রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে পানি বিষাক্ত

হুমায়ুন কবির জুশান :

নিরাপদ পানির সঙ্কটে উখিয়া। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ঘরে ঘরে চলছে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। জীবনের জন্য বিশুদ্ধ পানি অপরিহার্য কিন্তু উখিয়া রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় বিভিন্নভাবে পাওয়া পানি শতভাগ নিরাপদ নয়। পরিশোধন বা ফুটিয়ে তা খাবার উপযোগী করতে হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ এর আশপাশ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে মারাত্নক ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষ।

নিরাপদ পানির সঙ্কটের জন্য অধিকাংশ মানুষই দেশের রাষ্ট্রীয় সেবা সংস্থার পাশাপাশি এনজিও সংস্থাগুলোকে দুষছে। অনেকের অভিযোগ সংস্থাগুলোর অবহেলা, নজরদারির অভাব, অপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত ও দুর্নীতির কারণে খাবার পানি নিয়ে এত দুশ্চিন্তায় পড়তে হচ্ছে নাগরিকদের।

এছাড়া রোহিঙ্গাদের বর্জ্যে ক্ষতিকর জীবাণুর উপস্থিতির কারণে নাগরিক জীবন হুমকিতে পড়েছে। বালুখালী পানবাজার পেরিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য আরাকান সড়কের রাস্তার ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে পানির ছরা ও খাল। রোহিঙ্গার বিষাক্ত তরল বর্জ্যমিশ্রিত পানি গিয়ে পড়ছে খাল ও বিলে। স্থানীয়রা জানান, এমনিতেই আবর্জনায় পানি পচে নষ্ট হয়ে গেছে, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

এতে রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যাম্পে কর্মরত এক এনজিওকর্মী বলেন, চুলকানি, শ্বাসকষ্টসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন আমাদের অনেকেই। পানি পচে কালো কাদার মতো হয়ে গেছে। ক্যাম্পের ভেতরের দুর্গন্ধে টেকা যায় না।

বাতাসের সঙ্গে ক্যাম্পের তরল বর্জ্যের বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকায়। নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ক্যাম্পের পয়োবর্জ্য ও সেখানকার হাসপাতালের বর্জ্য এসে মিশছে। অনেক জায়গায় পানিনিস্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় পচে ফুলে ফেঁপে উঠছে সেই পানি।

সামনে বর্ষা মৌসুমের আগে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না করলে বিপন্ন হবে এর চারপাশের পরিবেশ। কুতুপালং এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা জয়নাল বলেন, এ অঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি কমে গেছে। ক্যাম্পের বর্জ্যের পানির পাশাপাশি পরিবেশের দুষণ ছড়াচ্ছে। বাতাসের মাধ্যমে তরল বর্জ্য থেকে দুষণ ছড়িয়ে পড়ছে।

ফলে মানুষ শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ নানা শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হচ্ছে। খালগুলোতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ক্যাম্প এলাকার দূষিত বর্জ্যকে পরিবেশের উপযোগী করতে পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এফ্লুয়েন্ট টিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) অবশ্যই থাকতে হবে।

আরও খবর