বিশেষ প্রতিবেদক :
টেকনাফে চাঁদা না দেওয়ায় সিএনজি ভর্তি যাত্রীকে নামিয়ে দিয়ে সিএনজি অটোরিকশা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে শাপলাপুর ফাঁড়ির আইসির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিএনজি অটোরিকশার চালক ও সমিতির নেতৃবৃন্দরা।
গত ১৫ অক্টোবর (রোববার) কোটবাজার ফোরস্টোক সিএনজি মালিক ও শ্রমিক কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতির সিএনজি চালকদের সাথে এ ঘটনা ঘটে।
কোটবাজার ফোরস্টোক সিএনজি মালিক ও শ্রমিক কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্য মো. ইব্রাহিম, রবিউল ইসলাম এবং জালাল জানান, প্রতিদিনের মতন কোটবাজার থেকে ভাড়া নিয়ে টেকনাফ যাচ্ছিলাম। কিন্তু পথিমধ্যে শাপলাপুর ফাঁড়ির কয়েকজন পুলিশ গাড়ি থামিয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে না চাওয়ায় অটোরিকশা থেকে সব যাত্রী নামিয়ে দিয়ে অন্যায়ভাবে গাড়ি ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে আমাদের গাড়িগুলো ফাঁড়ির ডিউটির জন্য প্রয়োজন বলে আটকিয়ে রাখেন এবং আটক করে নানা অজুহাতে জরিমানা আদায় করতে থাকে।
পরবর্তীতে টাকা দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে আনতে হয়।
সিএনজি চালকরা আরও বলেন, আমরা কোটবাজার থেকে শাপলাপুর বা টেকনাফে গেলে যাওয়া-আসা মিলে একদিনে দুই ট্রিপ ভাড়া পায়। কিন্তু এরমধ্যে যদি গাড়ি আটকিয়ে রাখে তাহলে আমাদের সব শেষ হয়ে যায়।
অথচ শাপলাপুরে আলাদা সমিতি রয়েছে এবং থানায় ডিউটি করার জন্য একাধিক সিএনজি রয়েছে। এরপরেও ফাঁড়ির আইসি আমাদের সাথে অন্যায় করে যাচ্ছেন। বলতে গেলে গরিবের পেঠে লাথি মারছেন।
সিএনজি অটোরিকশা চালকদের দাবি, সড়কে পদে পদে তাদের হয়রানি করা হয়। থানার ডিউটি, স্ট্যান্ড টোকেন নিতে হচ্ছে। অনেকসময় টুকেন না নিলে অকারণে মামলা দেওয়া হয়। ওই মামলায় কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা আদায় করা হয়। না দিলে সিএনজি আটকে রাখা হয়।
তারা বলেন, সবার ধারণা সিএনজি চালকরা যাত্রীদের উপর জুলুম করে। কিন্তু আমরা চালকরা কতটা অসহায় সে কথা কখনো কেউ জানেও না, শুনেও না। তাই আমরা দুই জায়গায় টাকা দিতে চাই না। এ হয়রানি বন্ধের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে শাপলাপুর সিএনজি সমিতির সভাপতি মো. আয়ুব আলী বলেন, নিয়মানুযায়ী আমরা নিয়মিত ফাঁড়ি ও থানার ডিউটি পালনের জন্য গাড়ি সরবরাহ করে থাকি। এরপরেও আমাদের এরিয়ায় এসে কোটবাজারের চালকদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে যা খুবই দু:খজনক। আমাদের অনেক গাড়ি ভাড়া নিয়ে উখিয়ায় যায় কিন্তু তাদের কখনো এ সমস্যায় পড়তে হয়নি। আমরা চেষ্টা করবো বিষয়টি নিরসন করার।
এ ব্যাপারে কোটবাজার ফোরস্টোক সিএনজি মালিক ও শ্রমিক কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আরফাত চৌধুরী জানান, শাপলাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ আমাদের সাথে যা করছেন তা খুবই দু:খজনক ব্যাপার। প্রত্যেক সমিতির কিছু নিয়মকানুন আছে যা আমরা মেনে চলি। বাইরে থেকে ভাড়া নিয়ে কোনো সিএনজি আমাদের এরিয়ায় আসলে তাদের কোনো হেনস্থার শিকার হতে হয়না। বরং এখন আমাদের পোহাতে হচ্ছে। আমরা এ হয়রানি থেকে বাঁচতে চাই। নাহয় আমাদের বিক্ষুব্ধ চালকরা আন্দোলনে মাঠে নামবো।
তবে অভিযুক্ত শাপলাপুর ফাড়ির ইনচার্জ মনসুর আলম অভিযোগ অস্বীকার বলেন, সিএনজি আটকিয়ে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে চাঁদা দাবীর বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এইরকম কোনো ঘটনা ফাঁড়িতে ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, মাঝে মাঝে আমাদের ডিউটি বেশী থাকলে সেক্ষেত্রে সিএনজি গাড়ি আনা হয় এবং গ্যাস বিল সহ গাড়ির সম্পূর্ণ পেমেন্ট দিয়ে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, চাঁদা আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। কেউ অবৈধ ভাবে চাঁদা আদায় করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-