কক্সবাজারে টমটম গাড়ি ডাকাতি চক্রের মূলহোতাসহ চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার

আবু সায়েম, কক্সবাজার •

কক্সবাজারে র‌্যাবের অভিযানে টমটম গাড়ি ডাকাতি চক্রের মূলহোতা সেলিম ও সালামত সহ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

২৫ নভেম্বর ( শনিবার) সন্ধ্যায় র‌্যাব-১৫’র অভিযানে রামু থানাধীন চা বাগান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চক্রের মূলহোতা সহ ৬ সদস্য কে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ৫ টি থ্রি হুইলার উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত ডাকাতি চক্রের ৬ সদস্য হলো,রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের নুরুল আমিনের পুত্র, মোঃ সেলিম( ২৫), রামু জোয়ারিয়ানালার মকসুদ মিয়া মিস্ত্রির পুত্র সালামত উল্লাহ (৪০), রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালার নুর মোহাম্মদের পুত্র কলিম উল্লাহ (২৫),একই এলাকার মনির আহাম্মদের পুত্র জাহিদুল ইসলাম (২৫),উখিয়া উপজেলার কুতুপালং পশ্চিম পাড়ার জাকির হোসেনের পুত্র শফিকুর রহমান (২৪) এবং রামু জোয়ারিয়ানালার নুর মোহাম্মদের পুত্র রফিক উল্লাহ (২০)।

র‌্যাব জানায়,গত ১৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ কক্সবাজারের রামু বাইপাস এলাকায় কিছু অস্ত্রধারী ডাকাত অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক একটি অটোরিকশা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুইজনকে শনাক্ত করা হয়।

একপর্যায়ে নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রেক্ষিতে ২৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ সন্ধ্যায় র‌্যাব -১৫, ব্যাটালিয়ন সদরের একটি দল কক্সবাজার জেলার রামু এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও কুতুপালং এলাকা থেকে চক্রটির মূলহোতা সেলিম ও সালামতসহ চক্রের চার সদস্য এবং যে গ্যারেজে ডাকাতিকৃত অটোগুলো বিক্রি করা হয় তার মালিক শফিককে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব আরো জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত চক্রের সদস্যরা ইঞ্জিন/ব্যাটারি চালিত গাড়ি ডাকাতির সংঘবদ্ধ চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে বলে স্বীকার করেন এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজের সাথে জড়িত। তারা আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত চক্রটি প্রথমে একটি সিএনজি অটো/ব্যাটারি চালিত থ্রি হুইলার টার্গেট করে ২/৩ জন সদস্য যাত্রী সেজে রিজার্ভ ভাড়া করে নেয়। চক্রের বাকি ৪/৫ সদস্য তাদের পূর্ব নির্ধারিত স্থানের আশেপাশে অবস্থান করে থাকে। যাত্রী বেশে ডাকাত সদস্যরা নিয়মিত বাকি সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে। যখনই তাদের নির্ধারিত স্থানে গাড়িটি আসে তখন যাত্রী বেশে থাকা একজন সদস্য প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বলে গাড়িটি থামায়। এ সুযোগে অন্য সদস্যরাও এগিয়ে আসে এবং সবাই মিলে গাড়ির ড্রাইভারকে অস্ত্রের মুখে মারধর/ছুরিকাঘাত করে গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ড্রাইভাররা মারাত্মকভাবে আহত হয়, এমন কি নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে অনেক ক্ষেত্রে।

গ্রেফতারকৃত অপরাধী চক্র ছিনতাইকৃত গাড়িগুলো কুতুপালং এ অবস্থিত শফিকের গ্যারেজে বিক্রি করে। গ্রেফতারকৃত শফিক সম্পর্কে মূলহোতা সালামতের শ্যালক। শফিক গাড়িগুলোর কাঠামো, রং এবং কাপড় পরিবর্তন করে বিক্রি করে দেয় বলে স্বীকার করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ল এন্ড মিডিয়া) মোঃ আবু সালাম চৌধুরী জানান, র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ দমনে আন্তরিকতার সহিত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দায়িত্বাধীন এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের পাশে থেকে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি’সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার এবং চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিকৃত মালামাল উদ্ধারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

তিনি আরো জানান, উদ্ধারকৃত ০৫টি থ্রি-হুইলারসহ গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে কক্সবাজার রামু থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মানুষের জান মালও নিরাপত্তার স্বার্থে র‌্যাব-১৫’র প্রাত্যহিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আরও খবর