নিজস্ব প্রতিবেদক :
১৬০০ পিস ইয়াবা বহন করা নোহা গাড়ি সহ উখিয়ার এক চালক চট্টগ্রামে পুলিশের হাতে আটকের পর পাচারে জড়িত সিন্ডিকেট নিয়ে বেড়িয়ে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
দীর্ঘদিন ধরে টেলিকম, হোটেল সহ বিভিন্ন ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা কারবার চালিয়ে যাওয়া এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের শনাক্তে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত সোমবার (২৫ মার্চ) বন্দর নগরীর পার্শ্ববর্তী উপজেলা আনোয়ারায় চেকপোস্ট বসিয়ে নুর হোসেন নামে উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের বাসিন্দা এক চালককে আটক করে পুলিশ।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান আটক ঐ চালকের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তি পুলিশকে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় রোহিঙ্গা মাদককারবারিদের সাথে সখ্যতার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা পাচার করে তার সিন্ডিকেট।
উখিয়া সদরে বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত সিন্ডিকেটের তিন সদস্যের ব্যাপারেও ঐ ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধান বলছে, এই সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা উখিয়ার হাজী টেলিকমের স্বত্তাধিকারী রাজাপালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাজী উলা মিয়ার পুত্র ফাইজুল ইসলাম প্রকাশ ফাইজুল/ ফয়সাল।
উখিয়া উপজেলায় মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের পরিবেশক হিসেবে কাজ করে ফাইজুলের হাজী টেলিকম।
গত বছরের জুলাইতে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিটিআরসি ও র্যাব পরিচালিত যৌথ অভিযানে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ অবৈধ সীম, যার অধিকাংশই ছিলো বাংলালিংকের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উখিয়ার এক টেলিকম ব্যবসায়ী জানান, ” উখিয়ায় মোবাইল অপারেটরগুলোর সীম বেঁচাকেনা নিষিদ্ধ হলেও উখিয়া থানার প্রবেশদ্বারের বিপরীতে থাকা হাজী টেলিকম প্রকাশ্যে সীমের ব্যবসা করছে। ”
থাইংখালীর ১৪ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ব্লকে আড্ডারত মুঠোফোন ব্যবহারকারী ৭/৮ জন রোহিঙ্গার সাথে কথা বলে জানা গেছে তারা প্রায় প্রত্যেকেই ০১৪ সিরিজের সীম ব্যবহার করেন। এই সিরিজটি বাংলালিংকের এবং সব সীমই বাংলাদেশীদের নামে নিবন্ধন করা।
রোহিঙ্গারা জানান, ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে তারা এই সীম গুলো সংগ্রহ করেছেন।
অভিযোগ আছে, বাংলাদেশী গ্রাহকদের জাতীয় পরিচয়পত্র কৌশলে ব্যবহার করে সীমগুলো নিবন্ধন করায় হাজী টেলিকম।
বিক্রয় প্রতিনিধি ও ক্যাম্প সংলগ্ন টেলিকমের দোকানের সাথে যোগসাজশে ফাইজুল সীম গুলো পৌঁছে দেন রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে।
রোহিঙ্গা মাদককারবারি এবং অপরাধীরাও এই সীমগুলো অনায়াসে ব্যবহার করছে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র বাংলাদেশিদের হওয়ায় নাম্বার মিললেও তাদের শনাক্ত করতে বেগ পোহাতে হয় বলে জানান ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত এপিবিএনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
এসব বিষয়ে জানতে হাজী টেলিকমের স্বত্তাধিকারী ফাইজুলের সাথে তার মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
সৌজন্যে সিএনসি
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-