ডেস্ক রিপোর্ট – নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে হামলায় কমপক্ষে ৪৯ জনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে শনিবার আদালতে হাজির করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে। খবর বিবিসি।
২৮ বছর বয়সী ওই হামলাকারীকে সাদা রংয়ের কয়েদীদের পোশাকে এবং হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আর্ডান বলেন, এই হামলা ছিল একটি উগ্র-সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং প্রধান সন্দেহভাজন হামলাকারীর আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল।
তিনি আরও বলেন, ওই ব্যক্তি ছাড়া আরও দু’জন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। আটকদের কারো বিরুদ্ধে কোন অপরাধের রেকর্ড নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে জুম্মার নামাজরত শতশত মুসুল্লির ওপর ওই হামলা চালায় সশস্ত্র বন্দুকধারী। ওই হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪৮ জন। নিহতদের পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ। তবে বাংলাদেশ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে যে, নিহতদের মধ্যে তাদের নাগরিকরাও রয়েছেন।
হামলার পর থেকেই ক্রাইস্টচার্চে ব্যাপক নিরাপত্তা বিরাজ করছে এবং পুরো দেশজুড়ে সকল মসজিদ বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা বলেছেন, মসজিদের হামলার এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তির পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং একটি লাইসেন্স ছিল। হামলার ঘটনার একদিন পর তিনি জানিয়েছেন, দেশের অস্ত্র আইন বদলানো হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা হামলার শিকার দুটো মসজিদ থেকেই গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে এবং সন্দেহভাজন একজনের গাড়ির ভেতর বিধ্বংসী ডিভাইস পাওয়া গেছে।
জাসিন্দা আর্ডান সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারীর বন্দুকের লাইসেন্স ছিল এবং সেটি ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে নেয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তি বলেছে সে, ২০১৭ সালে ইউরোপ ভ্রমণের পর থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করছিল।
মাথায় স্থাপন করা ক্যামেরা দিয়ে পুরো হামলার ঘটনা সরাসরি ইন্টারনেটে প্রচার করছিল ২৮ বছর বয়সী ওই হামলাকারী। সে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক।
ফুটেজে দেখা যায় সে নারী, পুরুষ ও শিশুদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। বন্দুকধারী এরপর প্রায় ৫ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে আরেকটি মসজিদে গিয়ে হামলা চালায় বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা সাংবাদিকদের বলেছেন, ওই হামলাকারী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ করেছেন এবং নিউজিল্যান্ডে বিক্ষিপ্ত সময় অতিবাহিত করেছেন। তাকে আমি দীর্ঘকালীন বাসিন্দা বলবো না। হামলাকারীর বন্দুকের লাইসেন্স ছিল। আমাকে জানানো হয়েছে যে, সেটি ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ডে গোয়েন্দা সংস্থা উগ্র চরমপন্থিদের বিষয়ে তদন্ত করছে কিন্তু হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি চরমপন্থার জন্য গোয়েন্দা কিংবা পুলিশ কারও নজরেই আসেনি।
ওই ব্যক্তি ২০১৭ সালে ইউরোপ ভ্রমণের পর থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করছিল এবং সেখানকার ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। ২০১৭ সালে স্টকহোমের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতেই সে এই হামলা চালিয়েছে। তিনি জানান, ওই হামলায় ১২ বছর বয়সী এব্বা আকারলান্ড নামের একটি মেয়ে নিহত হয়েছিল। উজবিকিস্তান থেকে আসা এক শরণার্থী ওই হামলা চালিয়েছিল। এব্বার মৃত্যুই তাকে হামলা করতে প্রথম উৎসাহ দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-