কক্সবাজারে কোরবানির পশুর সংকট হবে না, দামও কম হতে পারে!

মাহাবুবুর রহমান :
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি মাসের ২২ অথবা ২৩ আগষ্ট প্রবিত্র ঈদুল আযহা।আর ঈদুল আযহার প্রধান বৈশিষ্ট্য কোরবানি। আর এই কোরবানির প্রধান উপকরণ গরু।

প্রতি বছর কোরবানি ঈদের সময় গরুর দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে থাকে ব্যাপক আগ্রহ। আর কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে অনেকে কয়েক মাস আগে থেকে নিজস্ব বাসাবাড়িতে বা নানান উপায়ে গরুমোটাতাজা করে থাকে। উদ্দেশ্য কোরবানীর ঈদের সময় বাজারে বিক্রি করে কিছু বাড়তি আয় করা। এবারে জেলার বিভিন্ন স্থানে সে রকম আয়োজনের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

অন্যদিকে কক্সবাজার সহ সারা দেশে কোরবানীর ঈদের গরুর একটি বড় অংশ জোগান নিয়ে থাকে মায়ানমারের গরু। এবারে চলতি কয়েক মাসে মায়ানমার থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক গরু এসেছে বলে জানান টেকনাফ কাস্টম কর্মকর্তারা। তবে হঠাৎ করে দাম কমে যাওয়ার ফলে গরু আসা একটু কমেছে। তবে সেটা আবারো বাড়তে পারে। তবে সার্বিক ভাবে এবারের কোরবানীর ঈদে গরুর দাম কিছুটা কম হতে পারে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

টেকনাফ কাস্টম কর্মকর্তা নুরুল মোস্তফা জানান,চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত টেকনাফ স্থল বন্ধর দিয়ে গরু এসেছে ৬৪ হাজার ১৬৭ টি। আর মহিষ এসেছে ১১ হাজার ৬০২ টি, আর আমদানী করা পশু থেকে রাজস্ব এসেছে ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে জানুয়ারী মাসে গরু এসেছে৭,৬৯৭ টি, মহিষ ৫৭৮ টি ফেব্রুয়ারীতে গরু এসেছে ৭৮২১ টি আর মহিষ এসেছে ৮১৮ টি,মার্চ মাসে গরু এসেছে ১১ হাজার ৬৬৫ টি আর মহিষ ১৫১৫ টি, এপ্রিল মাসে গরু এসেছে ১১ হাজার ৯২৫ টি আর মহিষ এসেছে ১৯৫৭ টি, মে মাসে গরু এসেছে ১২ হাজার ৭৪০ টি আর মহিষ ২৩৭২ টি, জুন মাসে গরু ৭৭১৮ টি আর মহিষ ২৮৫৭ টি,জুলাই মাসে ৪৬০১ টি আর মহিষ ১৫০৫ টি। এ সময় তিনি বলেন চলতি বছরে গরু আসার পরিমান অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। তবে গত ২ মাসে কম গরু এসেছে শুনাযাচ্ছে দেশে গরুর দাম কমে যাচ্ছে তাই ব্যবসায়িরা গরু আনছে না।

এদিকে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলা সহ সর্বত্র দেশীয় পদ্ধতি এবং বিভিন্ন ভাবে খামারে গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়া এলাকায় রশিদ আহামদ নামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, আমার নিজের বাসাতেই ৩ টি গরু আছে এবারের কোরবানীর ঈদে বিক্রি করার জন্য তাছাড়া আমরা কয়েক জন মিলে ইতি মধ্যে আরো ১০ টি গরু কিনেছি সেগুলো এখন দেশির ভাবে মোটাতাজা করছি,আর সেভাবে পশুখাদ্যের দাম তাতে গরু রাখতে খুব সমস্যা হচ্ছে আর সব চেয়ে বড় চিন্তা হচ্ছে গরু চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়।

তিনি বলেন চুরি নয় অনেকটা ডাকাতি সে জন্য আমার পালা করে রাতজেগে পাহারা দি, আর দিনের বেলায়ও কড়া পাহারায় ঘাষ খাওয়াতে নিয়ে যাই। পিএমখালী ইউনিয়নের ঘাট কুলিয়াপাড়া এলাকার শহিদুল ইসলাম বলেন,আমার বাড়ি নিজস্ব ২ টি গরু আছে বাজারে বিক্রির জন্য এখন চিন্তা করছি আরো কয়েকটি গরু কিনবো কিন্তু ইদানিং শুনা যাচ্ছে চলতি বছর গরুর দাম কম হবে সে জন্য গরু কিনবো কিনা সেটানিয়ে চিন্তায় আছি।

আলাপ কালে পিএমখালী ইউপি সদস্য নুরুল হুদা বলেন,অনেক ব্যবসায়ির সাথে কথা বলে জানা গেছে চলতি বছর গরু সস্তা হতে পারে সে জন্য এখন থেকে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছে। আর গত বছরও গরুর দাম অনেক কম ছিল। চকরিয়া উপজেলার হারবাং এলাকার চাষি নজরুল ইসলাম বলেন,আমাদের এলাকাতে অনেকে গরু মোটাতাজা করছে অনেকে নাইক্ষংছড়ি,বান্দরবান,খাগড়াছড়ি থেকে গরু এনেছে এছাড়া টেকনাফ থেকেও বেশির ভাগ গরু এনেছে। সব মিলিয়ে চকরিয়াতে গরুর মজুদ অনেক বেশি তবে সবার মনে একটি আশংকা আছে সেটা হচ্ছে গরুর দাম পড়ে যেতে পারে।

এদিকে কক্সবাজার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, কক্সবাজারে কোরবানীর পশুর চাহিদা ৮৩ থেকে ৮৫ হাজার গবাদিপশু। আর আমাদের কক্সবাজারে প্রায় ২০১৪ পরিবার কোরবানীর জন্য গরু মোটাতাজা করছে।এছাড়া বাইরে থেকেও পশু আসে। আর আমার মতে কোরবানীর পশু সংকট হওয়ার কোন কারন নেই।এছাড়া কোরবানীর পশুর হাটে বরাবরের মত আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করবে।

আরও খবর