আবদুল্লাহ আল আজিজ, কক্সবাজার জার্নাল :
কক্সবাজারের উখিয়ার এবার স্কুল ঝড়ে পড়া রোধ ও দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পাগলিরবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুস হেল্প ব্যাংক নামের একটি ব্যাংক উদ্ভাবন করেছেন।
গত ৭মে (সোমবার) চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারী, মার্চ ও এপ্রিল মাসের সেরা ছাত্র-ছাত্রীদের পদক বিতরণ অনুষ্টানে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ ব্যাংকের শুভ উদ্বোধন করা হয়।
এসময় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অনুষ্ঠানে আগত অভিভাবকরা স্বেচ্ছায় যে যার সাধ্যমতো ব্যাংকে টাকা রাখেন।
এ বিষয়ে পাগলির বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ দারিদ্র্য পরিবারের। অনেক সময় দারিদ্র্য শিক্ষার্থীরা অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় শিখন শেখানো শিক্ষা উপকরণ- খাতা, কলম, পেন্সিল, স্কেল ইত্যাদি নিয়ে আসতে পারেনা।
এছাড়া অর্থের অভাবে স্কুল ড্রেস সেলাই করতে পারেনা। এক্ষেত্রে হেল্প ব্যাংকটি সম্পূর্ণ সেবামূলক ব্যাংক হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।
যেখানে প্রতিদিন সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক বা যেকোন ব্যক্তি তাদের সামর্থ অনুযায়ী স্বেচ্ছায় হেল্প ব্যাংকে অফেরতযোগ্য টাকা জমা করবে। জমাকৃত টাকা থেকে দারিদ্র্য পরিবারের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ এবং স্কুল ড্রেস তৈরি করে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এই আইডিয়া যদি আন্তরিক ভাবে বাংলাদেশের ৬৫ হাজার অধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাস্তবায়ন করা যায় অনেক দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, যদি হেল্প ব্যাংকের মাধ্যমে বছরে একটি বিদ্যালয়ের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীদের ড্রেস তৈরি করে দেওয়া যায় তাহলে দেশের পঁয়ষট্টি হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রায় ছয় লক্ষ পঞ্চাশ হাজার অধিক শিক্ষার্থী স্কুল ড্রেসের সুবিধা পাবে।
এই আইডিয়া বাস্তবায়নের ফলে বিদ্যালয়ের গরীব শিক্ষার্থী উপকৃত হবে, ঝরেপড়া রোধ হবে,প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভালো কাজের চর্চা বৃদ্ধি পাবে এবং সহযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হবে। স্কুল জীবনে ভালো কাজের চর্চার ফলে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ব্যক্তিগত জীবনে তা অভ্যাসে পরিণত হবে।
এদিকে, হেল্প ব্যাংক উদ্ভাবনের বিষয়টিতে স্কুল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছেন। তারা এমন সুন্দর ও মানবিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পাগলির বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
উল্লেখ্য, মোহাম্মদ ইউনুস প্রথমে উখিয়া উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হন। এরপর জেলা পর্যায়ের জাতীয় শিক্ষা পদক ২০২৩ এ অংশগ্রহণ করে কক্সবাজার জেলা পর্যায়ে এবং পরে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মোহাম্মদ ইউনুছ কক্সবাজার সরকারী কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি কক্সবাজার জেলার, উখিয়া উপজেলার, পালংখালী ইউনিয়নের, থাইংখালী গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান মোস্তফা বেগম দম্পতির সন্তান।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-