বিশেষ প্রতিবেদক :
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবায় এগিয়ে আসা এনজিওদের ব্যবহৃত যানবাহন ও ক্যাম্পে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি এবং নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ কাজে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে গত ১৮ মাসে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটির পুরো অংশে খানা খন্দক ও ছোট বড় গর্তে একাকার হয়ে পড়েছে। মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারণে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছে প্রায় ২৫ জন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), সড়ক ও জনপদ বিভাগের যৌথ অর্থায়নে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের কাজ শুরু হওয়ায় এতদ্াঞ্চলের মানুষ স্বস্তির নিশ^াস ফেলেছে। তবে যাত্রী সাধারণ ও যানবাহন মালিক শ্রমিকের দাবী সড়ক মেরামত ও সম্প্রসারণের নামে কাজের ধীরগতির মাধ্যমে বৃহত্তর জনসাধারণকে যেন আর দূর্ভোগের শিকার হতে না হয়।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ব্যস্ততম এ সড়কটির দ্রুত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্মাণাধীন ৫০ কিলোমিটার সড়ককে ২টি প্যাকেজে ভাগ করেছে। তৎমধ্যে প্রথম প্যাকেজ ১শত ২২ কোটি টাকা চুক্তি সাপেক্ষে কক্সবাজার লিংক রোড থেকে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে টিসিসিএল এন্ড মেসার্স জামিল ইকবাল লিঃ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে।
২য় প্যাকেজ ১শত ৫৪ কোটি টাকা চুক্তি সাপেক্ষে উখিয়ার ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন থেকে টেকনাফের উনচিপ্রাং পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে তাহের ব্রাদার্স লিঃ, হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিঃ ও সালেহ আহমদ বাবুল নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। সম্প্রতি উখিয়ার রাজাপালং মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার কাজের সাইট ম্যাপ পরিদর্শণ করেন এডিবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিঃ স্যাকসিন সেন এর নেতৃত্বে এডিবির বাংলাদেশস্থ কান্ট্রি ডিরেক্টর মিঃ মংমং প্রকাশ, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সোয়েব আহমদ, সুপারন্টেন প্রকৌশলী, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুজিবুর রহমানসহ এডিবির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, সড়কের উভয় দিকে ৩ ফুট করে ৬ ফুট এবং জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৪৫ ফুট সড়ক সম্প্রসারণ করা হবে। তিনি বলেন, নির্মাণ কাজের গুনগতমান ও টেকসই উন্নয়ন কাজের তদারকি করার জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়মিত উন্নয়ন কাজ তদারকি করবেন। যেহেতু কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের যে দুটি প্যাকেজে ৫০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের আওতায় আনা হয়েছে তা অতিসম্প্রতি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছিল বিধায় প্রথম ধাপে ৫০ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হলে পরবর্তীতে সড়কের বাকী অংশগুলোর নির্মাণ ও সম্প্রসারণের আওতায় আনা হবে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, কক্সবাজার টেকনাফ সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কাজের জন্য এডিবি ৫৮০ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-