হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া
গ্রামাঞ্চলে ধান-চাল সংরক্ষণে বাঁশের তৈরি বড় পাত্রের নাম গোলা। বাঁশ দিয়ে এ গোলা তৈরি করা হয়।
গ্রামের গৃহস্থা পরিবার গুলো পুরো বছরের খাদ্যেও সংস্থানে গোলার ধান সংরক্ষণ করে থাকেন। প্রতি ধানের মৌসুমে ধান মারাকাটি করে শুকিয়ে গোলাজাত করা হয়ে থাকে। প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে পূনরায় রোদে শুকিয়ে ধান ভেঙ্গে চাউলে রুপান্তর করা হয়। তবে বাজারে বিক্রি করার সময় নতুন করে আবার ধান শুকানোর আর প্রয়োজন পড়ে না।
এশিয়া মহাদেশে অন্যান্য ১৯ টি দেশের সাথে বাংলাদেশেও মানুষের প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত। চাল রান্নার পর হয় ভাত। গোলা থেকে ধান নামিয়ে তা মেশিনে ভাঙ্গিয়ে তুলনামূলক অধিক ছোট পাত্রে রাখা হয় চাল।
আর সেখান থেকেই চাল নিয়ে ভাত রান্না করা হয়। গোলা ভর্তি ধান না থাকলে এক সময় গ্রামের গৃহস্থা পরিবার সেই বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে পর্যন্ত দিতে আগ্রহী হতো না। এ কথা এখনো গ্রামাঞ্চলের মানুষের মুখে মুখে ঘুরে-ফিরে। যাতে নষ্ট না হয় সে কারণে গোলার ধান রেখে সেই গোলার মুখ মাটির লেপ দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়।
আবার টাকার প্রয়োজন হলে গোলা থেকে ধান নিয়ে বাজারে বিক্রি করা হতো। সেই সময়ের সমাজ ব্যবস্থা এখনকার মতো এত উন্নত ছিল না। তখন চোর-ডাকাতের ভয়ে ধানের গোলার ভিতর স্বর্ণ ও টাকা পয়সা সংরক্ষণ করে রাখা হতো।
বর্তমান সময়ের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা মাছ ধরার লুই ও ধান সংরক্ষণে রাখা গোলা আর বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্যে জুইর কী তা চিনে না। সময়ের বিবর্তনে তা আজ হারিয়ে গেছে। অথচ আমরা ছিলাম মাছে-ভাতে ভাঙ্গালি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-