আবদুল্লাহ আল আজিজ :
উখিয়ার পর্যটন স্পট সোনার পাড়া রিসোর্টে অনুষ্টিত উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদি বলেছেন, তার রাজনৈতিক জীবনে অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজ এতদুর এসেছেন। নির্বাচন থেকে হেলে পড়লে আর উঠার সম্ভব হয়না।
তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা মার্কার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। যদি সে প্রকৃত পক্ষে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকে। দলের সুবিধা ভোগ করে কেউ যদি মুনাফেকি করে তার রাজনীতির কোন দিন উত্তান হবে না। বরং দিন দিন অবনতি হবে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত বর্ধিত সভায় তিনি বলেন, অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী অনেক ত্যাগ, তিথিক্ষার মাধ্যমে উখিয়া মহিলা কলেজ গড়ে তোলেছিল।
দীর্ঘ দিন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে এলাকার হতদরিদ্র ছাত্রীদের উচ্ছ শিক্ষার পদ সুগম করে দেওয়ায় আজ ঘরে ঘরে উচ্ছ ডিগ্রিধারী মেয়েরা উপার্জন করে বাবা মাকে পারিবারিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন। এমন একটি অধ্যক্ষের পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করে জীবনের শেষ মুহুর্তে এসে জনপ্রতিনিধি হয়ে জনগনের সেবা করার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে আন্তরিক ভাবে মনোনয়ন দিয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের উচিত অসুস্থ এই বয়োবৃদ্ধ নেতাকে সম্মান দেওয়া। অথচ এলাকার কিছু কিছু নেতাকর্মী তা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেনা। এটা উখিয়া আওয়ামীলীগের জন্য অত্যান্ত দুঃখজনক অধ্যায় বলে তিনি মনে করেন।
উপস্থিত ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের প্রতি তিনি উদাত্ব আহবান জানিয়ে বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগকে একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসাবে দাড় করাতে হলে আমি যা বলি তা মানতে হবে।
এসময় উপস্থিত কাউন্সিলাররা সম্মতি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের ১ নাম্বার সিনিয়র সহ সভাপতি আলা উদ্দিনকে তার পদ থেকে পদত্যাগ করার কথা বলেল আলা উদ্দিন তাৎক্ষনিক ভাবে সভামঞ্চে উঠে পদ ত্যাগ করার ঘোষনা দেন।
পরে প্রধান অতিথি আব্দুর রহমান বদি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হক চৌধুরীকে সিনিয়র সহসভাপতি পদায়নে ঘোষনা দিলে করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠে সভা প্রাঙ্গন।
এসময় তিনি অনুরোধ জানান, মঞ্চে উঠে মাহমুদুল হক চৌধুরীকে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। পাশাপাশি আরেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমরুল কায়েস চৌধুরীকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে তাকেও তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করার অনুরুধ জানান। এবং উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল মন্সুর চৌধুরীকেও তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে তার দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক জীবনের একটি কাঙিত দল আওয়ামীলীগের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন।
এসময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হক চৌধুরী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, তিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী যাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে সম্মানিত করেছেন আমিও আমার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে তাকে সম্মান জানাচ্ছি।
মাহমুদুল হক চৌধুরীর অবিশ্বাস্য এমন বক্তব্যের পরপরই উভয়ের মধ্যে পারস্পরিক কুলাকুলি করে একে অপরকে আপন করে নেওয়ার ঘটনায় সমস্ত নেতাকর্মীরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-