কক্সবাজারে দুই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪

বিশেষ প্রতিবেদক •

কক্সবাজার শহরের কলাতলীর রাজন কটেজে ঢাকার দুই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় এ পর্যন্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন আসামি ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে দুই কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়।

ঘটনার পরদিন এক কিশোরী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় শামীম, হারবদল ও রশিদের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুজনকে আসামি করে মামলা করে। মামলার তদন্ত করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর শহরের মোহাজের পাড়ায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ সোলায়মান শামীমকে গ্রেপ্তার করে। ৮ সেপ্টেম্বর রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা রাবারবাগান এলাকা থেকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে মনিরুল ইসলাম ওরফে হারবদলকে। সম্প্রতি ট্যুরিস্ট পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মামলার অপর দুই আসামি রশিদ ও জালাল আহমদ।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এই চারজনের নেতৃত্বে কটেজ জোনে ইয়াবাসহ মাদকের বেচাকেনা চলে।

পুলিশ ও তদন্তসংশিষ্ট সূত্র জানায়, ৩ সেপ্টেম্বর দুই কিশোরী ঢাকা থেকে কক্সবাজার এসেছিল একটি অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করতে। উঠেছিল কলাতলী সড়কের হোটেল মেরিন প্লাজায়। ৫ সেপ্টেম্বর রাতে দুই কিশোরী হোটেলের সামনের রাস্তায় ঘুরতে বের হলে আসামিরা দুই কিশোরীকে জোর করে একটি ইজিবাইকে তুলে রাজন কটেজে নিয়ে যান। সেখানে কক্ষে আটকে রেখে দুই কিশোরীকে রাতভর ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের একপর্যায়ে দুই কিশোরী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

৬ সেপ্টেম্বর সকালে জ্ঞান ফিরলে দুই কিশোরীকে ঢাকার একটি বাসে তুলে দিয়ে কক্সবাজার ছাড়তে বলেন ধর্ষণকারীরা। তবে ঢাকায় ফেরার পথে রামু বাইপাস এলাকায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে এক কিশোরী। বাস থেকে নেমে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায় সে। অপরজন ঢাকায় ফিরে যায়। হাসপাতালে যাওয়া কিশোরী চিকিৎসককে ঘটনা খুলে বললে চিকিৎসক বিষয়টি পুলিশকে জানান।

পরে পুলিশ এসে কিশোরীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে।

এ নিয়ে ৭ সেপ্টেম্বর ‘কক্সবাজারে দুই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজী মিজানুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার তিন আসামি শামীম, হারবদল ও রশিদ কিশোরীদের ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। যেহেতু ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন, এ কারণে তিন আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হয়নি। অপর আসামি রাজন কটেজের কর্মচারী জালাল ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত নন বলে দাবি করেছেন। তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

আরও খবর