আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির নেতার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবারের এই ঘোষণার ফলে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদেও তার নয় বছরের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। দলের অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মুখে এই সিদ্ধান্ত নেন ট্রুডো। রাজধানী অটোয়ায় নিজের বাসভবন রিডো কটেজের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ট্রুডো বলেন, আমি আমার দল ও গভর্নরকে জানিয়েছি যে, আমি লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার উত্তরসূরি নির্বাচিত হলে আমি দায়িত্ব হস্তান্তর করব।
তিনি আরও বলেন, নতুন নেতা খুঁজে পেতে এবং কানাডার আসন্ন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে আমি পার্লামেন্টের অধিবেশন আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেছি।
কানাডার আইন অনুসারে, এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন দল তার নেতা নির্বাচনের জন্য ৯০ দিন সময় পায়।
ট্রুডো দীর্ঘদিন ধরে দলের নেতাদের চাপের মুখে ছিলেন। সাম্প্রতিক জরিপে বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় লিবারেল পার্টির ভেতরে তার অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। এ বছর অক্টোবরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা এবং তার আগে নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণ করতে হবে।
ট্রুডো সাময়িকভাবে প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করবেন যতক্ষণ না তার উত্তরসূরি নির্বাচিত হয়। তবে এই প্রক্রিয়া কয়েকদিনের মধ্যে শেষ হতে পারে, আবার কয়েক মাসও লাগতে পারে।
জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বে কানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক অবস্থান উভয়ই উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। কয়েক মাস আগে ট্রুডো তার প্রধান সহযোগীর সমর্থন হারান। এর ফলে পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়।
যদিও ছোট দলগুলোর সমর্থনে তিনি একটি দুর্বল জোট সরকার গঠন করতে সক্ষম হন। ডিসেম্বর মাসে অর্থমন্ত্রী নীতিগত মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেন। এই ঘটনাগুলো তার সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে তোলে।
কানাডার অর্থনীতি ইতোমধ্যে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, স্থবির জিডিপি এবং বাণিজ্য নীতির দুর্বলতার মুখে রয়েছে। এর মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন, যা অর্থনৈতিক অবস্থাকে আরও সংকটময় করে তুলেছে।
ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণার পর কানাডার ডলারের মান বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তার নেতৃত্বে দেশ যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখোমুখি হয়েছে, তা নতুন নেতৃত্বের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। কানাডার আগামী নির্বাচন এবং দেশটির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ওপর এখন নজর রাখছে আন্তর্জাতিক মহল।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-