তফসিলের পর যে ক্ষমতা পাচ্ছে ইসি

ডেস্ক রিপোর্ট :

‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২’ অনুসারে আজ বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণার পরপরই শুরু হচ্ছে ‘নির্বাচনপূর্ব সময়’। নির্বাচন শেষে ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশ পর্যন্ত এই ‘নির্বাচনপূর্ব সময়’ বহাল থাকবে। এ সময়ে সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর ৫(২) অনুচ্ছেদ কার্যকর হবে।

সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের অবশ্যকর্তব্য। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর ৫(২) অনুচ্ছেদে বলা আছে, নির্বাচন কমিশন যেকোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো দায়িত্ব পালনের বা সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দিতে পারবে।

এ সময়ে বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন সরকারে পরিণত হবে এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালার বিধি ৩ অনুসারে এ সময়ে যেকোনো সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বা ফলক উন্মোচন বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারের কার্যক্রম ‘রুটিন ওয়ার্কে’ সীমিত হয়ে পড়বে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর ৪৪(ঙ) অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, পুলিশ সুপার এবং তাদের অধস্তন কর্মকর্তাকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া বদলি করা যাবে না। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনবোধে যেকোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলির ব্যবস্থা নিতে পারবে। ‘নির্বাচন কমিশন এ সময় নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১’ প্রয়োগ করতে পারবে।

এ বিধান অনুসারে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারী নিজেদের চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে নিয়োজিত আছেন বলে বিবেচিত হবেন। তাদের কেউ নির্বাচন কমিশন বা রিটার্নিং অফিসারের আদেশ-নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হলে তা অসদাচরণ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং এ অপরাধে তার চাকরি হারানোর শাস্তিও হতে পারে।

এ ছাড়া নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসারে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সরকারি, আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে কাউকে কোনো অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ দিতে পারবেন না। তারা তাদের সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মসূচি বা কর্মকাণ্ড যোগ করতেও পারবেন না।

নির্বাচন ভবনের নিরাপত্তা জোরদার

এদিকে তফসিল ঘোষণা কেন্দ্র করে আগারগাঁওয়ে কমিশন ভবন ও এর আশপাশ এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কমিশন ভবনে এনআইডি সংশোধনের জন্য ব্যক্তিগত শুনানি গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। তারাই দেখবে। কমিশন ইতোমধ্যে সেটি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছে।

আরও খবর