কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভয়ংকর ভাঙন!

বিডিনিউজ :

ভয়ংকর ভাঙন ও প্রতিবেশ সংকটের কবলে পড়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। সামুদ্রিক ভাঙন আর ঝাউবন ধ্বংস করে হোটেল ব্যবসার রমরমা ক্রমশ গিলে খাচ্ছে সৈকতের বালিয়াড়ি।কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়া থেকে ইনানী সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন অংশ ক্রমশই তলিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে পর্যটন শিল্পে।

বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে প্রায়শই একটা কথা শোনা যায়— সমুদ্র এখানে আগ্রাসী। এক-এক করে তার ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে সৈকত, সংলগ্ন ঝাউবন। উষ্ণায়নের ধাক্কায় সমুদ্রের আগ্রাসন এখন আর অপ্রত্যাশিত নয়। ভয়ংকর সামুদ্রিক ভাঙন আর ঝাউবন ধ্বংস করে হোটেল ব্যবসার রমরমা ক্রমশ গিলে খাচ্ছে সৈকতের বালিয়াড়ি। সমুদ্র সেখানে আজ সমূহ পরাভূত জনসমুদ্রের কাছে।

এক সময় যেখানে ছিল বিস্তীর্ণ এক বেলাভূমি, অজস্র লাল কাঁকড়ার গর্ত, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ঝিনুকের সারি, কয়েক যুগ পর সেখানেই চতুর্দিকে ডালপালা মেলেছে কুৎসিত-দর্শন প্লাস্টিকের সাম্রাজ্য। সারিবদ্ধ কংক্রিটের স্থাপনা আর অস্থায়ী প্লাস্টিকের ছাউনি আর থিকথিকে ভিড়ে সমুদ্র যেন দেখা দিতেই চায় না। লাল কাঁকড়া, ঝিনুকের ঘর-বাড়ির দখল নিয়েছে বাঁকাচোরা টেবিল-চেয়ার-বেখাপ্পা ছাতা। উৎকট গন্ধে সৈকতের মুক্ত পরিবেশ যেন বিপন্ন।

গত দুই বছরের ধারাবাহিকতায় এবছরও(২০২৪) ভেঙেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন অংশ। জোয়ারের সময় ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে সৈকত ও সড়ক, ধসে যাচ্ছে বাঁধের জিও ব্যাগ, উপড়ে পড়ছে ঝাউ গাছ; যাতে ঝুঁকিতে পড়ছে সৈকতের বিভিন্ন স্থাপনা।

সৈকতে প্রথমবারের মত ব্যাপক আকারের ভাঙন দেখা দেয় ২০২২ সালের অগাস্টে। পরের বছর একই মাসে জোয়ারের ভাঙনে বিলীন হয় মেরিন ড্রাইভের দুই কিলোমিটার অংশ।

এবার ভাঙন দেখা দেয় সেপ্টেম্বরে। টানা সাত দিনের অতি ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পর ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সৈকত। ভাঙনের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সৈকতের কয়েকটি অংশ।

এবার অবশ্য এই ভাঙনের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে একটি প্রতিবেদন মিলেছে, যেটি এই সমস্যা সমাধানের পথ খুলে দিতে পারে।

কক্সাবাজার সৈকতের পূর্ব দিকে পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে আকস্মিক বন্যা ও ভূমি ধসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়মিতই ঘটে।

কিন্তু বিগত ১০ বছরের তুলনায় এ বছরের বন্যা তুলনামূলক দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় এবং ব্যাপক আকারে সৈকতে ভাঙন হওয়ায় তা পরিদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

টানা তিন বছর ভাঙনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বিওআরআই) তাদের এনভায়রনমেন্টাল ওশানোগ্রাফি অ্যান্ড ক্লাইমেট ডিভিশন এর ছয় সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করে।

ভাঙন প্রবণ এলাকা পরিদর্শন শেষে ওই দল একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে সৈকতে ভাঙনের কারণ ও প্রতিকারে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।

  • কারণ কী কী

বিশেষজ্ঞ দলটি সৈকতের নাজিরারটেক হতে টেকনাফ পর্যন্ত মোট ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়ক ও উপকূল বরাবর ভাঙন পরিস্থিতি পরিদর্শন করে।

তারা সুগন্ধা, লাবণী, কলাতলী ও প্রেসিডেন্ট বিচ পয়েন্ট এবং মেরিন ড্রাইভ সড়কের দরিয়ানগর থেকে হিমছড়ি এলাকা পর্যন্ত বেশ কিছু অংশে ভাঙন দেখতে পায়।

প্রতিবেদনে চলতি বছর সৈকতের ভাঙনের প্রধান কারণ হিসেবে হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যাকে।

গত ১৩, ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর যথাক্রমে ১৬৭ দশমিক ৩৬, ৩৩২ দশমিক ৭৬ এবং ১২৬ দশমিক ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে কক্সবাজারে। ১৩ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর সাত দিনের ভারি বৃষ্টির কারণে হিমছড়ি থেকে দরিয়ানগর পর্যন্ত এলাকায় ব্যাপক পাহাড় ধসও ঘটে।

বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান ও জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু শরীফ মো. মাহবুব ই কিবরিয়া বলেন, “কলাতলী সৈকতে বালির নিচে প্লাস্টিক, পলিথিন, এমনকি ইট-সুড়কির সন্ধান মিলেছে।

কক্সবাজার শহরের পানি এই সৈকত ধরে সাগরে যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে কোনো ড্রেনেজ সিস্টেম নেই।”

তাদের অনুসন্ধান বলছে, বর্ষায় যখন সাগরের পানি কলাতলী দিয়ে সাগরে গেল, সেই ধারাটা আর সৈকত সামলাতে পারেনি।

কারণ, বালির নিচে প্লাস্টিক পলিথিন ও ইট-সুড়কি থাকায় সেখানে সৈকত এটাচড (সংযুক্ত) ছিল না। ফলে ভাঙন ধরে, সৈকতের পাশে ড্রেন হেলে পড়ে যায়।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ বলেন, “কক্সবাজার শহর থেকে বর্ষার পানি আগে সুগন্ধা পয়েন্ট দিয়ে বাঁকখালী নদীতে গিয়ে পড়ত। এখন সেই ড্রেনেজ সিস্টেমটি নষ্ট।

তাই শহরের পানি কলাতলী পয়েন্টে সৈকতের উপর দিয়ে সাগরে গিয়ে পড়ছে। গত মাসে শহরে বন্যা এবং কলাতলী ও আশেপাশের এলাকায় সৈকতে ভাঙনের এটা মূল কারণ।”

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিওআরআই) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, “পাহাড়ের কারণে কক্সবাজারে এমনিতে বেশি বৃষ্টি হয়।

পূর্ব দিকের পাহাড় শ্রেণি থেকে সেই পানি ড্রেনেজ হওয়ার জন্য কিছু প্রাকৃতিক ছড়া ছিল। সেই ছড়া হয়ে পানি সৈকতে পেরিয়ে সাগরে যেত।

“কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেসব উন্নয়ন কাজ হয়েছে তাতে প্রাকৃতিক এসব ছড়া অক্ষুন্ন রাখার বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি।

বেশির ভাগ ছড়া বন্ধ হয়ে গেছে, যে কয়টি অবশিষ্ট আছে সেগুলোরও পরিসর কমে গেছে শহরের ময়লা-আবর্জনা এসে পড়ার কারণে।”

যখন পাহাড়ি ঢল হয়, তখনই পানি সৈকতের উপর দিয়ে সাগরে নামছে; এটাও ভাঙনের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি।

সুগন্ধা পয়েন্টে ভাঙনের কারণ কিছুটা ভিন্ন তুলে ধরে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু শরীফ বলেন, “সেখানে সৈকতে বালু ও মাটির মিশ্রণ পেয়েছি।

ওখানে সৈকতের পাশে যে কংক্রিট সড়ক তাতে ড্রেনেজ সিস্টেম আছে কিন্তু সেটার দেয়ালও ভেঙে গেছে পানির তোড়ে।”

মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন দরিয়া নগর থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত পাহাড়ের মাটি আবার নরম। সে কারণে টানা বৃষ্টি হলে ওই এলাকায় পাহাড় থেকে বড় গাছ ধসে পড়ে।

এই তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, “সেখানে মাটির বন্ধন ক্ষমতা কম হওয়ায় পাহাড়ে ধস নামে। আর সৈকতের ওই অংশ তুলনামূলক নিচু হওয়ায় সেখান দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি সাগরে নামে। ফলে সৈকতেও ধসের সৃষ্টি হয়।”

  • বালিয়াড়ি ধ্বংস বাড়াচ্ছে ক্ষতি

বিওআরআই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাকারিয়া মনে করেন, উপকূলের বালিয়াড়ি রক্ষা করতে না পারা সৈকতে ভাঙনের আরেকটি প্রধান কারণ।

তিনি বলেন, “নানাভাবে সৈকতে থাকা গাছপালা তথা প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা ধংস করা হয়েছে। সৈকতে প্রথম ধাপে জন্ম হয় সাগর লতার। কিন্তু সেখানে যদি ঝাউগাছ লাগানো হয় সেটা কোনো কাজে আসে না বরং ক্ষতির হয়।”

এ বিষয়ে আবু শরীফ বলেন, “ঝাউ গাছের গুচ্ছ মূলের কারণে সহজে উপড়ে পড়ে। ফলে সৈকতের বালি ধরে রাখতে পারে না।

এতে করে বালিয়াড়ি কমতে থাকে। অন্যদিকে সাগর লতার শেকড় মাকড়সার জালের মত সৈকতের মাটিতে বিস্তার লাভ করে, এতে ভাঙন প্রতিরোধ হয়।”

  • বেশি উচ্চতার জোয়ারে বিলীন সৈকত

২০২২ সালের ১৬ অগাস্ট সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজারে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ার হয়েছিল।

সেসময় পূর্ণিমার জোয়ারে সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, সিগাল, লাবণী ও শৈবাল পয়েন্টের প্রায় ৩০০-৩৫০ ফুট সৈকত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়, ভেসে যায় বিভিন্ন অংশে সাগর তীরের বাঁধের জিও ব্যাগ। জোয়ারের পানি নামার পর এসব স্থানে দেখা যায় ভাঙা সৈকতের।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাকারিয়া বলেন, “বর্ষায় অন্য সময়ের তুলনায় এমনিতেও ২-৩ মিটার উচ্চতা বেশি থাকে সাগরের পানির। তখন জোয়ার এত বেশি উচ্চতার হয় যে তা সৈকত ও ঝাউবন পেরিয়ে সৈকত পাড়ের সড়কের উপরে চলে আসে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ বলেন, “মূলত সৈকতে শীতকালে বালু জমা হয়, বর্ষায় সেসব ধুয়ে চলে যায় সাগরে।

অতি বর্ষণ আর বেশি উচ্চতার জোয়ারের কারণে সৈকত থেকে আগের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে বালু বর্ষায় ধুয়ে চলে যাচ্ছে। এটাই সৈকতের ভাঙনের মূল কারণ বলে আমি মনে করি।”

  • সৈকত রক্ষায় করণীয় কী

কক্সবাজার শহর সংলগ্ন সৈকতের প্রায় ৮০ কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন প্রতিরোধে তিন ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ দল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, “এর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা, সেমি-ইঞ্জিনিয়ারিং সমাধান (পর্যটকদের জন্য পাসওয়ে নির্মাণ, সফট ফেঞ্চিং, নিয়মিত বিচ নরিশমেন্ট, জিও ব্যাগ স্থাপন ইত্যাদি), হার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সমাধান (ওয়েব ব্রেকার, গ্রোয়েন স্থাপন, সি ওয়াল ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ ইত্যাদি)। এসব পদক্ষেপে পর্যটন আরও আকর্ষণীয় হবে বলেও মত দেওয়া হয় প্রতিবেদনে।

আবু শরীফ বলেন, “প্রাকৃতিক সুরক্ষার প্রধান উপায় হল বিজ্ঞান সম্মতভাবে উপকূলীয় উদ্ভিদ শ্রেণি সৃষ্টি। কোস্টাল ভেজিটেশন এর প্রথম ধাপে সাগরলতা জাতীয় বিরুৎ শ্রেণির উদ্ভিদ থাকতে হবে। তারপর নিশিন্দা, কেয়া ও আকন্দ এর মত গুল্ম উদ্ভিজ্জ এবং তৃতীয় স্তরে হিজল, তমাল বা ঝাউ জাতিও বৃক্ষ থাকবে।”

এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “সাগরলতার মত বিরুৎ শ্রেণির উদ্ভিদগুলো বালিয়াড়ি তৈরি করে সৈকতের ভাঙন ঠেকাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ঝাউ এর মত তৃতীয় স্তরের বৃক্ষ প্রথম স্তরেই রোপণ করার প্রকল্প প্রতি বছরই নেওয়া হচ্ছে।

“কিন্তু ঝাউ গাছের শিকড় বালিয়াড়িতে তেমন বিস্তার লাভ করে না, তাই সেটি এর চারপাশের বালিয়াড়িকে আঁকড়ে ধরতে পারে না। সামান্য সামুদ্রিক জলচ্ছাসেও ঝাউ গাছ উপড়ে পরে।”

পাহাড় ধস ও ভূমি ধস ঠেকাতে প্রাকৃতিক সুরক্ষা উপাদান হিসেবে উলু ঘাস লাগানোর সুপারিশও করা হয়েছে বিশেষজ্ঞ দলের প্রতিবেদনে।

প্রকৌশলী আসিফ বলেন, “বন বিভাগের সাথে আমরা আলাপ করেছি এরইমধ্যে। সৈকত সুরক্ষায় যেভাবে উদ্ভিদ লাগানোর কথা বলা হচ্ছে সেভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে তা করার বিষয়ে তাদের অনুরোধ করেছি।” শুরুতেই বড় অবকাঠামোতে না গিয়ে সেমি-ইঞ্জিনিয়ারিং সমাধানে যাওয়া উচিত বলেও মত দেন তিনি।

সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা ও মেরিন ড্রাইভ অংশের ভাঙন প্রতিরোধে ছড়া সংরক্ষণ ও অবকাঠামো বিষয়েও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদনে।

আবু শরীফ বলেন, “কলাতলী পয়েন্টে এমন ড্রেনেজ অবকাঠামো করতে হবে যেন সহজে তা ভেঙে না পড়ে। পৌর সদরের পলিথিন, ইট সুড়কি ও প্লাস্টিক যাতে সৈকতে না আসে, পাশাপাশি ড্রেনের আবর্জনা যেন সৈকতে না আসে তাও নিশ্চিত করতে হবে।

“সুগন্ধা পয়েন্টে থাকা ড্রেনেজ সিস্টেমের নিচের দিকে শহর থেকে আসা আবর্জনা জমেছে এবং লিকেজ হয়ে গেছে। সেখানে পানি সাগরে নামার একটি চ্যানেল আছে।”

ড্রেন থেকে প্লাস্টিক অপসারণের সুপারিশও করা হয়েছে প্রতিবেদনে। চ্যানেলটি নিয়মিত সংস্কারের প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে বিশেষজ্ঞ দল। পাশাপাশি সুগন্ধা পয়েন্টে প্রাকৃতিক উপায়ে ভাঙন প্রতিরোধের জন্য সড়ক ও সৈকতের মিলনস্থলে গাছ লাগানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

সৈকতের মেরিন ড্রাইভ অংশে ভাঙন ঠেকাতে পানি নামার জন্য চ্যানেল তৈরি করে ঢলের পানি নামার পথ সুগম করার পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।

প্রকৌশলী আসিফ বলেন, “ভাঙন ঠেকাতে করণীয় নির্ধারণে জেলা প্রশাসন চলতি সপ্তাহে একটি কমিটি করেছে।যারা ড্রেনেজ অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করে যেমন সড়ক ও জনপথ, পৌরসভা এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে অতীতে উন্নয়ন কাজে কিছু অসঙ্গতি হয়ত ছিল।সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করে এমন ড্রেনেজ সিস্টেম করতে হবে যাতে পানি সহজে নেমে যেতে পারে।”

বিশেষজ্ঞ দলের প্রতিবেদনে কক্সবাজারে পাহাড় ধসপ্রবণ এলাকার চিহ্নিত করা ও তার প্রতিকারে ব্যবস্থা গ্রহণ, পাহাড় থেকে নেমে আসা ছড়ার অবস্থান ও গতিপথ চিহ্নিত করা, সুরক্ষা দেয়াল নির্মাণ, প্রয়োজনীয় স্থানে কালভার্ট তৈরি, পাহাড়ে গাছ কাটা বন্ধে স্যাটেলাইট ও রিমোর্ট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার এবং সৈকতের বালি চুরি থামাতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণেরও সুপারিশ করা হয়েছে।