আইন আছে, প্রয়োগ নেই...

টেকনাফে বাণিজ্যিক খালটি ভূমিগ্রাসীদের দখলে!

গিয়াস উদ্দিন ভুলু, কক্সবাজার জার্নাল :

কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নাফনদী সংযুক্ত অন্যতম নৌ-পথ খ্যাত কায়ুকখালী খালটি দখল করে নিচ্ছে অর্থলোভী ভূমিগ্রাসী ব্যক্তিরা।

খালটি টেকনাফের পর্যটন স্পট ক্ষ্যত বানিজ্যিক খাল হিসাবে সকলের কাছে পরিচিত। এই খাল দিয়ে প্রতিনিয়ত সেন্টমার্টিন যাতায়াত করার পাশাপাশি সাগরে মৎস্য আহরনকারী শত শত ট্রলার উক্ত খালেই অবস্থান করে। আবার মিয়ানমার থেকে আমদানীকৃত শত শত বাঁশের বান্ডিল গুলো প্রবেশ করে থাকে। দীর্ঘ কয়েক যুগ আগে এই খালটিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিলো পর্যটন নগরী টেকনাফ শহরটি।

অথচ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই গুরুত্বপুর্ন বানিজ্যিক খালটি দখল করার উৎসবে মেতে খালের দুই পাশের অর্থলোভী ভুমিগ্রাসী জমির মালিক ও প্রভাবশালী চক্রের সদস্যরা। দিনের পর দিন দখলে দখলে খালটি এখন সরু হয়ে নালা-নর্ধমায় পরিণত হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, খালটি দখল করার ফলে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি গুলো নামতে বাধা সৃষ্টি হয়ে খালের আশে-পাশে থাকা গ্রাম গুলো প্লাবিত হয়ে যায়।

২৩ জানুয়ারী (বুধবার) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা মেলে খালের পাশে বসবাসকারী জমির মালিকদের কাছ দলিল মুলে আংশিক জমি ক্রয় করে বেশ কয়েক জন ভুমিগ্রাসী। জমি ক্রয় করার তারা সু-কৌশলে খালের দুপাশে গড়ে উঠা প্যারাবনের আড়ালে প্রথমে খ ঝুপড়ি ঘর তৈরী করার পর বাড়াবাসা,মার্কেটসহ বিভিন্ন প্রকারের ঠিকসই স্থাপনা নির্মান করেছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বেশ কয়েক জন ভুমিগ্রাসীর নাম পাওয়া যায়।

এরা হলেন-খালের পাশে বসবাসকারী মৃত আইয়ুব আলীর পুত্র আবু মুছা, মৃত গুরা মিয়ার পুত্র সৈয়দ আলম, কালা মোহাম্মদ আলীর পুত্র মোহাম্মদ আমিন,আবু সৈয়দ’র পুত্র মো.আব্দুল্লাহ,হাজ্বী জহির আহাম্মদ’র পুত্র মো.ইউছুপ, চট্রগ্রাম সাতকানিয়ার বাসিন্দা মৌলভী এনায়েত উল্লাহ ও জামাল সওদাগরসহ নাম না জানা অর্ধ-শতাধিক ভুমিগ্রাসী চক্র।

এব্যপারে স্থানীয় পরিবেশবাদী ও সচেতন মহলের ব্যাক্তিরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, অবিলম্বে দেশের বিভিন্ন স্থানের নদী গুলোর মতো ভুমিগ্রাসীদের কবল থেকে অত্র এলাকার কায়ুকখালী খালের দুইপাশে গড়ে উঠা স্থাপনা গুলো জরুরী ভিত্তিত্বে উচ্ছেদ করা প্রয়োজন।

তারা দু:খ প্রকাশ করে আরো বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট দেশের নদী-খাল-বিল ও জলাশয় রক্ষা করার জন্য কঠোর আইনের রায় প্রদান করেছেন। অথচ সে আইনটি সঠিক ভাবে প্রয়োগ করছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদস্যরা।

তাদের দাবী, টেকনাফে অবৈধ দখলে থাকা স্থাপনা গুলো উচ্ছেদ অভিযানের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারী থাকলে ভুমিগ্রাসীরা এত বড় অপরাধ করতে সাহস পেতো না।

এবিষয়ে জানতে চাইলে, টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, কায়ুকখালী খালের দুপাশে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা স্থাপনা গুলো খুব শীঘ্রই উচ্ছেদ করা হবে।

পাশাপাশি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খাল দখলে লিপ্ত থাকা ভুমিগ্রাসীরা যত বড় প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

আরও খবর