বিশেষ প্রতিবেদক:
‘এমপি আবদুর রহমান বদিকে আমার বোন দিয়েছি, তাকে আমার রাজনৈতিক অধিকার দিই নাই। তার সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে যা পরিবারেই সীমাবদ্ধ। দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দিলে সবাইকে সাথে নিয়ে আমি কাজ করবো’।
গত ১০ আগস্ট উখিয়ায় একটি সভায় উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধার সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর এমন ঘোষনার পর নতুন করে টেনশনে পড়েছেন কক্সবাজার-৪ উখিয়া-টেকনাফ আসনের দেশজুড়ে আলোচিত সাংসদ আবদুর রহমান বদি। শ্যালক ছাড়াও বদির কাটা হয়ে দাড়িয়েছে আওয়ামীলীগের আরও হাফ ডজন প্রার্থী।
এসব নতুন মুখ ইতোমধ্যে তাদের শক্ত অবস্থান জানান দিচ্ছে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগের মাধ্যমে। জনগণের সাথে সম্পৃক্ততা আছে এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা উখিয়া-টেকনাফের নির্বাচনী মাঠে পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান এমপি আবদুর রহমান বদিকে নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে। যার ফলে সাংসদ আবদুর রহমান বদি’র মনোনয় নিয়ে ধোয়াশা দেখা দিয়েছে। বিএনপিতে একক প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরীর পক্ষে নেতাকর্মীরা একাট্টা। মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী ঘরনার এসব সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে দলীয় লবিং ও ঢাকা কেন্দ্রীক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।
ইতোমধ্যে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে গিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করছেন অনেক নতুন মুখ। এ নতুন-পুরাতন মুখদের নিয়ে আওয়ামী পরিবারে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ। ভোটারদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কমতি নেই।
উখিয়া-টেকনাফ আসনের বর্তমান সাংসদ আবদুর রহমান বদি। আওয়ামী লীগের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত এ সাংসদকে কেন্দ্র করে বিব্রত ও দ্বিধা-বিভক্ত উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রার্থী স্ব-স্ব অবস্থান থেকে আসন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন।
এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উখিয়া সদর রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো: শফিউল আলমের ছোট ভাই হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, বাংলাদেশ তাতীঁলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরি সভাপতি সাধনা দাশ গুপ্তা, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর ও জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ও উখিয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার।
অন্যদিকে সাবেক সংসদ সদস্য ও কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী একমাত্র ভরসা বিএনপির। এ আসনটিতে পরীক্ষিত একক প্রার্থী থাকায় অনেকটা ফুঁরফুরে মেজাজে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
২০০৮ সালে নির্বাচনের পূর্ববর্তী এমপি শাহজাহান চৌধুরীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন আবদুর রহমান বদি।
গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় জাতীয় পার্টির তাহা ইয়াহিয়াকে পরাজিত করে। তবে এ নির্বাচনে তাহা ইয়াহিয়া সকাল ১০টায় নির্বাচন বর্জন করে । টানা দুই বারের এমপি আবদুর রহমান বদির বিতর্কিত কার্যক্রমে বারবার দেশ ব্যাপী আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে।
তাঁর হাতে প্রহৃত হয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, আইনজীবি, প্রকৌশলী, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনৈতিক কর্মীসহ নানা শ্রেণির পেশার মানুষ।
আবদুর রহমান বদি ২০০৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার মাত্র ২৩ দিনের মাথায় উপজেলা নির্বাচনের দিন টেকনাফে একটি ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার ব্যাংক কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিনকে পিটিয়ে আলোচনায় আসেন। এরপর বন বিভাগের কর্মকর্তা মুজিবুল হককে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। তাঁর হাতে মার খেয়েছেন টেকনাফের মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফা। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রবীণ আইনজীবি রাখাল মিত্র, শিক্ষক আব্দুল জলিল ও পুলিন দে।
এছাড়াও আবদুর রহমান বদির হাতে নাজেহাল হয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম ও তৎকালীন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলামুর রহমান, উখিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ, শাপলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল মনজুর, টেকনাফ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিক মিয়া।
মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকায়ও বারবার উঠে এসেছে সাংসদ আবদুর রহমান বদিসহ তাঁর নিকটাতœীয়দের নাম। সর্বশেষ দূর্নীতির অভিযোগে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মামলায় কারাগারেও যেতে হয় তাঁকে। অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে তাঁকে তিন বছরের সাজা দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত।
২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর এই মামলায় ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর তাকে কিছুদিন কারাগারে থাকতে হয়েছিল। পরে উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন পদে না থাকলেও আবদুর রহমান বদিকে নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। তার নিজের এলাকা টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা এই এমপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁকে বাদ দিয়ে তাঁরা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। একই অবস্থা এ সংসদীয় আসনের উখিয়া উপজেলায়ও। এখানেও তাঁর বিপক্ষে একটি শক্তিশালী গ্রæপ সক্রিয় রয়েছে। এ অবস্থায় আগামী নির্বাচনে আবারও দলীয় মনোনয়ন পেতে আবদুর রহমান বদিকে দলের ভেতরেই বিরোধীতা ও প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হবে বলে নেতাকর্মীরা মনে করছেন।
বর্তমান এমপি আবদুর রহমান বদি অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে আনা বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, একটি মহল সব সময়ই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কিন্তু তারা কোনদিন সফল হবে না। তিনি আরো বলেন, এলাকায় তিনি অনেক উন্নয়ন কাজ করেছেন। দলের নেতাকর্মী সহ এলাকার সাধারণ মানুষ তাঁর পক্ষেই রয়েছে।
নির্বাচনী বিষয় নিয়ে কথা হয়,নউখিয়া-টেকনাফের সাবেক সাংসদ ও কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সাথে।
তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এ নির্বাচন কমিশনার সরকারের আজ্ঞাবহ। তবে ভালো নির্বাচন দিলে উখিয়া-টেকনাফের মানুষ আমাকে স্বতস্ফুর্ত ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন ইনশাল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন চলছে। স্থানীয় এমপি চাইলে এ মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে পারবেন। আওয়ামী লীগের দলীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদি দেশকে ইয়াবার বাজার বানিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক, ইয়াবা ও চোরাচালানের সম্পৃক্ততার অভিযোগও রয়েছে। দলীয় সরকারের আমলেই দূর্নীতির মামলায় তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তাঁকে দিয়ে দেশের মঙ্গল ও উন্নয়ন সম্ভব নয়। আগামী নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারলে এই বিতর্কিত সাংসদের পরাজয় শতভাগ। এতে কোন সন্দেহ নেই। উখিয়া-টেকনাফের মানুষ আমার সাথে আছে, অতীতেও ছিলো।
অপরদিকে উখিয়া-টেকনাফ আসনে ১৯৯৬ সালে জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন তৎকালীন জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী এড. একেএম শাহজালাল চৌধুরী। তিনি দাঁড়িপাল্লা নিয়ে তাঁর আপন বড় ভাই শাহজাহান চৌধুরীর (ধানের শীষ প্রতীক) সাথে নির্বাচনে প্রার্থীতা করলেও হেভিওয়েট দুই ভাইকে পরাজয় করে নির্বাচিত হয়েছিল বর্তমান টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী।
বর্তমানে জামায়াত ইসলামীর পক্ষে উখিয়া-টেকনাফ আসনে শাহজালাল চৌধুরী নির্বাচন করবে না এমনটা নিশ্চিত করেছেন তাঁদের পরিবার। সাবেক উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজালাল চৌধুরী এখন অনেকটা রাজনীতি থেকে দূরে অবস্থান করছেন। তবে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত ইসলামীর সভাপতি মুহাম্মদ শাহজাহানের বাড়ি উখিয়া হওয়ায় তিনিও নির্বাচনে উখিয়া-টেকনাফ আসন থেকে প্রার্থী হবেন বলে আভাস দিয়েছেন জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্র।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ আলম চৌধুরী বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির জনপ্রিয়তা শূণ্যের কোঠায় পৌঁছেছে। তাকে নিয়ে দলে অনেক বিতর্ক আছে। দেশে ইয়াবা আসার ক্ষেত্রে একমাত্র সেই দায়ী। দেশ এখন ইয়াবার বাজারে চেয়ে গেছে। মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের জন্য বিতর্কিত এই সাংসদকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য আমার কঠোর অবস্থান থাকবে। তাকে মনোনয়ন দিলে দেশ রসাতলে যাবে। সমাজের বড় ধরনের ক্ষতি করেছেন এই সংসদ সদস্য। নেত্রীর প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে এ আসনে দলের জন্য নিবেদীত প্রাণ একজন ভালো ও যোগ্য মানুষকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য।
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সাংসদ ও বিজ্ঞ পার্লামেন্টেরিয়ান অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীও এবার মনোনয়ন লাভের জন্য চেষ্টা, তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তিনি বর্তমানে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘঠিত করে দলের মধ্যে তাঁর অবস্থান সুসংহত করে রেখেছেন। তাঁকে নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে দলাদলি ও কোন বিভেদ নেই।
এই বর্ষীয়ান ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ দেশে ১/১১ এর সময় প্রকাশ্যে মাঠে ঘুরে বেড়িয়ে অবস্থান করলেও কোন কালিমা না থাকায় তাঁকে ফখরুদ্দিন, মঈন উদ্দিনের তত্ত¡াবধায়ক সরকার কোন ধরনের আচড় লাগাতে পারেনি। তাঁর বিরুদ্ধে নেই কোন অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ।
তিনি ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে উখিয়া-টেকনাফে উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত করেছিলেন। এটা সাধারণ মানুষের কাছে এখনো দৃশ্যমান।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, মনোনয়নের আশায় কোন ধরণের লবিং, তদবির করছেন না। নেত্রী যদি যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেন তাহলে তিনি নির্বাচন করবেন অবশ্যই। বর্তমান সাংসদ আবদুর রহমান বদির ব্যাপারে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে বলেন, তাঁর সম্পর্কে শুধুমাত্র উখিয়া-টেকনাফের মানুষ নয়, সারাদেশের মানুষ জানে।
আমি বর্তমানে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার পরেও বিগত ৯ বৎসর ধরে আমার সাথে এবং দলীয় কোন কার্যক্রমের সাথে তাঁর সম্পৃক্ততা নেই। তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের করা একাধিক মামলার কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাঁর কোন সম্পর্ক নেই। তাছাড়া তিনি ভোটের সুবিধার জন্য দল করছেন। তাঁর কর্মকান্ড সব দলের বিরুদ্ধে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিজের পছন্দের প্রার্থী দিয়েছেন এই এমপি।
অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরও বলেন, আবদুর রহমান বদি সরকারি টাকায় একটি জেটি করেছেন অথচ এটি তাঁর পারিবারিক ঘাট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই ঘাট দিয়ে চোরাচালানিরা সুবিধা নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে তাঁর জনপ্রিয়তা নেই।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নতুন মুখদের মধ্যে মাঠে সুদৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। তিনি আতœীয়তার দিক থেকে বর্তমান সাংসদ আবদুর রহমান বদির শ্যালক হলেও রাজনৈতিক অবস্থান এবং জনপ্রিয়তায় নিজেকে সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয় প্রত্যাশী হিসেবে যোগ্য মনে করছেন।
এছাড়াও সম্প্রতি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত ইউ.পি চেয়ারম্যান ও তৃণমুলের নেতাকর্মীদের নিয়ে গণভবনে প্রতিনিধি সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী সুনজরে আসেন জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী।
তিনি উখিয়া উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম নুরুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ ঠাÐা মিয়ার সন্তান হওয়ায় উখিয়া-টেকনাফে তাঁর রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তার পাশাপাশি বিশাল ভোট ব্যাংক।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলেও জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, আমি উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে আছি। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন চাইব। দলের ত্যাগী নেতা হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দিলে জয়ী হবো ইনশাল্লাহ।
এক প্রশ্নের জবাবে এমপি বদি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান সাংসদ বদি কেবল আমার ভগ্নিপতি। তার সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে যা পরিবারেই সীমাবদ্ধ। কাউকে আমি আমার রাজনৈতিক অধিকার দিই নাই। দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দিলে সবাইকে সাথে নিয়ে আমি কাজ করবো।
মনোনয়ন প্রত্যাশী নতুন মুখ বর্তমান সরকারের মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো: শফিউল আলমের ছোট ভাই হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শাহ আলম আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য মাঠে ময়দানে কাজ করে যাচ্ছেন।
নম্র ভদ্র ও মিষ্টভাষী এই ব্যক্তি জনগণকে সহজেই আপন করে নিতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে দিয়েছে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে। তাঁর সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে সুসম্পর্ক থাকায় তাঁর মনোনয়নের ব্যাপারে দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ শাহ আলম বলেন, তিনি দলীয় মনোনয়ন পেলে উখিয়া-টেকনাফ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা একযোগে কাজ করবেন বলে তিনি আশাবাদী।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও উখিয়া উপজেলা সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার দীর্ঘদিন বৎসর রাজনৈতিক মাঠে রয়েছে। ক্লিন ইমেজ ও উদার মনের এই নেতাও আগামী নির্বাচনে মহাজোট থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে নেমেছে।
অপর প্রার্থী বাংলাদেশ তাঁতীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরি সভাপতি সাধনা দাশ গুপ্তা নিজেকে উখিয়া-টেকনাফ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। উখিয়ায় সাংবাদিকদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় নিজেকে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি মাঠে কাজ করছেন বলে জানান। দল থেকে মনোনয়ন পেলে উখিয়া-টেকনাফকে মাদকমুক্ত করে যুব সমাজকে নিয়ে শিল্পোয়ন করার কথাও তিনি জানান
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-