রোহিঙ্গাদের দৈনিক খাদ্য বরাদ্দ নামল ৯ টাকায়

ডেস্ক রিপোর্ট :

রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে বৈশ্বিক নজর সরে যাচ্ছে। বছর বছর কমছে তাদের জন্য বরাদ্দ। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি) থেকে এখন রোহিঙ্গারা জনপ্রতি দৈনিক বরাদ্দ পাবেন ৯ টাকা। গতকাল বুধবার রোহিঙ্গাবিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের ৪৩তম বৈঠকের পর একথা জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

বৈঠকে রোহিঙ্গাদের সহায়তা, নিরাপত্তা ও প্রত্যাবাসনের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভাসানচরের দায়িত্ব আগামী ৩০ নভেম্বর নৌবাহিনীকে হস্তাস্তর করা হবে। এই হস্তান্তর যাতে সহজ হয় সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দুই বছর ধরে রোহিঙ্গাদের জন্য চাহিদা অনুযায়ী অর্থ আসছে না। এ বছর এখন পর্যন্ত ৪৫ শতাংশ অর্থায়ন হয়েছে। ডব্লিউএফপি জনপ্রতি বরাদ্দ কমিয়েছে। আজ (বুধবার) বৈঠকে দৈনিক জনপ্রতি বরাদ্দ ৯ টাকা করার কথা জানানো হয়েছে। এই বরাদ্দ গত বছর ছিল মাসে ১২ ডলার। এক ডলার সমান ১০০ টাকা হিসাবে যা দাঁড়ায় দৈনিক ৪০ টাকা।

গত অক্টোবরে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুদান, ইউক্রেন, গাজাসহ বিভিন্ন স্থানে সংকট চলছে। আমরা ভয় পাচ্ছি, এগুলোর কারণে রোহিঙ্গাদের প্রতি মনোযোগ কমে যায় কিনা! জেনেভায় ১৩ ডিসেম্বর ওয়ার্ল্ড রিফিউজি ফোরামের বৈঠকের কথা জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সেখানে অর্থায়নের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া আগামী জয়েন্ট রেসপন্স প্রোগ্রামের (জেআরপি) কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, গত জেআরপিতে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল। তবে সেখানে অর্থায়নের বিষয়টি বাংলাদেশ আনেনি। এবারও অর্থায়নের বিষয়টি রাখা হবে না। চীন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ মিলে অর্থায়ন করবে। তবে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সময় আন্তর্জাতিক সহায়তা লাগবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেক দিন ধরে রোহিঙ্গাদের পাইলট প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করছে। মিয়ানমার থেকে একাধিক দল এসেছিল। যেসব রোহিঙ্গা ফেরত যেতে চান, তাদের সঙ্গে মিয়ানমার বৈঠকও করেছে। কিন্তু গত ১৩ নভেম্বর থেকে রাখাইনে নিরাপত্তা সমস্যার খবর পাচ্ছি। সীমান্তে গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে, যাতে নতুন করে অনুপ্রবেশ না ঘটে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সেখানকার পরিস্থিতির দিকে বাংলাদেশ নজর রাখছে।

বৈঠকে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের দুটি সংস্থার মধ্যে তৃপক্ষীয় সমঝোতা নবায়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মাসুদ বিন মোমেন। এ বিষয়ে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগের সমঝোতাটি পরিবর্তন না করে নবায়ন করতে। এই সমঝোতা প্রত্যাবাসন সহায়ক হবে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

আরও খবর