙ্খলা রক্ষায়। তিন পার্বত্য জেলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৩৭৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৪৮ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা সাত হাজার ৩৯টি। ভোটার রয়েছেন এক কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার ছয় জন।
ইসি জানিয়েছে, ভোটের আগে দুই দিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরে দুই দিন মিলিয়ে পাঁচ দিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকছেন। শনিবার পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, আর্মড পুলিশ, আনসার সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। আচরণবিধি প্রতিপালন ও বিশৃঙ্খলা রোধে মাঠে রয়েছেন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।
লাইসেন্সধারীদের অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ থাকবে। সাধারণ কেন্দ্রে ১৪ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৫ থেকে ১৬ জন নিয়োজিত থাকবেন।
এ নির্বাচনে প্রশাসনের পক্ষপাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসি। এ ধরনের অভিযোগে ছয় থানার ওসিকে ভোটের কার্যক্রম থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায় নিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। গতকাল বিকালে ইসি সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সেজন্য কমিশন কঠোর মনোভাব পোষণ করেছেন। কেউ যদি অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ত হয় তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সচিব বলেন, ‘পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে কয়েকটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বদলির প্রস্তাব কমিশন অনুমোদন দিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও গাইবান্ধার ফুলছড়ি। এছাড়া দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, বগুড়ার শিবগঞ্জ, নওগাঁর মান্দা ও বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
ইসি সচিবালয় জানিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ১২৯টি উপজেলায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল থেকে গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার নির্বাচন সরিয়ে তৃতীয় ধাপে এবং দিনাজপুর সদর উপজেলা সরিয়ে চতুর্থ ধাপে নেওয়া হয়েছে। আদালতের রায়ে নাজমুল ইসলাম নামে এক প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ও প্রতীক বরাদ্দের আদেশ থাকায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে ইসি।
এছাড়া ছয়টি উপজেলার সব পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে- নওগাঁও সদর, পাবনা সদর, ফরিদপুর সদর, নোয়াখালীর হাতিয়া এবং চট্টগ্রামের রাউজান ও মিরসরাই। এছাড়াও আরও ১৭টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাতটি উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও ছয়টি উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ওইসব পদেও ভোট হচ্ছে না। বাকিগুলোতে ভোটগ্রহণ হবে।
উল্লেখ্য আগামী ২৪ মার্চ তৃতীয় ধাপের, ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপের ভোট হবে। পঞ্চম ধাপে বাকি উপজেলার ভোট হবে জুনের মাঝামাঝি সময়ে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-