ডেস্ক রিপোর্ট- এবার তিন ক্যাটাগরিতে মাদকের গড়ফাদারদের তালিকা করছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এই তালিকা তৈরি হলে শিগগিরই মাঠে নামবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে আগের চেয়ে এবারের মাদকবিরোধী অভিযান আরও জোরালো ও কৌশলী হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, নতুন তালিকার মধ্যে একই ব্যক্তির নাম প্রতিটি তালিকায় থাকলে তাকে ‘এ’ ক্যাটাগরি, দু’টি তালিকায় থাকলে ‘বি’ ক্যাটাগরি আর অন্যদের ‘সি’ ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মাদক কারবারিদের তালিকা তিন মাস অন্তর হালনাগাদ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হবে।
তালিকা হাতে পাওয়ার পর আগামী মে মাসের আগেই দেশব্যাপী মাদক নির্মূলে অভিযান শুরু হবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরও পিছিয়ে থাকবে না এবারের অভিযানে।
জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘নতুন আইন হাতে পাওয়ার পর মাদক নির্মূলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে। নতুন করে তালিকা হালনাগাদসহ যাচাই-বাছাইয়ের কাজও চলছে। শিগগিরই মাদক নির্মূলে নতুন অভিযানের ঘোষণা আসতে পারে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নিন্দেশনা থাকবে।’
সূত্র জানায়, গত বছর র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে ২৬১ জন মাদক কারবারি। তার বেশিরভাগই তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ছিল। এবার হালনাগাদের সময় তাদের নাম বাদ দিয়ে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। মাদকের গড়ফাদারদের অনেকেই গত বছরের অভিযানে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল, এমন অভিযোগ থাকলেও এবার যে অভিযান আসছে, তাতে কারোরই রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই বলেও পুলিশ সূত্র দাবি করে।
এবারের অভিযানে মাদক সরবরাহকারী, ডিলার, খুচরা বিক্রেতা, সেবনকারী, পৃষ্ঠপোষকতাকারী, সহায়তাকারীসবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। মাদকের প্রশ্নে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। জামিন প্রশ্নেও নতুন আইন অনুসরণ করে আদালতের প্রতি আইন মন্ত্রণালয়ের নিন্দেশনা থাকবে বলেও জানা গেছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এবারের অভিযান হবে খুব কঠোর। সেটা আঁচ করতে পেরে মাদকের সঙ্গে জড়িত অনেকেই আত্মসমর্পণ করতে শুরু করেছে। কেউ কেউ আত্মসমর্পণ করবে তারও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ’ তবে এখন পর্যন্ত ঠিক কতজন আত্মসমর্পণ করেছে, তার হিসেব দিতে পারেননি এই কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবারের অভিযান শুরুর আগে দেশের একটি জেলা ও সাতটি উপজেলাকে মাদকমুক্ত করার ঘোষণা আসতে পারে। উপজেলাগুলো হলো, ঢাকা বিভাগের নবাবগঞ্জ উপজেলা, চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা, রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা, খুলনা বিভাগের নড়াইল সদর, কালিয়া, লোহাগড়া ও নড়াগাতি উপজেলা, সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলা, রাজশাহীর মোহনপুর, বরিশালের ঝালকাঠি সদর এবং ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুরের নকলা উপজেলা।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সুরক্ষা ও সেবা) আতিকুল হক বলেন, ‘দেশের প্রতিটি বিভাগের একটি করে উপজেলা ও খুলনা বিভাগের নড়াইল জেলাকে মাদকমুক্ত ঘোষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ এ বছর মাদকমুক্ত এসব উপজেলা বাস্তবায়নের পর পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য উপজেলাকেও এর আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও তিনি জানান।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-