“সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব”
গিয়াস উদ্দিন ভুলু, কক্সবাজার জার্নাল •
ড্রাফট সংকট কারণে ধীরগতিতে চলছে টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানীর কার্যক্রম। সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, মিয়ানমার থেকে আমদানি করে নিয়ে আসা কোটি কোটি টাকার মুল্যের কাঠ,সুপারিসহ বিভিন্ন প্রকারের মালামাল পড়ে আছে। এতে ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে লোকসান।
ব্যবসায়ীরা দু:খ প্রকাশ করে বলেন, সরকারী কোন নির্দেশনা ছাড়া সোনালী ও এবি ব্যাংকে কর্মরত কিছু অসাধু কর্মকর্তা সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করার জন্য ব্যবসায়ীদেরকে ফরেন ডিমান্ড ড্রাফট (এফডিডি) সংকট দেখিয়ে উক্ত বন্দরে কৃত্রিম সমস্যা তৈরী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে বন্দরের আমদানি-রপ্তানীর সংকট নিরসন করার জন্য ২২ জুন (বৃহসম্পতিবার) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বন্দরে অবস্থিত নাফ গেস্ট হাউজে টেকনাফ স্থলবন্দর ব্যবস্থাপনা ও আমদানি সহযোগিতাকরণ একটি সভা অনুষ্টিত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক এমপি আব্দুর রহমান(বদি) । উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম ও বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, গত মে মাসের শেষের দিকে সোনালী ব্যাংক এবং এবি ব্যাংক কৃতপক্ষ সরকারের কোন নির্দেশনা ছাড়া ডলার সংকট দেখিয়ে আদা-রসুন ব্যতীত অন্য কোন মালামাল ডেলিভারি করতে পারবেনা বলে উন্মুক্ত ড্রাফট তৈরী করা বন্ধ করে দেয়। যে ড্রাফট গুলো দিচ্ছে সে গুলোর মধ্যেও শুধু আদা-রসুনের জন্য প্রজোয্য বলে সিল মেরে দিচ্ছে। ফলে মিয়ানমার থেকে আমদানি করে নিয়ে আসা কোটি কোটি টাকা মুল্যের কাঠ,সুপারি,আচার, নারিকেল,শুঁটকিসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল পড়ে আছে বন্দরে। সময়মত মাল গুলো ডেলিভারী না হওয়ায় সুপারিসহ অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে লোকসান। সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম টেকনাফ স্থলবন্দরে রোহিঙ্গা শ্রমিক ব্যবহার বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানান।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো:মাহফুজুল ইসলাম, স্থলবন্দর জিএম এডমিন এন্ড সিকিউরিটি (অব:) মেজর সৈয়দ আনছার মো: কাউছার,কক্সবাজারে সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ডিজিএম মো: আসাদ,ভূমি কমিশনার এরফানুল হক চৌধুরী, টেকনাফ থানার ওসি আব্দুল হালিম,এবি ব্যংক টেকনাফ শাখার ম্যানেজার মনজুরুল আলম চৌধুরী, স্থলবন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের জিএম জসীম উদ্দিন,সিএনএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুরসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভাশেষে স্থলবন্দর ঘুরে দেখেন জেলা প্রশাসক শাহীন মুহাম্মদ ইমরান।
এসময় জেলা প্রশাসক গণমাধ্যম কর্মিরা ড্রাফট সংকটসহ বন্দরের নানামুখি সমস্যা সমাধান করার লক্ষে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘ড্রাফট সংকট, স্থলবন্দরে মালামাল জটসহ সব ধরনের সমস্যা নিরসন করার জন্য আমরা বৈঠকে বসেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের পথ বের করা হবে। পাশাপাশি কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে আমরা ব্যবসায়ীদেরকে বেশী করে আদা,রসুন,পিঁয়াজ আমদানি করার জন্য উৎসাহিত করছি।
সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি বলেন, ‘সরকারি নিদের্শনা না থাকার পরও জামায়াত- বিএনপি’র এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে সরকারের ভাবমুর্তী নষ্ট করার জন্য সোনালী ব্যাংক চট্রগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তা জামাত সমর্থিত মুছা নামে এক অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তা ডলারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে করে যাচ্ছে।
বিশেষ করে ব্যাংক থেকে ড্রাফট না পাওয়ায় স্থলবন্দরে কাঠ, সুপারি,শুঁটকিসহ বিভিন্ন ধরনের কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকার পণ্য পড়ে আছে বন্দরে। ইতিমধ্যে সুপারিসহ অধিকাংশ মালমাল পচনশীল হওয়ায় সেই মাল গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
পাশাপাশি এই ড্রাফট সংকটের কারনে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-