কক্সবাজারে দুর্গাপূজা উদযাপনে র‍্যাবের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বিশেষ প্রতিবেদক :


শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে ও নিরাপত্তার সঙ্গে উদযাপনে কক্সবাজারে বিশেষ ব্যবস্থা জোরদার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শুধু কক্সবাজার শহর নয়, পুরো জেলার পাশাপাশি বান্দরবান জেলায়ও চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম বাড়িয়েছে বিশেষ এ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর নাশকতাকারি বা অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টিকারিদের হাত গুড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।

শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিবারের মতো এ বছরও পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে র‌্যাব। কক্সবাজারের প্রবেশদ্বারগুলোতে বসানো হয়েছে বিশেষ চেকপোস্ট। একই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর থেকে কক্সবাজার শহরজুড়ে চলে র‌্যাবের রোবাস্ট পেট্রোল। একই সঙ্গে পূজামন্ডপগুলোর আশপাশে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীরা।

ঘোনারপাড়ার সায়ন্তন বলেন, গেলো বছর ধরে দুর্গাপূজার সময় নাশকতার আশঙ্কা থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু এবার প্রশাসনের নিরাপত্তা বেশ জোরদার। দেখছি, প্রতিদিনই পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবও টহল দিচ্ছে এবং খোঁজ-খবর রাখছে। এটাতে স্বস্তি পাচ্ছি, এবারও নিরাপদে পূজা উৎসব উদযাপন করতে পারব।

দীপক শর্মা বলেন, কক্সবাজারজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার দেখছি। তবে বিশেষ করে, উখিয়া ও টেকনাফে পূজামন্ডপগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করছি। কারণ, উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩টি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির রয়েছে।

শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। যা চলবে আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত। তাই আগামী ২৪ অক্টোবর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এমনটা আশা করেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ।

তিনি বলেন, শুক্রবার থেকে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। তবে এরআগেই প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছে নিরাপদে পূজা উদযাপন করতে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাস্তবে তা এখন দৃশ্যমান রয়েছে। প্রতিদিনই পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি টহল দিচ্ছে এবং খোঁজ-খবর রাখছে। আশা করি, পূজার শেষ দিন পর্যন্ত এভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা দিয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের পূজা মন্ডপগুলো পরিদর্শন করেন র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। তিনি কক্সবাজার শহরের পূজামন্ডপ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নাশকতাকারি বা অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টিকারিদের হাত গুড়িয়ে দেওয়া হবে।

র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম বাড়িয়েছে। পূজা উপলক্ষে যে কোনো ধরনের নাশকতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে কক্সবাজারের প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে র‌্যাবের চেকপোস্ট কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন ও টহল জোরদারসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকছে।

এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে কোনো সুযোগসন্ধানী, দুষ্কৃতকারী ও অশুভ চক্র যাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কোনোরূপ হামলা, পূজামণ্ডপ ভাঙচুর বা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে, সে জন্য চেকপোস্ট ও নজরদারি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। যেকোনো পরিস্থিতি কঠোরভাবে প্রতিহত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে র‌্যাব।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, কক্সবাজারে ১৫১টি প্রতিমা ও ১৬৪টি ঘট পূজা মিলিয়ে জেলায় ৩১৫টি মণ্ডপে পূজা হবে। পূজা শান্তিপূর্ণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে প্রতিটি পূজামণ্ডপে ২০ জন করে মোট ৩ হাজার ২০ জন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন।

আরও খবর