নিজস্ব প্রতিবেদক •
রাজধানীর নয়াপল্টন এবং কক্সবাজার শহরে নৈরাজ্য ও নাশকতা সৃষ্টিতে সরাসরি অংশগ্রহণকারী জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা যুুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাকারিয়া এবং কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্ববায়ক সোলাইমান বাদশা’কে র্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার করা হয়েছে।
জনজীবন স্বাভাবিক ও জানমালের নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষার জন্য র্যাব-১৫ এর দায়িত্বাধীন কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে র্যাবের আভিযানিক দল সদা অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ রাজধানীতে মহাসমাবেশের ডাক দেয় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এই মহাসমাবেশকে ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা নৈরাজ্য সৃষ্টি ও বিভিন্ন ধরনের নাশকতা, অনাকাঙ্খিত, অপ্রীতিকর ও অরাজকতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
এতে জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ বিএনপি’র নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের লক্ষ্যে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ এবং গাড়ি ভাংচুর করে। জনজীবন স্বাভাবিক ও জানমালের নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষাসহ দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় এ সকল অপরাধের সাথে জড়িত নৈরাজ্য ও নাশকতাকারীদের গ্রেফতারে র্যাবের তৎপরতা চলমান রয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসমাবেশে জ্বালাও-পোড়াও, ও পুলিশের উপর হামলাসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ডের সম্মুখসারিতে থেকে অংশগ্রহণের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাওয়ায় র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর একটি চৌকস আভিযানিক দল মোহাম্মদ জাকারিয়া (৪২) এবং মোঃ সোলাইমান বাদশা’কে (৩৫) গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
মোহাম্মদ জাকারিয়া’কে ৯ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বেলা ১০ টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজার পৌর শহরের বাজারঘাটা এবং মোঃ সোলাইমান বাদশা’কে একইদিন ভোর ৫ টায় কক্সবাজার সদর থানাধীন খুরুশকুল এলাকা থেকে আটক করা হয়।
আটককৃত জাকারিয়া কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা শাখা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। চকরিয়া উপজেলার লক্ষারচর ইউনিয়নস্থ শিকলঘাট এলাকার মৃত হাজী সিদ্দিক আহমেদর পুত্র এবং সোলাইমান বাদশা কক্সবাজার জেলা শাখা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্ববায়ক ও সদর থানাধীন খুরুশকুল কুলিয়াপাড়া (৯নং ওয়ার্ড) এলাকার মৃত আমির হামজার পুত্র।
র্যাব-১৫ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ২৮ অক্টোবর ঢাকাস্থ মহাসমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য তারা স্থানীয় নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে। এছাড়াও তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত নেতাদের সাথে ব্যক্তিগত ও সামাজিক যোগাযোগ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করে তাদের নির্দেশনায় নাশকতার পরিকল্পনা করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ল এন্ড মিডিয়া) আবু সালাম চৌধুরী বলেন, গ্রেফতারকৃত সোলাইমান বাদশা’র স্বীকারোক্তিতে জানা যায় , আন্দোলনে করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা নিতে সে চলতি বছর ৩ বার ভারতের শিলং এ অবস্থানরত চকরিয়ার বিএনপির দলীয় সাবেক এক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীর নিকট গমন করে। ঐ সাবেক সংসদ সদস্যসহ বিএনপি’র নেত্রীস্থানীয় লোকদের নির্দেশনা ও পরামর্শমতে সে এবং তার সঙ্গীয় নেতাকর্মীরা ঢাকা ও কক্সবাজারে চলমান জ্বালাও-পোড়াও, নাশকতা ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায়ও এসব কাজে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলে।
তিনি আরও বলেন, গত ২৯ অক্টোবর থেকে অদ্যাবধি কক্সবাজার শহরে যেসব নাশকতামূলক কর্মকান্ড সংগঠিত হয়েছে, আটককৃত মোহাম্মদ জাকারিয়া এবং মোঃ সোলাইমান বাদশা সেগুলোতেও উপস্থিত থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে বলে জানা যায়। গ্রেফতার পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে বর্ণিত গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-