টেকনাফ প্রতিনিধি :
কোরবানি ঈদ সামনে রেখে সাগর ডিঙিয়ে মিয়ানমার থেকে আসছে প্রচুর গরু-মহিষ। ট্রলারে করে কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডোর হয়ে প্রতিদিন আসতে শুরু করেছে এসব পশু। ভালো দামও পাচ্ছেন আমদানিকারকরা।
রোববার সকালে শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে গিয়ে দেখা যায়, অনেক পশু মাঠে রাখা হয়েছে। সেগুলো বেচাকেনা হচ্ছে। এই দিন মিয়ানমার থেকে পাঁচটি ট্রলারে এক হাজার ২২০টি গবাদিপশু এসেছে। এর মধ্যে এক হাজার ৫৩টি গরু, বাকিগুলো মহিষ। আগের দিন শনিবার মিয়ানমার থেকে ছোট-বড় পাঁচটি ট্রলারে ৬৭৭টি পশু আমদানি করেন ব্যবসায়ী মো. ইসলাম, মো. শফিক, মনিরুজ্জামান, হাসান আহমেদ ও মো. কবির। এগুলোর মধ্যে ৪০৭টি গরু ও ২৭০টি মহিষ।
আমদানিকারক মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, কোরবানিকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে প্রচুর পশু আসছে। এবার দামও কিছুটা বাড়তি। আমার কাছে আসা ৭৮টি পশুর মধ্যে ৪৫টি গরু। এসব পশু ৫০ হাজার টাকা করে বেপারীদের কাছে বিক্রি করেছি। আগে এইসব গরু বিক্রি করছিলাম প্রতিটি ৪০ হাজার টাকা করে। কোরবানির আগে আরও পাঁচ শতাধিক পশু আমদানি করার কথা রয়েছে।
টেকনাফ শুল্ক স্টেশন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কোরবানির ঈদের বাকি মাত্র ১০ দিন। পশু আমদানি রাজস্ব আদায়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। দেশে পশুর চাহিদা পূরণে আমদানি অব্যাহত রয়েছে। চলতি আগস্ট মাসের ১২ দিনে ৫ হাজার ৫৫৪টি পশু আমদানি করা হয় মিয়ানমার থেকে। এর মধ্যে গরু ৪ হাজার ৭৫টি, মহিষ ১ হাজার ৪৭৯টি। যার বিপরীতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ২৭ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তাছাড়া জুলাই মাসে এসেছে ৬ হাজার ১০৬টি পশু। ঈদ সামনে রেখে আমরা ব্যবসায়ীদের মিয়ানমার থেকে আরও বেশি পশু আনতে সহযোগিতা করছি।
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা পশু আমদানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুল্লাহ মনির জানান, শুরুতে গত বছরের তুলনায় মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি কম হয়েছে। তবে কোরবানি সামনে রেখে আমদানিকারকরা পশু আমদানি বাড়াচ্ছেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি হলেও করিডোরে নেই কোনো ব্যাংক ও কাস্টম অফিস। নেই পশু রাখার সুব্যবস্থা। এ জন্য নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমদানিকারক ও পাইকারদের।
কথা হয় চট্রগ্রামের গরু ব্যবসায়ী মো. আমিনের সঙ্গে। তিনি জানান, গত বছরের মতো এবারও টেকনাফ থেকে গরু কেনার জন্য এসেছি। তবে এ বছর ব্যবসা ভালো হবে না মনে হয়। কেননা, এ বছর শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে গরুর দাম চড়া। গত বছর যে গরু ৬০ হাজার টাকা ছিল, এ বছর সে গরুর দাম ৯০ হাজার টাকার বেশি।
গরু ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, কোরবানি উপলক্ষে পশু আমদানি ক্রমাগত বাড়ছে। যেসব পশু মিয়ানমার থেকে আনা হচ্ছে, সেগুলো ব্যবসায়ীরা কিনে এখন থেকে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ওসি রণজিত কুমার বড়ূয়া বলেন, পশু সরবরাহের ক্ষেত্রে পথে যেন কোনো রকম চাঁদাবাজি না হয়, তা নজরে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি গরু আসার সময় ট্রলারে যাতে অস্ত্র ও মাদক না আসতে পারে, সে দিকটি বিবেচনা করে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-