নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজারে আলাদা পাহাড় ধসের ঘটনায় দুই বাংলাদেশি ও আট রোহিঙ্গাসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হন আরও বেশ কয়েকজন, বিধ্বস্ত হয় কয়েক ঘরবাড়ি।
বুধবার ভোরে জেলার উখিয়া উপজেলার বালুখালী পানবাজার ও হাকিম পাড়া ক্যাম্পে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি ঝরে কক্সবাজার উপকূল জুড়ে। ৬৫ মিলিমিটার এই বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে পড়ে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
নিহতরা হলেন, উখিয়ার আট নম্বর ইস্টের ব্লক বি/৮২ এর বাসিন্দা মো. আনোয়ারের ছেলে মো. হারেছ (৪), ক্যাম্প ৯ এর ব্লক আই/৪ এর বাসিন্দা আলী জোহারের মেয়ে আনোয়ারা বেগম (১৮), ব্লক আই/৯ এর বাসিন্দা মো. জামালের ছেলে মো. সালমান (৩), ক্যাম্প ১০ এর ব্লক এফ/১০ এর বাসিন্দা লাল মিয়ার ছেলে আবুল কালাম (৫৭), মতিউর রহমানের মেয়ে সলিমা খাতুন (৪২), আবুল কালামের মেয়ে আবু মেহের (২৪), শরীফ হোসেনের মেয়ে জয়নব বিবি (১৯), ক্যাম্প-৯ এ অবস্থান করা চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কেরানিহাট এলাকার আলী জুহারের ছেলে হোসেন আহমেদ (৫০) ও ক্যাম্প-১৪ এর পাশে পালংখালীর থাইংখালীর শাহ আলমের ছেলে আব্দুল করিম (১২)। শেষে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর জানান, মঙ্গলবার রাত থেকেই বৃষ্টি হচ্ছিলো কক্সবাজারে। বৃষ্টির কারণে বুধবার ভোরে বালুখালী পানবাজার ও হাকিম পাড়া ক্যাম্পে পাহাড় ধসে পড়ে। এতে মাটি চাপা পড়ে পানবাজার ক্যাম্পে এক বাংলাদেশিসহ পাঁচ জন ও হাকিমপাড়া ক্যাম্পে চারজনের মৃত্যু হয়। এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস মিলে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে। পরে আরও এক বাংলাদেশির মৃতদেহ উদ্ধার করে তারা। বিকেল চারটার দিকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে চলমান ভারী বর্ষণে উখিয়ার চারটি পৃথক ক্যাম্পে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় অন্য পাহাড়ধসের শঙ্কা থাকা এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
উখিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, ভূমিধসে নিহত হওয়া স্থানীয়দের সরকারিভাবে সহযোগিতা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, স্থানীয়দের মতে ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ প্রবল বর্ষণের পূর্বে যদি যথাযথ সময়ে রোহিঙ্গা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া বা তাদের কাছে সর্তক বার্তা প্রেরণ করলে এতো মানুষের প্রাণহানী ও ঘরবাড়ির ক্ষয়-ক্ষতি হতো না। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার ক্যাম্প প্রশাসন, দেশী-বিদেশি এনজিও গুলো আবহাওয়া এবং ভারী বর্ষণের ব্যাপারে চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন। দায়িত্ব অবহেলার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-