বিশ্বনবি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন বিশ্ববাসীর জন্য অনুসরনীয় ও অনুকরণীয় একমাত্র সর্বোত্তম আদর্শ।
পবিত্র কোরআনুল কারিমের ঘোষণায় বিশ্বনবি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন উত্তম চরিত্রের অধিকারী। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘নিশ্চয় আপনি উত্তম চরিত্রের অধিকারী’।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ’।
আর তাই গুরুত্বসহকারে আমাদের জানতে হবে নবীজি মুহাম্মাদ (সা.) এর অনুসরণীয় গুণগুলো কী কী? মুসলিম উম্মাহর ব্যক্তি চরিত্রে উত্তম গুণাবলী অর্জনের জন্যই তা একান্ত আবশ্যক।
মানুষ যখন বিশ্বনবি (সা.) চারিত্রিক গুণাবলী নিজেদের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে, তখনই মানুষ ইহ ও পরকালে সফলকাম হবে। দুনিয়াতেই রচিত হবে যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ সমাজ।
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশ্বনবি (সা.) এর সব গুণগুলোই অনুসরণ ও অনুকরণ করা আবশ্যক। কেননা তিনি উম্মতের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আমি উত্তম চারিত্রিক গুণাবলীর অধিকারী হয়েই প্রেরিত হয়েছি’।
বিশ্বনবি (সা.) এর সব গুণগুলোর মধ্যে দৈনন্দিন জীবনের গুণগুলো অনুসরণ করা একান্ত জরুরি। এখানে তার কিছু চারিত্রিক গুণাবলী তুলে ধরা হলো-
১. কোনো মজলিশে কেউ কথা বলতে বসলে সে ব্যক্তি উঠা না পর্যন্ত বিশ্বনবি (সা.) উঠতেন না।
২. রাসূলুল্লাহ (সা.) সব সময় আল্লাহ তাআলার ভয়ে ভীত থাকতেন।
৩. বেশিরভাগ সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) নিরব থাকতেন।
৪. মুহাম্মাদ (সা.) বিনা প্রয়োজনে কথা বলতেন না।
৫. রাসূলুল্লাহ (সা.) কথা বলার সময় সুস্পষ্টভাবে বলতেন; যাতে শ্রবনকারী সহজেই তার কথা বুঝে নিতে পারে।
৬. দয়ার নবি রাসূলুল্লাহ (সা.) আলোচনা করার সময় তা দীর্ঘস্থায়ী করতেন না যাতে শ্রোতারা বিরক্ত হয়ে যায়। আবার এত সংক্ষিপ্তও করতেন না যাতে কথা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
৭. নবি মুহাম্মাদ (সা.) কথা, কাজ ও লেন-দেনে কঠোরতা অবলম্বন করতেন না।
৮. রাসূলুল্লাহ (সা.) বিনয় ও নম্রতাকে অত্যন্ত পছন্দ করতেন।
৯. তাঁর দরবারে আগত কোনো ব্যক্তিকেই অবহেলা করতেন না।
১০. কারো সঙ্গে কথা-বার্তায় অযথা তর্ক সৃষ্টি করতেন না প্রিয় নবি রাসূলুল্লাহ (সা.)।
১১. ইসলামি শরিয়ত পরিপন্থী কোনো কথা হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) তা থেকে বিরত থাকতেন বা সেখান থেকে উঠে যেতেন।
১২. আল্লাহ তাআলার প্রতিটি নিয়ামতকে রাসূলুল্লাহ (সা.) সম্মান করতেন।
১৩.রাসূলুল্লাহ (সা.) কোনো খাদ্য দ্রব্যের দোষ ধরতেন না। মন চাইলে খেতেন; অন্যথায় খাওয়া থেকে বিরত থাকতেন।
১৪. দয়ার নবি রাসূলুল্লাহ (সা.) ক্ষমা করাকে পছন্দ করতেন।
১৫. রাসূলুল্লাহ (সা.) যেকোনো প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতেন; যাতে প্রশ্নকারী ব্যক্তি সে সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে অবগত হতে পারে।
১৬. রাসূলুল্লাহ (সা.) সব সময় ধৈর্য্য ধারণ করতে ভালোবাসতেন। ধৈর্য্য ছিল তার অন্যতম গুণ।
১৭. বিশ্বনবি (সা.) এর কাছে হাদিয়াসহ যা কিছুই আসতো; তিনি তা আল্লাহর রাস্তায় দান করে দিতেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুনিয়ার পুরো জিন্দেগিই ছিলো গুণাবলীতে ভরপুর। তার সব গুণাবলী লিখে শেষ করা যাবে না। কোনো মানুষ যদি বিশ্বনবি (সা.) এর উল্লেখিত গুণগুলো নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করেন- তিনি হবেন পৃথিবীর সেরা মানুষ।
ইয়া আল্লাহ! সব মুসলিম উম্মাহকে নবীজি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চারিত্রিক গুণের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-