ঝুঁকিতে সোনার পাড়ার সাইক্লোন শেল্টারঃ যেকোন সময় ধসে পড়ার আশংকা

পরিত্যক্ত ঘোষণার আট বছর পরও ভেঙ্গে ফেলা হয়নি উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া সাইক্লোন শেল্টারটি। বর্তমানে সেখানে কোন কার্যক্রম না চললেও এই ভবনের চারপাশ ঘিরে রয়েছে দুটি স্কুল, একটি মাদ্রাসা, একটি হেফজখানা, একটি মসজিদ ও খেলার মাঠ। ভবনটির অবস্থা এতটাই নড়বড়ে যেকোন মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে।

আবদুল্লাহ আল আজিজ,কক্সবাজার জার্নাল :

পরিত্যক্ত ঘোষণার আট বছর পরও ভেঙ্গে ফেলা হয়নি উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া সাইক্লোন শেল্টারটি । বর্তমানে সেখানে কোন কার্যক্রম না চললেও এই ভবনের চারপাশ ঘিরে রয়েছে দুটি স্কুল, একটি মাদ্রাসা, একটি হেফজখানা, একটি মসজিদ ও খেলার মাঠ। ভবনটির অবস্থা এতটাই নড়বড়ে যেকোন মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে।

আর ভবনটি ধসে পড়লেই রয়েছে প্রাণনাশের শংকা। এমন মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই ক্লাস করছেন আশেপাশের প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী। ভবনটি ভেঙে ফেলতে কর্তৃপক্ষ একাধিকবার অনুরোধ জানালেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন।

১৯৭৭ সালে উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে সৌদি সরকারের সহযোগিতায় তিনতলা ভবনটি নির্মিত হয়। পরে সেটি দেখভালের দাযিত্ব পান জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিদপ্তর। সেই রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালের অভাবে বর্তমানে পরিত্যক্ত ভবনটি।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, পরিত্যক্ত সাইক্লোন শেল্টারটি ঘেঁষে পশ্চিমে সোনারপাড়া জামে মসজিদ ও পূর্বে পরিত্যক্ত ভবনের সাথে লাগোয়া সোনারপাড়া দাখিল মাদ্রাসা। জরাজীর্ণ সেন্টারটির দক্ষিণে সোনারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হেফজখানা, উত্তরে খেলার মাঠ ‍ঘেঁষে সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান। জরাজীর্ণ ভবনটির নিচ দিয়েই যাতায়াত করে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ভবনটির ছাদের পলেস্তারা খসে গেছে। বিমে ফাটল ধরেছে। আস্তর ভেঙে গেছে। নানা জায়গায় বেরিয়ে গেছে লোহার রড। ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনেই খেলাধূলা করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে সোনারপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানা রহমত উল্লাহ কক্সবাজার জার্নালকে জানান, পরিত্যক্ত ভবনটি পাশেই মসজিদের ওযুখানা। কিন্তু ভবনটি এতই ঝুঁকিপূর্ণ সবসময় ভয়ে থাকে মুসল্লিরা। তাছাড়া পরিত্যক্ত ভবনটি জুয়াড়ি ও মাদকসেবীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।

জালিয়া পালং হাসিমুখ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব কাউসার আহমেদ কক্সবাজার জার্নালকে জানান, পরিত্যক্ত ভবনের পাদদেশে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত খেলায় মেতে উঠে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সে কক্সবাজার জার্নালকে জানায়, এখানে আসতে শিক্ষকরা নিষেধ করেন। কিন্তু শিক্ষকদের চোখে ফাঁকি দিয়ে তারা প্রতিদিনিই এখানে তারা খেলায় মেতে উঠে। এছাড়াও এলাকার সাধারণ মানুষ,মুসল্লী, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ভবনের পাশ দিয়ে চলাফেরা করে। যা খুব ঝুঁকিপূর্ণ।

সোনারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জাহানারা বেগম কক্সবাজার জার্নালকে জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা খেলার জন্য প্রায়সময় ওই ভবনে চলে যায়। এ নিয়ে সবসময় আতঙ্কে থাকতে হয়।

সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিউল করিম কক্সবাজার জার্নালকে জানান, জরাজীর্ণ সাইক্লোন শেল্টারটির নিচ দিয়েই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে হয়। আতঙ্ক নিয়েই চলাচল করতে হয়। কারণ অতীতে সেখান দিয়ে চলাচলের সময় ভবনের ছাদ ভেঙ্গে পড়ে অনেক শিক্ষার্থীর মাথা ফেটেছে।

সোনারপাড়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এস এম ছৈয়দ আলম কক্সবাজার জার্নালকে জানান, ৮ বছর আগে সাইক্লোন শেল্টারটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এরপর থেকে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য বহুবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোন ব্যবস্থা নেননি।

জালিয়াপালং ইউপির ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য রফিক উদ্দিন জানান, ভবনটির অবস্থা অত্যন্ত বেহাল। ওই ভবনের সাথে লাগোয়া মাঠেই এলাকার নানা সামাজিক আচার অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু সবসময় ভয় কাজ করে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব নিকারুজ্জামান চৌধুরী কক্সবাজার জার্নালকে জানান, পরিত্যক্ত ভবনটির তদারকি সংস্থার পক্ষ থেকে আবেদন পেলে এটি ভেঙ্গে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।

আরও খবর